Apan Desh | আপন দেশ

আ.লীগের ঝটিকা মিছিলের আয়োজক এবি ব্যাংকের ইভিপি, ছবিও তুলেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:৩৭, ১১ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ২০:০৮, ১১ নভেম্বর ২০২৪

আ.লীগের ঝটিকা মিছিলের আয়োজক এবি ব্যাংকের ইভিপি, ছবিও তুলেছেন

মতিঝিলে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ভিডিও-ছবি তোলেন সৈয়দ মহররম হোসেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি নিয়ে রোববার রাজধানীর মতিঝিলে ঝটিকা মিছিলে নেমেছিলেন আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী। পলাতক শেখ হাসিনার নির্দেশে ওই মিছিলের আয়োজন এবং ভিডিও-ছবি তুলেছেন এবি ব্যাংকের একজন ইভিপি। নাম তার সৈয়দ মহররম হোসেন।  

তিনি জুলাই আন্দোলনে ছাত্রহত্যা মামলার আসামি। গত ৪ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ি থানায় হত্যা মামলা হয়েছে মহররমের বিরুদ্ধে। মামলা নং ১৫  আসামি নং ৮৭। তবে অফিস করছেন দিব্যি। ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন নির্বিঘ্নে। প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন দফতরে।  

সৈয়দ বংশের এ মহররম শেয়ার বাজারের ‘দরবেশ’ সালমান এফ রহমানের সহচর। তার আয়োজনে মতিঝিলের ঝটিকা মিছিলটি হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ও সিসি টিভির ফুটেজে এমন তথ্য মিলেছে। 

শহীদ নুর হোসেন দিবস উপলক্ষ্যে গুলিস্তানে শহীদ নুর হোসেন চত্বরে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ছাত্র-জনতা এ সমাবেশ প্রতিহতের ডাক দিলে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করতে পারেনি। তবে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি সংবলিত প্লাকার্ড নিয়ে মতিঝিলে ঝটিকা মিছিল করেছে দলটির কিছু কর্মী-সমর্থক। মিছিলটি সিটি সেন্টারের সামনে থেকে শুরু হয়ে বক চত্বরে আসলে ছাত্র-জনতার বাধার মুখে ছত্রভঙ্গ হয়। 

অর্থপাচারের দায়ে কুয়েতে কারাদণ্ড ভোগকারী সাবেক এমপি শহিদ ইসলাম পাপুলের প্রধান রাজনৈতিক সহযোগী সৈয়দ মহররম হোসেন। পাপুলকে অর্থপাচারেও সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মহররমের বিরুদ্ধে। 

সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ব্যাংক কর্মকর্তা সৈয়দ মহররম হোসেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। এরপর তিনি নিজেকে আড়ালে রাখতে হোটেল পূর্বানীর ভেতর প্রবেশ করেন। মিছিল শুরু হলে পূর্বানীর গেট থেকে বের হয়ে ভিডিও এবং ছবি ধারণ শুরু করেন। 

যাত্রাবাড়ি থানায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার, তাতে ৮৭ নং আসামি সৈয়দ মহররম হোসেন (বায়ে), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আপ্লুত চুমু খাচ্ছেন সাবেক এ ছাত্রলীগ নেতা। ছবি-সংগৃহীত

গত ১০ নভেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে শেখ হাসিনার একটি ‘কথিত’ ফোনকল ফাঁস হয়েছিল। এ ফোন কলে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা গেছে, তোমরা ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করবা। আর একজনকে রেডি রাখবা ছবি তোলা ও ভিডিও করার জন্য। মিছিলে হামলা হলে যখন ট্রাম্পের ছবি ভাঙচুর করা হবে তখন ছবি তুলে রাখবা। ওই ছবি আমাকে পাঠিয়ে দিলে আমি ট্রাম্পকে পাঠিয়ে দেব। তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। 

শেখ হাসিনার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ছবি তোলার কাজটি করেছেন সৈয়দ মহররম হোসেন। তার ফোনের ফরেনসিক টেস্ট করলেই এর সত্যতা মিলবে বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।

এ প্রসঙ্গে সৈয়দ মহররম হোসেন বলেন, ‘ওই সময় আমি রূপালী ব্যাংকে নামাজ পড়ে যাচ্ছিলাম। সেখানে মিছিলের জটলা ছিল। আমি কোনো মিছিলে যাইনি।’ 

 যাত্রাবাড়ি থানায় ছাত্রহত্যা মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে চিনেন না। আমার আইনজীবী দিয়ে কাম সেরে ফেলেছি। ওটা আর কিচ্ছু হবে না ‘   

আপন দেশ/এবি/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়