Apan Desh | আপন দেশ

৩৪ বছর পর যে তথ্য ফাঁস করলেন শাহজাহান ওমর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৪৩, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ১৪:৪৬, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

৩৪ বছর পর যে তথ্য ফাঁস করলেন শাহজাহান ওমর

ভিডিও থেকে নেয়া ছবি। শাহজাহান ওমর ও আমির হোসেন আমু।

দল বদল করে আওয়ামী লীগে নবাগত শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল রাজাপুর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। অভিযোগ করেছিলেন তিনি বাইরে আওয়ামী লীগের হলেও ভেতরে বিএনপিরই আছেন। নির্বাচন ইস্যুতে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করছেন না। 

ঝালকাঠি-১ আসনটি –কাঠালিয়া ও রাজাপুর এই উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই আসনে নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শাহজাহান ওমর।  

দলীয় নেতাদের অবস্থানে চরম হতাশায় পড়েছিলেন প্রার্থী শাহজাহান ওমর। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) রাতেই সঙ্গীয়দের নিয়ে যান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার আমির হোসেন আমুর বাস ভবনে। সেখানে বিরাগীরাও ছিলেন। ঘরোয়া সভায় রাজনীতিতে নিজের আগে-পরের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন শাহজাহান ওমর।

নিজেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কনিষ্ঠ সদস্য আখ্যা দিয়েছেন। জানিয়েছেন তার রাজনীতির আদ্যোপান্ত। এ সময় তিনি একহাত নিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি আতাউল গণি ওসমানী ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের। ফাঁস করে দিয়েছেন ৩৪ বছর কিভাবে তিনি বিএনপিতে কেনো ছিলেন। নেপথ্যে কারা ছিলেন।

বেসরকারি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশন তার কিছুটা প্রচার করেছে। যা ইতোমধ্যে ভাইরাল।  

পাঠকদের জানতে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-

জিয়ার সময় এমপি হইল্যাম। এরশাদের আমলে আমি ইলেকশন করিনাই। এরশাদকে আমি ঘৃণা করি। ওছিল একমাত্র অফিসার, পাকিস্তার আর্মিতে যারা এই দেশের কথা বলতো আসার জন্য চেষ্টা করতো তাদের বিচারেরর জন্য পাকিস্তানে কোর্ট মার্শাল করকেছিল। সে কোর্টের চেয়ারম্যান ছিল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।

তারপর ৭২ সনে বঙ্গবন্ধু আমলে একটা আইন হয়েছিল। পাকিস্তান আমলের কোনো আর্মি অফিসার যুদি ছুটিতে আসে আর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করে তাহলে তার চাকরি চলে যাবে।

একমাত্র এরশাদ ৭১ সালে এদেশে এসে আবার পাকিস্তানে চলে গেছে এরপরও চাকরিতে বহাল রেখেছে। এটার কারণ তিনি জেনরারেল ওসমানী সাহেব। কারণ সে তা খাস লোক ছিল। এজন্য এরশাদকে আমি মনেপ্রাণে ঘৃণা করি, জাতীয় পার্টিকে ঘৃণা করি, যারা জাতীয় পার্টি করে তাদেরকেও আমি মনেপ্রাণে ঘৃণা করি। যাই হোক এরশাদের সময় রাজনীতি করিনি।

আরও পড়ুন<<>> নবাগত শাহজাহান থেকে সরে গেল রাজাপুর আ.লীগ

১৯৯০ সালে আমাদের নেতা আমু ভাই আমাকে নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে গেছে। মনে আছে আমু ভাই?(প্রশ্ন করলে আমু মাথা নেড়ে স্বীকৃতি দেন)। বলেছেন- তুমি আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেসন করো (ভোট করো)। আমি সেখানে গিয়েছিলাম। নেত্রী মুচকি হেসে বলল-‘এখানে প্রার্থী আছে, আমার বাবার বাল্য বন্ধু। বিভিন্ন চিঠিপত্রও নিয়ে এসেছেন। আব্দুল কুদ্দুস।তাকে তো ওয়াদা করেছি’।

