ছবি: আপন দেশ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কিছু শিক্ষার্থী দেশের সকল সংবিধান বাতিল করতে বলছে। একটি জাতির আত্মজীবনী হচ্ছে সংবিধান। সেটি সংযোজন হতে পারে, সংশোধন হতে পারে। কিন্তু বাতিল করা যেতে পারে না।
তিনি বলেন, দেশের ৭২’র সংবিধান বাতিল করা হলে ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধকে অস্বীকার করা হবে। মহান স্বাধীনতার ঘোষককে অস্বীকার করা হবে। ৩০ লাখ শহীদকে অস্বীকার হবে, ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতকে অস্বাীকার করা হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধানের ধারাবাহিকতা রয়েছে, সংশোধন রয়েছে। কিন্তু বাতিল করা হয়নি।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপের দুবাছুরি দ্বি-মুখি দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জনসভায় প্রধান অতিথি হিসাবে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আমরা বিএনপি পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে নীলফামারী জেলা বিএনপির সার্বিক তত্ত্বাবধানে নবনির্মিত বাড়ীর চাবি হস্তান্তর করা হয়। এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন-বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, রংপুর অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, নীলফামারী বিএনপি সভাপতি আলমগীর সরকার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম প্রমুখ।
আমরা বিএনপি পরিবারের আয়োজনে ২০১৪ সালের ১৮ জানুয়া নীলফামারী সদর উপজেলার র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত বিএনপির নেতা গোলাম রব্বানীর পরিবারকে নতুন বাড়ি হস্তান্তর ঘিরে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, এখনো চালের দাম কমেনি, চিনি, আলুর দাম কমেনি। শেখ হাসিনার কারণে গত বছর থেকে ভারত থেকে আলু আমদানি করতে হয়। এবারও যদি আলু আমদানি করতে হয়, তাহলে মানুষ বলবে ড. ইউনূসের সরকারকে আমরা সমর্থন দিয়েছি, তাহলে কি লাভ হলো? বাজারে বয়লার মুরগীর দাম কেন বাড়ছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, ৫ মে রাতে শেখ হাসিনার সরকার কত আলেম-ওলামাকে খুন করেছে সেই হিসাব কিন্তু এখনও পাওয়া যায়নি।
আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, কেউ কেউ বলছেন- আনুপাতিক হারে নির্বাচন। কেন? আনুপাতিক নির্বাচন কিসের জন্য? এটা কি তৃণমূলের মানুষ বোঝে?
যেসব রাজনৈতিক দলের ভোটের সংখ্যা বেশি নয় তারা আনুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থার কথা বলছে মন্তব্য করে রিজভী। তিনি বলেন, যারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে চান; যাদের ভোটের সংখ্যা বেশি নয়, তারা এটা একটা কৌশল হিসেবে নিয়েছেন। এটা দেশের মানুষ মেনে নেবে না। এ ধরনের কোনো পদ্ধতি নিয়ে যদি আপনারা ষড়যন্ত্র করেন, এ ষড়যন্ত্র কিন্তু মানুষ ধ্বংস করে দেবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, ব্যাংক ডাকাতি হচ্ছে। আইজিপি তার বক্তব্যে বলছে আমাদের হাতে ম্যাজিক নেই। একদিনে আইনশৃংখলায় পরিবর্তন আনা সম্ভব না। কিন্তু দেশের মানুষ তো দেখবে আপনার দায়িত্ব ও উদ্যোগ। কেনো ব্যবসায়ীদের হত্যা করা হচ্ছে, কারা করছে কেউ প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার করতে পারছেন না। জনগণ আপনাদের ব্যর্থতা দেখতে চায় না, জনগণ ভালো ফলাফল দেখতে চায়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব বলেন, দেশের অর্থনৈতিক দিককে আবার স্বাভাবিক করে তুলতে হবে। কিন্তু এখনও জিনিসপত্রের দাম কেনো কমাতে পারছেন না, কেন সোনালী মুরগী বয়লার মুরগীর দাম ২০-৩০ টাকা বাড়বে। কেন চিনির দাম প্রতিদিন ১০টাকা করে বাড়বে। ব্যাংকে মুদ্রা সংকোচন নীতি নিয়েছেন। কিন্তু এমন সংকোচন নীতি নিয়েন না, যে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ীরা ব্যাংকে গিয়ে তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকাই উত্তোলন করতে না পারে। এমন পদ্ধতি অবলম্বন করুন যেনো দেশের সম্পদ ও টাকা বাহিরে পাচার না হয়, মানুষ যেনো প্রয়োজনে ব্যাংকে টাকা তুলতে পারে।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।
