ছবি: সংগৃহীত
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ার কি হবে তা এখনো কেউ জানে না, যদি নির্বাচন সঠিকভাবে হয়, তবেই আমরা নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিব। যদি মনে করি, সঠিকভাবে নির্বাচন হচ্ছে না, তখন আমরা ঘোষণা দিয়েই নির্বাচন বর্জন করবো।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা ঘোষণা না দিয়ে চলে যাবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে আছি। দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব। ঘোষণাটা তরফ থেকেই আসতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো একক সিদ্ধান্ত হবে না, প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়া হবে। গণমাধ্যমের সামনে ঘোষণা দেয়া হবে, এ কারণে আমরা নির্বাচন করছি বা করছি না।
শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যাললে নিজের লেখা ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সোনার পাথরবাটি’ দ্বিতীয় খণ্ড ও ‘Miseries Of Misconceived Democracy’Volume-2′ এ বই দুটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির সভাপতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকাশনা উৎসবে জিএম কাদের বলেন, দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী তো আমাদের লোক, আমরাই বানিয়েছি। তারা কোনো ভুল করলে অবশ্যই আমরা বলবো। কথা বললেই শাস্তি পেতে হবে? সেজন্য আইন করা হবে? আমি ভুল বলতে পারি, কিন্তু আমার বলার অধিকার তো আছে। আমরা যেন কথা বলতে না পারি সেজন্য আইন করা হচ্ছে। সরকার হচ্ছে কেয়ারটেকারের মত, ভুল করলে পরিবর্তন করতে চাইবো না? বাংলাদেশের মানুষের এই অধিকার এখন আর নেই।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বিবিসি’র দেয়া তথ্যে জানা গেছে চার হাজার কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্প, বছরে আয় করছে এক’শ কোটি টাকা। ১৫ বছর হচ্ছে এটার লাইফ। এটা কি বাস্তবসম্মত হলো? তাহলে আবার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ প্রকল্পের জন্য চুক্তি কেন? আসলে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে দুর্নীতির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। যেখানে বেশি দুর্নীতি করা যায় সেই প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন হয়। আবার, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়েও কথা আছে। ভারতে ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে ৫ বিলিয়ন ডলারে। অথচ, একই কোম্পানির ২ হাজার ৪’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপনে ইতোমধ্যেই খরচ হয়েছে নাকি ১৬ বিলিয়ন ডলার। এটি একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্প। ইউরোপসহ অনেক দেশই এমন প্রকল্প বন্ধ করে দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, যেসব দেশে একনায়কতন্ত্র থাকে সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, স্থিতিশীল সরকার থাকলে অনেক উন্নয়ন হয়। এক সরকার বেশি দিন থাকলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা ঢেকে রাখতে পারে না। সরকার বা সরকার প্রধান পরিবর্তন হলেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে যদি অস্থিরতা সৃষ্টি না হয় তাকেই স্থিতিশীলতা বলা যায়। স্বৈরশাসনে কখনোই স্থিতিশীলতা সম্ভব নয়। একটি সরকার বেশি দিন থাকাও অস্বাভাবিক ব্যাপার। একটি সরকার বেশি দিন থাকলে অস্থিতিশীলতার বীজ বড় হতেই থাকে। স্বাভাবিক নিয়মে সরকার পরিবর্তন হবে কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না, এটাই হচ্ছে স্থিতিশীলতা।
আপন দেশ/পলাশ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।