Apan Desh | আপন দেশ

শেখ হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস, গুম-খুনের হুমকি দিলেন—বলেন বিচার করবেন

নিজস্ব প্রতিবদেক

প্রকাশিত: ২২:২৫, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ২২:২৬, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

শেখ হাসিনার ফোনালাপ ফাঁস, গুম-খুনের হুমকি দিলেন—বলেন বিচার করবেন

শেখ হাসিনার নতুন অডিও ফাঁস।

ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনার ফোনালাপ আবারও ফাঁস হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এ অডিও কলের মাধ্যমে শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন। বর্তমান সরকারকে ‘খুনি’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এ অবৈধ সরকারের অত্যাচারে সারাদেশের মানুষ জর্জরিত। তারা আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে।

ফোনালাপে শেখ হাসিনার ‘কণ্ঠে’ নানা হুমকি দিয়ে বলেন, এদের বিচার তিনি করবেন।

রোববার (১৭ নভেম্বর) শেখ হাসিনার ‘কণ্ঠে’ নতুন একটি ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ ফোনালাপে শেখ হাসিনার কণ্ঠের মতো একজন দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন।

অডিও থেকে জানা যায়, সুইডেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশটিতে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন দলটির নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ফোন কলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিভিন্ন পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠান শেষে শেখ হাসনাকে উপস্থিত বাবু সুভাষ ঘোষ, লিংকন মোল্ল্যা, খোকন মজুমদার, নঈম বাবু, মোহম্মদ শহীদ, মাহবুবুর রহমান, লিমন, কবির, সাব্বিরসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষণা করতে শোনা যায়।

অডিওর শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং সমন্বয়কদের খুনি অ্যাখ্যা দিয়ে এ সময় নেতাকর্মীদের ফোন কল রেকর্ড করার কথা বলা হয়। 

অডিওতে বলা হয়, এ অবৈধ সরকারের অত্যাচারে সারাদেশের মানুষ জর্জরিত। কৃষক-শ্রমিকরা বেকার হয়ে গেছে। শ্রমিক আন্দোলন করেছে। সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। চাকরির বয়স নিয়ে আন্দোলন করতে যমুনার সামনে গেলো, সঙ্গে সঙ্গে গুলি করলো। সেখানে একজন মারা গেলো ও পিটিয়ে উঠিয়ে দিলো।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭ জুলাই থেকে এই ছাত্ররা যখন আন্দোলন করে ১৪ জুলাই পর্যন্ত। তারা সহিংস হওয়ার আগে গায়ে একটা টোকাও পড়েনি। তাদের মতো তারা আসছে-বসছে, আমরা তো তাদের কিছুই বলিনি। পুলিশের কাছে কোনো মেটাল বুলেটা ছিল না। নির্দেশ দিয়েছি কোনো গুলি করবা না। পুলিশি ব্যারিকেড উঠিয়ে তারা ইচ্ছে মতো আন্দোলন করেছে। শুরু থেকে তো অনেক কিছু করা যেত, আমরা তো সেসব করিনি।

তিনি বলেন, এ কোটা তো আমিই বাতিল করে দিয়েছি। যেখানে কোনো কোটাই নাই, সেখানে আন্দোলনটা কিসের জন্য ছিল? তারপর আমাদের মন্ত্রীরা তাদের নিয়ে বসে, তাদের সব দাবি মানা হয়। দাবি মানার পরে আবার এক দফা। শেখ হাসিনাকে খুন করো, এ তো কথা? তাদের টার্গেট ছিল আমাকে হত্যা করা।

তিনি আরো বলেন, এখন আবার হত্যা মামলা দিয়ে বলে গণহত্যার বিচার হবে। গণহত্যার বিচার আমার না, বিচার হবে ইউনূসের। এ সমস্ত খুনের দায়-দায়িত্ব ইউনূসকে নিতে হবে। সে যে হত্যার সাথে জড়িত, তার প্রমাণ তো পাওয়াই যায়। কারণ, জেলখানায় যত জঙ্গি আটক ছিল, তাদেরকে ইউনূস ছেড়ে দিয়েছে। তাদের সঙ্গে ইউনূসের একটা যোগসাজশ ছিল। বাংলাদেশটাকে সে একটা জঙ্গি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।

শেখ হাসিনা বলেন, শেয়ার মার্কেটের টাকা উধাও, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংকের টাকা উধাও। সেসব টাকা গেল কোথায়? ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমি রেখে আসছি। ১ কোটি পরিবারের জন্য টিসিবি কার্ড দিয়েছি।

তিনি বলেন, দেশে যে অরাজকতা চলছে তার বিচার হবে ইনশাল্লাহ। এদের বিচার আমি করবোই ইনশাল্লাহ।

এদিকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলার আসামি শেখ হাসিনার গ্রেফতারের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

এর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শেষ করতে আদালতে সময় প্রার্থনা করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ট্রাইব্যুনাল এ সময় জানতে চান ‘শেখ হাসিনা কোথায়’?

আপন দেশ/এমবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়