ছবি: আপন দেশ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে গড়িমসি করছে। যা জনগণের সন্দেহ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার ডেমরায় শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব বলেন।
নির্বাচনের তারিখ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এখনও পর্যন্ত সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারছে না। জনগণের মধ্যে এ গড়িমসির ফলে গভীর সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। গণতন্ত্রের জন্য সরকারের দায়িত্ব জনগণের কাছে জানানো নির্বাচনের প্রক্রিয়া কীভাবে চলবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এত সংশয় কেন? জনগণ কেন বিশ্বাস করবে যে এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে?
গণতন্ত্রের মৌলিক অধিকার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দেয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত। এটি গণতন্ত্রের জন্য একটি বড় আঘাত। নির্বাচনে জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে, কে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবে। কিভাবে তারা সরকার গঠন করবে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হচ্ছে স্পষ্টতা ও স্বচ্ছতা। সরকারের উচিত জনগণের কাছে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরা। যাতে জনগণ নিজেদের ভোটের মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বাজার পরিস্থিতি ও নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যা অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ড. মোহাম্মদ ইউনুস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তবে সরকারের উচিত নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যাগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখা। বাজারে কিছু পণ্যের শুল্ক কমানোর পরেও তার কোনো সুফল জনগণ পাচ্ছে না। চিনি, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এসবের জন্য দায়ী সিন্ডিকেট। যা সরকারের নীরব সমর্থন পাচ্ছে।
শেখ হাসিনার শাসন পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা রক্ষার জন্য নানা ধরনের অপকৌশল অবলম্বন করেছেন। যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদেরকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে হয়েছে। অবাধ নির্বাচনে তিনি জয়ী হতে পারবেন না, তাই ভোটারদের কেন্দ্রের দিকে যেতে নিষেধ করেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের বিচার করা হয়নি। বরং রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন করার জন্য কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে।
গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি অদ্ভুত পার্লামেন্ট, যেখানে জনগণের ইচ্ছার প্রতি অবিচার হয়েছে। জনগণ দেশের মালিক ও তাদের অধিকার হরণ করার অধিকার কারও নেই। যারা এ অধিকার হরণ করেন, তারা আসলে জনতার শত্রু।
আন্দোলনের চেতনা ও ভবিষ্যতের দিশা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ৫ আগস্টের বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে। ছাত্ররা জীবনের বিনিময়ে আন্দোলনে অবিচল থেকেছে। যা সত্যিই বিরল। তাদের সাহস ও আত্মত্যাগ আমাদের জন্য একটি উদাহরণ।
তিনি বলেন, জনগণ আর আওয়ামী ফেরাউনদের শাসন সহ্য করবে না। তাদের লুটপাটের রাজত্ব শেষ হবে। বাংলাদেশে নতুন একটি যুগ শুরু হতে চলেছে। যেখানে জনগণের ভোটের মর্যাদা থাকবে।
এ সময় রিজভীর সাথে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। যারা আন্দোলনের চেতনায় একত্রিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তারা বলেন, আমরা জনগণের স্বার্থ রক্ষা করতে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবো।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।