ছবি : আপন দেশ
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, এখনো সময় রয়েছে, তাই দ্রুত নির্বাচনের সঠিক তারিখ নির্ধারণ করা উচিত।
তিনি আরো বলেন, অনেকেই বাহানা করে আপনাকে বুঝাতে পারে, সংস্কার করতে হবে—কিন্তু সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করা জরুরি। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন, যেখানে জনগণের প্রতিনিধিরা ক্ষমতায় আসবেন এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তি দ্বারা দেশ পরিচালিত হবে। এভাবে সংসদে সংবিধান পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা হবে, যা জনগণের চাওয়া।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয় ছিল 'গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মরহুম সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির ভূমিকা। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক বলেন, জনগণের আশা পূরণ করার জন্যই আজকের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কি সে আশা পূরণ হচ্ছে? তিনি সতর্ক করে বলেন, সংস্কারের নামে যদি আবার বিলম্ব হয়। আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা যদি ফিরে আসে, তাহলে জনগণকে আবার রাস্তায় নামতে হবে। আমরা রাস্তায় নামতে চাই না; আমরা চাই মানুষকে শান্তিতে রাখতে। গণতন্ত্র ফেরত দিতে।
তিনি প্রশ্ন করেন, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার আগেই কেন পুলিশ বাড়িতে চলে যায়। অথচ আওয়ামী লীগের গ্রেফতারকৃত আসামিরা কেন জামিন পায়—এটা জনগণ জানতে চায়।
ফারুক আরো বলেন, এখন মামলা হলে পুলিশ বলে তদন্ত করে দেখবে মামলা সঠিক কিনা। কিন্তু যারা বিএনপির অফিস তছনছ করেছে, তাদের সম্পর্কে কেন তদন্ত হয় না? তিনি জানান, জনগণ জানতে চায় কেন আওয়ামী লীগের দোসরদের টেলিভিশনের সামনে বসতে দেয়া হচ্ছে। কেন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে।
তিনি বলেন, এ সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য দেশের জনগণ ড. ইউনূসকে সম্মান দেয়নি। যারা আওয়ামী লীগের মতো ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রকে হরণ করেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যই আপনাকে গদিতে বসানো হয়েছে।
ফারুক দাবি করেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগের নামে, শেখ হাসিনার নামে এবং শেখ মুজিবুর রহমানের নামে অনেক নামকরণ হয়েছে। তিনি বলেন, অবিলম্বে এগুলো বাতিল করতে হবে। যাঁরা আত্মাহতি দিয়েছেন ছাত্রসমাজ, তাদের নামে নামকরণ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলেও তাদের দোসররা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এখনও রয়েছে।
তিনি বলেন, এ দোসররা অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে নানান ষড়যন্ত্র করছে।তাই জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী অবিলম্বে তাদের অপসারণ করতে হবে।
তিনি আরো যোগ করেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ জনগণ ভোট দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
আলোচনা সভায় এনপিপির যুগ্ম মহাসচিব মো. ফরিদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির চেয়ারম্যান কারী আবু তাহের, মহাসচিব আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাত হোসেন, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল বারিক। সভায় সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।