ছবি: আপন দেশ
সরকারের অবস্থাকে ‘বাইরে ফিটফাট, ভেতরে সদরঘাট’ মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পায়ের নিচে মাটি নেই। জনগণ বা মাটির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রতিবেশী দেশের দালালি করে সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।
শুক্রবার (১০ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারসহ সকল কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ করে দলটি।
বিকেল তিনটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জুমার নামাজের পর থেকে ঢাকা মহানগর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা নেতারা ব্যানার নিয়ে নয়াপল্টনে আসতে শুরু করেন। সমাবেশ শেষে মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি নয়াপল্টন থেকে পল্টন মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশি বাধার কারণে বিজয়নগর মোড় ঘুরে ফকিরাপুল হয়ে পুনরায় নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বাংলাদেশটা আজ কাঁটাতারে ঝুলছে। যেমন ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাও আজ কাঁটাতারে ঝুলছে। দেশটাকে নিয়ে, স্বাধীনতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, এ থেকে রক্ষা পেতে হলে ৭১ সালের মতো জেগে উঠতে হবে।
সরকারের সমালোচনাা করে তিনি বলেন, জনগণ বা মাটির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কোনো সম্পর্ক নেই। উপজেলা নির্বাচনে গোপালগঞ্জেও শেখ সেলিমের প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও পরে শেখ রেহানার প্রার্থীকে জয়ী করা হয়। ভোটকেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও কেন্দ্রের ভিতরে ঠিকই চলেছে ভোট ডাকাতি। ৩ শতাংশ ভোটকে ৪০ শতাংশ দেখানোর জন্যই সরকার সমর্থকরাই সিল মেরেছে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের হতাশ হওয়ার কারণ নাই। তাদের কর্মীরা ক্লান্ত কিন্তু হতাশ নয়। তারা যেরকম অত্যাচার-নির্যাতনকে সহ্য করে দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় এখনো যেভাবে বুক টান করে দাঁড়িয়ে আছে, সেই স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার ক্ষমতা প্রতিবেশিদের নাই, কারো নাই।
বিএনপি চলছে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যামে- ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির রিমোট তো খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতে। আপনার রিমোট কন্ট্রোলটা কোথায়? আপনাদের সরকারের রিমোট কন্ট্রোল কার হাতে? মোদির (ভারতের প্রধানমন্ত্রী) হাতে, না অজিত দোভাল (ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা) হাতে না, অমিত শাহের (ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) হাতে। তাদের রিমোট কন্ট্রোলে আপনাদের চলতে হয়। আপনি ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন- ভারত না থাকলে আপনারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন করতে পারতেন না। ভারতই আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। বাংলাদেশের এখনকার গণতন্ত্রের অবস্থা- বাই দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল, অব দ্যা পিপল এর পরিবর্তে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র- বাই দ্যা ইন্ডিয়া, ফর দ্যা ইন্ডিয়া, অব দ্যা ইন্ডিয়া চলছে। এর বেশি কিছু মনে হয় না।
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এম মোনায়েম মুন্না, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শামীমুর রহমান শামীমসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা ছিলেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।