মির্জা ফখরুল, ফাইল ছবি
রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদের চলতি অধিবেশনে ‘নির্বাচনকালীন নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের’ বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে আওয়ামী লীগকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, সংসদ অধিবেশন শুরু হয়েছে। তারা (আ.লীগ) এই সংসদকে ব্যবহার করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের বিধান আনতে পারে এবং এই সংসদে পাস করে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। সুতরাং, তারা এই সংবিধানের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে যা আমরা করেছি (১৯৯৬ সালে)।
আজ রোববার (২২ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে বিশৃঙ্খলা এড়াতে সরকারকে এ পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানাই এই সংসদ অধিবেশনে সংবিধানে এই ব্যবস্থা (নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার) চালু করার জন্য। যদি তাদের মধ্যে দেশপ্রেম, দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা এবং গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম সম্মান থাকে তাহলে এই সংসদের পথ প্রশস্ত করার জন্য এবং একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার।
অন্যথায় দেশে ইতোমধ্যে যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য সম্পূর্ণভাবে সরকার দায়ী থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মির্জা ফখরুল।
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার চায় না বিরোধী দল নির্বাচনে আসুক এবং দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য গণতন্ত্রের আড়ালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে ক্ষমতাসীন দল দেশে আবারও একতরফা নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তা বাস্তবায়নে বিরোধী দল বিএনপিই সবচেয়ে বড় বাধা।
ভোটের সময় বিরোধী দল যাতে প্রার্থী পূরণ করতে না পারে সেজন্য সরকার বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। তারা (সরকার) নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মানে তারা ব্যবস্থা করছে যাতে বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের জন্য সরকারের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীতে বিএনপির ২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১২ হাজার ৩৭০ বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৪৭টি ‘ভুয়া’ মামলা করা হয়েছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, আপনারা কল্পনা করতে পারেন আমরা কোন রাষ্ট্রে এবং কোন সমাজে বাস করি? এসব মামলায় ৫৬০ জনেরও বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঢাকায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বিচার বিভাগে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে সব মামলায় সাক্ষী আনতে হবে এবং সব মামলায় আসামির সাজা নিশ্চিত করতে হবে। ‘তার (প্রধানমন্ত্রীর) বক্তব্য পুরোপুরি প্রমাণ করেছে যে আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করছে এবং আদেশ জারি করছে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।