ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষা জীবনে ছাত্রলীগ করা রাষ্ট্রপতি পলাতক শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছেন। সেসঙ্গ প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রপতির সুর ভিন্নখাতে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (২১ অক্টোবর) আশুলিয়ায় গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শহীদদের পরিবারকে বিএনপির পক্ষ থেকে নগদ অর্থ সহয়তা প্রদান অনুষ্ঠানে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, রাষ্ট্রপতি তো শেখ হাসিনাই দেয়া। রাষ্ট্রপতি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন, যুবলীগ করতেন। শেখ হাসিনা মনোনীত রাষ্ট্রপতির কণ্ঠের সুর ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হচ্ছে। উনি (রাষ্ট্রপতি) বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পান নি। যে স্ত্রী স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য লোকের কাছে চলে যায়, সে কি ডিভোর্স লেটার দিয়ে যায়। পলাতক শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিয়ে যান নি, হতে পারে এটা। কিন্তু আমরা জানি তিনি পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্ব পালনের চাইতে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালনে বেশি ইচ্ছুক। প্রথম দিকে ছাত্র-জনতার যে উত্তাল যে রূপ, সে সময় কিছু বলেন নি। কিন্তু এখন ক্রমান্বয়ে শেখ হাসিনার অনুগামি হয়ে কথা বলছেন। কোন ধরনের চক্রান্তের সঙ্গে তিনি আছেন কিনা দেখতে হবে।
রিজভী বলেন, হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেও শেখ হাসিনার কোন অনুসূচনা নেই। তিনি (শেখ হাসিনার) হিস্র মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করছেন। পতনের পরও তার নিষ্ঠুরতা এখনো থামে নি। পরাজিত হওয়ার পরও বর্বরতা থামেনি। পালিয়ে গিয়ে এখনও ছাত্রলীগ-যুবলীগকে নির্দেশ দিচ্ছে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করার জন্য।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচারের দোসররা নানা জায়গায় আছে। ওদের হাতে আছে প্রচুর টাকা। সব টাকা পাচার করতে পেরেছে তা না। কিছু টাকা তো ওদের হাতে আছে। কালো টাকা ও লাইসেন্স বিহীন অস্ত্র প্রয়োগ করবে জনগনের ওপর। দেখাতে চাইলে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল। দেশকে বিক্রি করে দিয়ে ক্ষমতায় থাকার শেখা হাসিনা যে রাজনীতি আবারও তা পুন:প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। সেটা জনগন হতে দেবে না।
এ সময় তাদের প্রতি বিএনপি চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রুহুল কবির রিজভী। এদিন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে ঢাকার অদূরে সাভার এবং আশুলিয়ায় ৭টি শহীদ ও ৩টি আহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রতিনিধি দল। প্রথমে সাভারে ব্যাংক টাউনে শহীদ ইয়ামিনের বাসায় শহীদ ইয়ামিন, শহীদ নাফিসা হোসেন ও আহত ইসমে আজমের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়। এরপর আশুলিয়ার কালার টেকের কাইচা বাড়িতে শহীদ মামুন বিপ্লবের বাসায় শহীদ মামুন বিপ্লব, শহীদ আব্দুস সাবুর, শহীদ সাজ্জাদ, শহীদ বাইজিদ এবং আহত হান্নান ও আকাশ মিয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে প্রতিনিধি দল।
দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষ না খেয়ে থাকে এমন যেন না হয়। মানুষ যাতে দু’মুঠো খেতে পারে এজন্য বাজার সিন্ডিকেট ও মার্কেট সিন্ডিকেটে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা অল্প কিছু ড্রাইভ দেখতে পাচ্ছি কিন্তু ব্যাপক ড্রাইভ দেখতে পাচ্ছি না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খোন্দকার আবু আশফাক, বিএনপি নেতা আবুল কাশেম, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সংগঠনটির সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, শাকিল আহমেদ, শাহাদত হোসেন, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নাজমুল হাসান অভি, সাবেক ছাত্রনেতা মঞ্জুর মোর্শেদ ইমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান তুষার, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. আউয়াল প্রমুখ।
আপন দেশ/কেএইচ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।