সচিবালয়/ফাইল ছবি
আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রশাসনিক দায়িত্ব নিয়েছে। তবে এখনও স্বাভাবিক হয়ে উঠেনি প্রশাসনিক কার্যক্রম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি অত্যন্ত ধীর। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অবস্থাও একই।
সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বদলি নিয়ে আতঙ্ক কাজ করছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আতঙ্ক বেশি দেখা যাচ্ছে। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সাবেক সরকারের আমলে নিযুক্ত সচিবরা এখনও দায়িত্বে রয়েছেন। ওএসডি বা অবসরে যেতে হয় কি না- এ নিয়ে তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অন্যদিকে চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া ৮ জন সচিব কাজ শুরু করলেও পুরনো কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে সমস্যায় পড়ছেন। এর ফলে কাজের গতি কমেছে।
প্রকল্পের অর্থ কাটছাঁটের নির্দেশ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। নতুন প্রকল্প নেয়ার পরিকল্পনাও নেই। মাঠ পর্যায়ে উন্নয়নমূলক কাজ যথাযথভাবে হচ্ছে না। একইসঙ্গে সরকারি ভাতা সঠিক সময়ে দেয়া হচ্ছে না।
সামাজিক কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে কাজ করতে পারছেন না। নতুন সরকারের নিজস্ব টিম প্রয়োজন।
চলতি সপ্তাহে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যেকোনো সরকার যখন দায়িত্ব নেবে তখন তার নিজস্ব টিম (দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) লাগবে। তাহলে পুরোনো টিমকে তো সরে যেতেই হবে।
শ্রম ও যুব বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে একটা বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লবের পরে কোনোকিছু আগের সিস্টেমে চলে না। কিন্তু আমরা এখনও আগের সিস্টেম ধরে রেখেছি। প্রশাসনের কারো কারো অসহযোগিতার কারণে দেশে স্থবিরতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে সিস্টেম ভাঙার প্রয়োজন হলে সিস্টেম ভাঙা হবে। প্রয়োজন দেখা দিলে প্রশাসনে অসহযোগীদের স্থলে নতুন নিয়োগ নিয়েও সরকার ভাববে।
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, প্রশাসনে স্থবিরতা তো আছে। এটা আমরা লক্ষ্য করছি। আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে অসহযোগিতা পাচ্ছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থবিরতা কেটে যাবে।
বর্তমানে অন্তত ৭টি মন্ত্রণালয়ে সচিব নেই। অতিরিক্ত সচিবরা নিয়মিত কাজ চালাচ্ছেন। তবে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে চাপ রয়েছে। তারা উপযুক্ত পদে পদায়নের দাবি জানাচ্ছেন।
অতীতে চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া ১০০ কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল হয়েছে। সাম্প্রতিক পদোন্নতিতে ৮ জন সিনিয়র সচিব হয়েছেন। তবে অন্য ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদায়নের খবর নেই।
বঞ্চিত কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন, তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি হয়নি। প্রশাসনের বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত পদায়নের প্রয়োজন অনুভব করছেন তারা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস-উর রহমান বলেন, সমস্যার সমাধানে সময় লাগবে। তবে দ্রুত পদায়নের কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে, শীঘ্রই প্রশাসনিক কার্যক্রমের গতি বাড়বে। সূত্র: ইউএনবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।