ফাইল ছবি
এক দফার আন্দোলনে সরকারকে কাবু করতে পারেনি বিএনপি। উল্টো নেতাদের ঢুকতে হয়েছে কারাগারে। লাখো কর্মীরা ছন্নছাড়া। এতে করে মাঠের আন্দোলন উঠে গেছে ফেসবুকে। শেষ অস্ত্র হরতাল দিলেও তাতে ফল আসছে না। কারণ খবরের কাগজে হরতাল আছে মাঠে পিকেটার নেই। নেতাদের পরিবারের সদস্যদের সময় কাটছে আসামি দেখার লাইনে।
এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে নতুন ছকে এগুচ্ছে দলটি। আপাতত নরম কর্মসূচি লিফলেট বিলি। এসব করে নেতাকর্মীদের রাজপথমুখী করার চেষ্টা হচ্ছে। চারদিন চলবে নিরামিষ কর্মসূচি। এর মাধ্যমে কর্মীদের মাঠে এনে ফের অপ্রতিরুদ্ধ কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে।
নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, আগামীর আন্দোলনে একমঞ্চে দেখা মিলবে ডান-বাম, চরম, কট্টর ও মধ্যপন্থিদের। দীর্ঘদিন সঙ্গদূরে থাকা জামায়াতকে ফের দেখা যাবে এই সঙ্গে। ‘ডু অর ডাই’, বাঁচলে গাজী- মরলে শহীদ’ যে সূত্রেই হোক ফসল ঘরে আনতে চায় বিরোধীরা। অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে সফল হবে আশা বিএনপি ভারপ্রাপ্ত প্রধানেরও।
বেতার বার্তায় তিনি জানাচ্ছেন, বিজয়ী হলে ১৭ বছরের লালিত স্বপ্ন পুরণ হবে। আর পরাজয় ঘটলে খান খান হবে দল। নেতার মরদেহ গ্রহণ করতে হবে স্বজনকে। স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি যাবে বেদখলে। তাই পথের ভিখারির চেয়ে রাজপথের মৃত্যুই শ্রেয়। বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতার এমন বাক্য কর্মীদের গা গরম হচ্ছে। আত্মগোপন থেকে ফিরছেন নিজ ঘরে। নিজেরকে সম্পৃক্ত করবেন নতুন কর্মসূচিতে।
গণসংযোগে প্রথমদিন:
বিএনপির এই কৌশলি কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করতে দেখা গেছে। ১১তম দফায় অবরোধের পর দলের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন সফল করতে মাঠে ফিরতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে অসহযোগ আন্দোলনের জনমত গঠন ও সরকারকে অসহযোগিতা মাধ্যমে চাপে রাখতে তৎপর হচ্ছেন তারা।
আরও পড়ুন<<>> ৩৪ বছর পর যে তথ্য ফাঁস করলেন শাহজাহান ওমর
বিএনপি নেতারা বলছেন, এর মধ্যদিয়ে সরকার পতন নিশ্চিত হবে। জনগণ তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পাবে, ভোট দিবে। ভোট হবে, তবে তত্ত্বাবধায়ক নির্দলীয় সরকারের অধীনে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল এদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসতে পারে; যা অর্জনে বিএনপির নেতাকর্মীরা আজ রাজপথে নেমেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এই ২০ দিনকে চূড়ান্ত ধাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হলে ঢাকাসহ সারাদেশে আরও ব্যাপকভাবে আন্দোলন জোরদার করতে হবে। এর মধ্যে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়া হয়েছে। চূড়ান্ত আন্দোলন হিসেবে আমরা মাঠে আছি। এই প্রহসন মার্কা নির্বাচনকে প্রতিহত করা হবে। আমাদের কর্মসূচি চলমান। ২৫ ডিসেম্বরের পর আন্দোলন আরও জোরালো এবং কঠোর হবে।
রাজধানীর উত্তরা গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের সময় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা ছাড়া দেশের প্রায় ৬৩ জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। দেশে-বিদেশে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে না। এই একতরফা ডামি নির্বাচন দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রাজধানীর দৈনিক বাংলার মোড়, কালভার্ট রোড় ও ফকিরাপুল এলাকায় লিফলেট বিতরণকালে ১২ দলীয় জোটের নেতারা বলেন, ডামি নির্বাচনের আয়োজক আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, পরিচালক হিসেবে থাকবে শেখ হাসিনা। ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃংখলা বাহিনী থাকবে ভোটারের ভূমিকায়। নির্বাচন হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। তাই নির্বাচন নয়, শেখ হাসিনার পদত্যাগই একমাত্র সমাধান।
মাঠে আছেন মিত্ররাও:
এছাড়াও গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, সমমনা দলগুলো অসহযোগ আন্দোলন সফলে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে। এ সময় দলের নেতারা আগামী ২৪ ডিসেম্বর সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
ভিন্ন কর্সূচি নিয়ে মাঠে বাম দলগুলো। ইস্যু যা-ই হোক তার সবই সরকার বিরোধী। বিএনপি এই কর্মসূচি পালনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে।
আপন দেশ/এসএমএ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।