ফাইল ছবি
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদের মৃত্যুর আগ থেকেই দলে বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সেই দ্বন্দ্ব এবার গড়ালো নির্বাচন কমিশন বরাবর। কার সইয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হবে, লাঙ্গল প্রতীকের মালিক কে হবেন ইত্যাদি জানিয়ে শনিবার (১৮ নভেম্বর) জিএম কাদের ও রওশন এরশাদ ইসিতে পৃথক পৃথকভাবে চিঠি দিয়েছেন।
জিএম কাদেরের পক্ষে দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু স্বাক্ষরিত চিঠি নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে দেয়া হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, আপনাকে জানানো যাচ্ছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রদানের ক্ষেত্রে আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) অনুযায়ী জাতীয় পার্টির ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে দলের প্রার্থী মনোনয়ন ও প্রতীক বরাদ্দ করবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। চিঠিতে জিএম কাদের তার ৪টি নমুনা স্বাক্ষর দেন।
এদিকে, এক ভিডিও বার্তায় জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এখন পর্যন্ত সংলাপের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। বিএনপিও সংলাপের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেনি, সরকারি দলও সংলাপ প্রত্যাখান করেছে। এরকম অবস্থায় জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে কি না এ প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে আমরা দলের সিনিয়র নেতারা, প্রয়োজনে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মিটিং ডেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া কিংবা না নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে উল্লেখ করে ইসিকে আরেকটি চিঠি দিয়েছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদরীয় নেতা রওশন এরশাদ। চিঠিতে রওশন এরশাদ বলেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি আগের তিনটি সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় এবারও চতুর্থবারের মতো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক দল হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা হবে শুধু নির্বাচনী জোট।
চিঠিতে তিনি বলেন, নির্বাচনে জাপার নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবেন। এই নির্বাচনে জাপার মনোনীত প্রার্থীরা লাঙ্গল কিংবা প্রার্থীর ইচ্ছানুসারে মহাজোটে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৫ নভেম্বর) জাতিরর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।