ফাইল ছবি
বাংলাদেশ জাতীয়দাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালে ছিলেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। গণমাধ্যমে তার সার নাম বেনাহুদা। বিতর্কিত কাণ্ডে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। জীবদ্দশায় গঠন করেছেন তৃণমূল বিএনপি। হালে তৃণমূল বিএনপির খ্যাতি কিংস পার্টি হিসাবে।
দলটির সুপ্ত অবস্থাতেই মারা যান খ্যাতনামা আইনজীবী নাজমুল হুদা। যিনি বিএনপি সরকার আমলে ঘুরেফিরে কয়েক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। দুর্নীতি চাঁদরে প্যাচিয়ে ছিলেন দম্পতি। সাজাও হয়েছিল নাজমুল হুদা ও স্ত্রী সিগমা হুদার।
হুদার মৃত্যুর পর দলটি হিমাগারে চলে যায়। তবে গা ঝাড়া দিয়ে উঠে এবারেরর নির্বাচনের আগে। তাতে হাল ধরেন বিএনপিরই একজোড়া বহিষ্কৃত নেতা। একজন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সহযোদ্ধা শমসের মবিন চৌধুরী। আরেকজন শ্রমিক দল নেতা তৈমুর আলম খন্দকার। তড়িগড়ি কাউন্সিলে কমিটি গঠন করেন। তারা চেয়ারম্যান ও মহাসচিব। দলের অলঙ্কার নির্বাহী চেয়ারপারসন হিসাবে রেখেছেন বেনাহুদার উত্তসুরী অন্তরা সেলিমা হুদাকে।
আরও পড়ুন<<>>‘জাতীয় বেঈমান শমসের-তৈমুর, ৬০ প্রার্থীর নির্বাচনী ফাণ্ড নিয়ে পালিয়েছে’
এবারের নির্বাচনে দুই চমকের একটি তৃণমূল বিএনপি অন্যটি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। ব্যাপক আলোচনায় ছিল তৃণমূল বিএনপি। তাদের প্রতীক সোনালী আশ। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভোটের মাঠে নামেন।
সংসদীয় ৩শ’ আসনের মধ্যে ২৭২টিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বাছাইয়ের ধোপে টেকে মাত্র ২৩০টি। কূল-প্রতিকূল বিবেচনায় সরে দাড়ান বেশ কয়েক প্রার্থী। শেষঅব্দি মাঠে লড়াই করেন ১৩৫জন। নির্বাচনের হাওয়ায় ভোটের ব্যয় মেটাতে কিছু বরাদ্দও মিলে। কিন্তু তাতেও অভিযোগ উঠে। তৃণমূল বিএনপির ৬০ প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবে। তাতে অভিযোগ করেন শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকার বেঈমানী করেছেন। ভোট বানচালের চক্রান্ত করছেন। তারা প্রার্থীদের মাঠে ফেলে গা ঢাকা দিয়েছেন। নির্বাচন ব্যয়ের টাকার কথাও তোলেন ক্ষব্ধরা। তাদের বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সংবাদ সম্মেলনে আসা প্রার্থীরা।
সব অভিযোগ ঠেলে ভোটের মাঠে ছিলেন শীর্ষ দুই নেতা। কিন্তু ফলাফল শূণ্য। দু’জনেরই ভরাডুবি হয়েছে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীও হতে পারেননি তাদের কেউ।
সিলেট-৬ আসনে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রার্থী ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। ১৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন নাহিদ।
নাহিদ পেয়েছেন ৫৮ হাজার ১২৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৩৮৭ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১০ হাজার ৮৫৮ ভোট।
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনেও তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের ভরাডুবি হচ্ছে।
এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাজাহান ভূইয়া। আর তৈমুর আলম খন্দকার হয়েছেন তৃতীয়। তার ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৭৯১।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।