ছবি : আপন দেশ
আগামীতে আরও বড় সুসংবাদ আসছে’ বলে মন্তব্য করেছেন মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, যেদিন জনগন রাস্তায় নামবে সেদিন সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে যাবে...ইনশাল্লাহ।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে এক অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের অর্থনীতির অবস্থা, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি তুলে ধরে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এ সরকার সব খানে দূর্বল। জনগন বলেছিলো, পাঁচ বছর টিকে থাকার… আমি বলি, পাঁচ বছর টিকার কোনো কারণ নাই। যদি আমরা সবাই আপনারা এক সঙ্গে রাস্তায় নামি… সেদিন রাস্তায় নামবেন, ঠিক মতো নামবেন সেইদিন ঘন্টা বেজে যাবে এবার। মানুষ তৈরি, ওই রাস্তার দিকে তাঁকিয়ে আছে। সর্বত্র, সমস্ত, সব পেশার মানুষ জেগে গেছে…জাগছে। ইনশাল্লাহ আগামীতে আরও বড় সুসংবাদ পাবেন। আন্দোলনের পথে আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মোটর চালক দলের উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচি হয়। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কাহিনী বানাচ্ছেন অভিযোগ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এ সরকার আরামে আছে, ভালো আছে? পরশুদিন ১৪ দলের সভাপতি উনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, আওয়ামী লীগ কষ্টে আছে, এ সরকার সমস্যার মধ্যে আছে। কেনো? বাহানা করেছেন… আমি দেশের কোনো অংশ কারো কাছে বন্ধক দিয়ে বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আগে যেরকম বলেছিলে, ওরা আমার কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চেয়েছিলো আমি দেই নাই। কারা? বলেছিলো, মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র নাকী সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছেন, সেন্ট মার্টিন কেনো আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও চাইনি। তারপর আর সেই কথা বলেনি। এবার কাহিনী তৈরি করেছেন ওরা এক সাদা চামড়ার লোক নাকি তাকে (শেখ হাসিনা) প্রস্তাব দিয়েছেন ওই রাইখাইনদের একটা অংশ নিয়ে আর পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন একটা খৃষ্টান রাজ্য গড়ে তুলতে হবে…। সেই প্রস্তাব তাকে (শেখ হাসিনা) দেয়া হয়েছে। আমি প্রথম বলতে চাই, আমার দেশের মাটি নিয়ে কেউ আরেকটা রাষ্ট্র করতে চায় …. এরকম কথা যেই বলুক আমরা তার বিরুদ্ধে আছি। কিন্তু কে বলেছে? শেখ হাসিনা … তিনবার নাকি চারবারের প্রধানমন্ত্রী। এ যে এক এমপি ছিল তথাকথিত তিন বারের এমপি… কলকাতায় গিয়ে পিনাকী ভট্টাচাচারযের কথায় জয়বাংলা হয়ে গেছে। এরকম তথাকথিত চারবারের প্রধানমন্ত্রী কত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করেছেন।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তার কাছে প্রস্তাবটা কে দিয়েছে? এক সাদা চামড়া বললে তো হবে না। চামড়া সাদা তো বৃটিশদেরও, ইউরোপীয়ানদের, কানাডীয়ানদের, জাপানিজদের আর যদি কারো ধাবলকুষ্ঠ হয় তাহলে পুরোটাই সাদা। কোন সাদা চামড়ার লোক্ আপনাকে এ প্রস্তাব দিয়েছে সেটা বলতে হবে। উনি সেটা বলতে পারবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, কোনেো মানুষ, কোনো সরকার, কোনো দেশ আপনার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চায়। কাহিনী বানিয়ে মনে করবেন কান্না-কাটি করবো আর আপনার দুঃখে বোধহয় সবার মন গলে যাবে। আরে আপনাকে বলবে, না আপনিই থাকেন আমরা সেই বান্দা নই।
আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে হুশিয়ারি বার্তা দিয়ে মান্না বলেন, সরকার সমস্যায় আছে। তার তৈরি সেনা বাহিনী প্রধানের নামে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কি কারণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে? সরাসরি বলেছে দূর্নীতির কারণে। দূর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা পাইয়ে দিয়েছে নিজের ভাইদের, দু্নীতির মাধ্যমে নিজের ভাই খুনের আসামী তাকে জেল থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। আমার মনে প্রশ্ন হয়, ওই যে, খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্ত করে দিলো ওটা শুধু জেনারেল আজিজ বলেছেন তাই হয়েছে… প্রেসিডেন্টের সই করতে হয়নি, যিনি তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাকে তার প্রধানমন্ত্রী রিকোয়েস্ট করে বলেন নাই… তাকে ছেড়ে দেন। অতএব স্যাংশন যদি ঠিক মতো হয়, তাহলে শুধু সেনাপ্রধান খাবেন না, তৎকালীন রাষ্ট্রপতিও খাবেন, এখনকার এবং তখনকার যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্যানশন থাবেন। অপেক্ষা করেন, আমেরিকার স্যানশন দিতে হবে না, আমরাই আপনাকে স্যানশন দেবো। সেই পথ তৈরি হচ্ছে, সেই পথে মানুষ এখন যাচ্ছে।
সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভাবতে পারেন একটা লোক কত ধরণের দূর্নীতি করেছে। একজনকে র্যাব প্রধান বানিয়েছিলেন, তারপরে পুলিশ প্রধান, তারপরে তার নামে পুরো বাহিনীরই বদনাম হয়েছে, র্যাব স্যানশন খেয়েছে, এখন আবার তার নামে আমেরিকা নয়, বিদেশ নয়, দেশের মধ্য থেকে তদন্ত হচ্ছে… সব একাউন্ট জব্দ, বন্ধ এবং তার যত সম্পত্তি আছে সব কিছু বাজেয়াপ্ত। আমার জানতে ইচ্ছা করে বেনজীর আহমেদের কত টাকা আছে ব্যাংকে? এতোদিন পরে তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করলেন কেনো এতোদিন সময় দিলেন? মানে মাল যা কামি্য়েছে সেইগুলো বাইরে ট্রান্সফার করে দেয়ার জন্য। পত্রিকায় দেখলাম বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পত্তির পরিমান ৩৪২ বিঘা। তার ব্যাংকে কত টাকা ছিলো সেটা তাদের জানবার কথা। আমি দাবি করছি তাও জানান, আমি দাবি করছি কেনো এতোদিন পরে তার নামে নি্ষেধাজ্ঞা দেয়া হলো…ওই কোর্টকে জিজ্ঞাসা করেন… দুদক যখন তদন্ত করতে চেয়েছিলো তখন হাইকোর্ট কেনো তদন্ত বন্ধ করেছিলো কার নির্দেশে?
আনোয়ারুল আজীম আনারের প্রসঙ্গ টেনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, আওয়ামী লীগ তিনটা কারণে অস্বস্তিতে আছে। আজিজ, বেনজীর এবং একজন এমপির কারণে। সে (আনোয়ারুল আজীম আনার) এমপি নাকী? জনগণ ভোট দিয়েছে? দেয়নাই। সেই এমপি যার নামে রেড এলার্ট ছিলো। যার নামে খুনের মামলা ছিলো, যার নামে ধর্ষন-লুট সব ধরনের মামলা ছিলো। সেই এমপি নিজেই বলেছিলেন, আমি প্রথম বার যখন এমপি হয়েছি তখন কয়েকটা মামলা উঠে গেছে...তার পরে ধীরে ধীরে এবার এমপি হবার পর আমার নামে সব মামলা উঠে গেছে। সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল।
জাতীয়তাবাদী মোটর চালক দলের সভাপতি সেলিম রেজা বাবুর সভাপতিত্বে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা আজমল হোসেন পাইলট, ভিপি ইব্রাহীম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।