প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভায় বক্তব্য রাখছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর
আগামী নির্বাচনে ৩শ’ আসনে প্রার্থী দেবে গণঅধিকার পরিষদ। এমনটি জানিয়েছেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিও জানান। নুরু বলেন, শুধু নির্বাহী আদেশে নয়, গণহত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতি-লুটপাটের সুষ্ঠু বিচারের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় দলটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের তৃতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শনিবার (২৬ অক্টোবর) আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি। রাজধানীর বিজয়নগরে আল-রাজী কমপ্লেক্সের সামনে এ সভা হয়। তাতে সভাপতির বক্তব্য দেন দলের প্রতিষ্ঠাতা ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
রাজনৈতিক দল গঠনের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন দেখে আসছি রাজনীতিতে নানামুখী বিভাজন। একদল অপরকে সহ্য করতে পারে না। সেখানে ধর্ম, আদর্শ চিন্তা করা হয়। বিভেদ করা হয়। আমরা মনে করি এমন এটা রাজনৈতিক প্লাটফর্ম হবে যেখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টানসহ সব ধর্মের লোক থাকবে। আগামীর নেতৃত্ব গড়ে তোলা হবে তরুণদের মাধ্যমে।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে দাবি করে ভিপি নুর বলেন, দেশের মানুষে সব ধরনের অধিকার হরণ করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়েছিল। সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন আওয়ামী লীগকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। তবে তা শুধু নির্বাহী আদেশেই নয় আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য ফ্যাসিবাদীর সহযোগি হিসেবে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
জুলাই আন্দোলনকারী হতাহতের পরিবারকে রাষ্ট্রীয়ভাতা প্রদানের আহবান জানান ভিপি নুর। বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি হয়েছে, পাচার হয়েছে। আর জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারের জন্য মাত্র ২ হাজার কোটি টাকা দিলে রাষ্ট্রের তেমন ঘাটতি হবে না। শহীদ পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। মাগফিরাত কামনা করেন শহীদদের রুহের।
সভায় নুর জানায়, তিনি বিশ্বাস করে আগামীতে মানুষ সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। সে নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। যেখানে তারুণ্যের আধিক্য থাকবে। থাকবে প্রবীণরাও।
নুরের উদ্যোগে গঠিত হয় গণঅধিকার পরিষদ। তিনি দলটির সভাপতি। সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মো. রাশেদ খান। এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা নুরুল হক নুর ২০১৭ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নেমে নিজ সংগঠনের বিরাগভাজন হন। ২০১৮ সালে সরকার প্রথম শ্রেণির চাকরিতে কোটা তুলে দেয়ার পর নুর ডাকসু নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হন। এরপর কোটা সংস্কারের জন্য গঠন করা কমিটিকে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক দলে রূপ দেন। গঠন করেন ‘গণঅধিকার পরিষদ’। এ দলের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এ এমএস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। পরে তাদের মধ্যে বিভাজন হয়।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা শুরু হয়। তিনটি পায়রা অবমুক্ত করা হয়। এরপর একেএকে দলীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। সভাপতির বক্তব্যের পরে কেক কাটা হয়। এরপর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র্যালি করা হয়। র্যালিটি আলরাজি কমপ্লেক্স থেকে পল্টন বিজয়নগর প্রদক্ষিণ করে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।