ফাইল ছবি
রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টি ক্রমশ ভাঙনের মুখোমুখি হচ্ছে। এ ভাঙন শুরু অনেকদিন আগে থেকেই। দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জীবদ্দশাতেই তার স্ত্রী রওশন এরশাদ ও ছোটভাই জি এম কাদেরের মাঝে তীব্র বিরোধ দেখা দেয়। এরশাদের মৃত্যুর পর বিরোধ তীব্র হয়। এ বিরোধের সর্বশেষ রূপের দেখা মিলতে পারে আজ শনিবার (৯ মার্চ)।
রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির একাংশের সম্মেলন আজ। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে। এর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে আরেক দফা ভাঙবে জাতীয় পার্টি এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে থেকেই রওশন এরশাদ আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু রওশনের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেউ যাচ্ছেন না। বিএনপির কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
গত ২৮ জানুয়ারি জি এম কাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেকে জাপার চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন রওশন। জাপার কোন কোন জেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা রওশনের নেতৃত্বে আসবেন, তা নিশ্চিত নয়।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হবে। রওশন এরশাদ সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।
২০১৯ সালে এরশাদের মৃত্যুর পর জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয়। বিরোধী দলের নেতার পদ পেয়ে জি এম কাদেরকে জাপার চেয়ারম্যান হিসেবে মেনে নেন রওশন। তিন বছর পর সমঝোতা ভেঙে যায়। জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে ২০২২ সালের আগস্টে কাউন্সিলের ডাক দেন তিনি। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রওশনকে বিরোধী দলের নেতার পদ থেকে সরাতে চেষ্টা করেন জি এম কাদের। তবে সরকারের সমর্থনে টিকে যান রওশন।
আরও পড়ুন <> ছুটির দিনে সড়কে ঝরল ২২ প্রাণ
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সরকারের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হয় জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশনের। তবে কয়েক মাস পর তা ভেঙে যায়।
দ্বাদশ নির্বাচনে মাত্র ১১ আসন পেয়েছে জাপা। ভোটের পর দলটিতে ফের অস্থিরতা শুরু হয়। লাঙলের পরাজিত প্রার্থীরা সভা করে অভিযোগ তোলেন, জি এম কাদের ভোটে গিয়ে টাকা পেলেও অন্যদের দেননি। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আসন ছাড় না পাওয়া, ছাড় পেয়েও হেরে যাওয়া নেতারা জি এম কাদেরের সমালোচনায় মুখর হন।
কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভরায় ও ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহহিয়া চৌধুরীকে অব্যাহতি দেন জি এম কাদের। তারা সবাই রওশনের পক্ষে যোগ দিয়েছেন। দল থেকে বাদ পড়াদের নিজের পক্ষে টেনেছেন তিনি।
রওশন ঘোষিত মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ বলেছেন, সম্মেলনে নির্বাচিত নেতৃত্ব লাঙল পেতে চেষ্টা করবে। রওশনের নেতৃত্বের জাপাই আসল।
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ১০টা সম্মেলন করুক অসুবিধা কী। জাতীয় পার্টি নামে চারটি দল আছে। আরেকটি হতে যাচ্ছে। তাতে কিছু যায় আসে না। লাঙ্গল যার, আসল জাতীয় পার্টি তার। লাঙ্গল জি এম কাদেরের।
আপন দেশ/এমআর
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।