আমি আমু ভাইকে বললাম, ভাই কি করমু? ভাই বলল- যেখানে আছ সেখানেই থাকো। আমু ভাই কিন্তু বিএনপিতে আমারে পাঠাইল দোষ কিন্তু আমার না। এসময় উপস্থিত সবাই হু হু করে হেসে দেয়। তবে আমু হেসে, হাত নেড়ে না সূচকভাব প্রকাশ করেন।

২৯ তারিখ পর্ন্ত ছিলাম। ২৯ তারিখে জামিন হলো। ৩০ তারিখে আমার বাসায় একটা ফোন আসলো। এক উচ্চ কর্মকর্তা। কি ব্যাপার? প্রাইমমিনিস্টার আপনার সাথে দেখা করতে চায়। আসেন।

কয়টায়?

১১টায়।

তখন সাড়ে ১০টা। কি করব? তারাতাড়ি প্যাণ্টা-শার্ট পড়লাম। রওয়ানা করলাম। একমাত্র মিসেসকে বললাম- প্রাইমমিনিস্টার আমাকে ডাকছেন।

-প্রাইম মিনিস্টার ডাকলে তো কপাল খুলছে। তা এখনো বসে আছো। যাও। কারণ প্রধানমন্ত্রী ডাকাতো সৌভাগ্যর লক্ষণ।

আমি গেলার। তিনি আমাকে বলনে, বসেন কমাণ্ডার। আপনি আমার দল করেন।

আমি করতে পারি এক শর্তে।

কি শর্ত?

১৫ই আগষ্ট আপন তিন ভাই শহীদ হয়েছেন। চতুর্থ ভাই হিসাবে যদি আমাকে গ্রহণ করেন। আই উইল সার্ভ ইউ।

এবার দস্তখত করেন।

দস্তখত করলাম।আমি জয়েন্ট করলাম। আমারে টিকেট দিল, আইম চইল্যা আইল্যাম। পরে আইস্যা আমু ভাই, হাসানাত ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলাম। আমু ভাই? এটা কেমনে অইল? কয়- আমি জানি সকালেই আমারে জিজ্ঞাসা করেছে। তিনি সব জানে কিন্তু আমাকে বলেনাই।

যাই হোক আমি আপনাদের সর্বকণিষ্ট সদস্য। আমার আগের যা দলবল ছিল আমি তাদের সব নিয়ে আওয়ামী লীগে জয়েন্ট করাইছি। রাজাপুরে যে দুচারটা নাবালক আছে তারাও আইস্যা যাবে। না আসলে কিভাবে আনতে হয় তা আপনারা জানেন। তরিকাটা আমার। সবাই ওটা জানেন। সো কাঠালিয়া, রাজাপুরে ইন ফিউচার, সেইভ এন এক্টসেপ্ট আওয়ামী লীগ, কোনো পার্টি থাকবে না। এটা কিন্তু গায়ের জোর লাগবে না। আমাদের যোগ্যতা, আদর্শ, কোয়ালিটিতে, প্রতিভায় তাদেরকে আমরা আওয়ামীগে কনভার্ট করব।

আপনাদের কাছে অনুরোধ- যেহেতু তারাও একটা বড় দল। অস্বীকার তো করার কিছু নাই। তাদের মধ্যে জ্ঞানী-গুণী লোক কিছুটা আছে। আপনারা সমন্বয় করে কাজ করবেন। যাতে আপনাদের দল আরও বৃদ্ধি পায়, সমৃদ্ধি লাভ করে। গুরুর হাত, নেত্রীর হাত যাতে শক্তিশালী করতে পারি। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। যতদিন গুরু অন্যকিছু না বলবেন আপনারা আমার কাছে পাবেন।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়