Apan Desh | আপন দেশ

আ. লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বিএনপির কথার টোন: বিবিসিকে নাহিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:০২, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১২:৩৯, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫

আ. লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বিএনপির কথার টোন: বিবিসিকে নাহিদ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম

বিএনপির কথার টোন আওয়ামী লীগের সাথে মিলে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রকাশিত বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারেও এ মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এরপর বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংলিষ্টরা। নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে এবং বিএনপির সমালোনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এরপর প্রতিক্রিয়া আসে আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার কাছ থেকে।

মির্জা ফখরুলের নিরপেক্ষ সরকারের দাবিকে আরেক এক-এগারোর ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। এ ধরনের পরিকল্পনা গণতন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থের বিরোধী—এমন পরিকল্পনা হলে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে, উপদেষ্টাদের কেউ রাজনীতি করলে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে বের হয়েই করবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। একইসঙ্গে রাজনৈতিক দলেরও সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ এবং বিভিন্ন সরকারি ও সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগে তদবির বা চাপ প্রয়োগ করা অনুচিত বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

এবার একই প্রসঙ্গে বিবিসি বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, তারা রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সরকার থেকে বের হয়ে যাবেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবিকে আরেকটা এক–এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত হিসেবে দেয়া ফেসবুক পোস্ট প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, এক–এগারো এবং মাইনাস টু-এর আলাপটা কিন্তু সর্বপ্রথম বিএনপিই রাজনীতির মাঠে এনেছে কিছুদিন আগে।

অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি ও অংশীজনদের সমর্থনেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বিএনপি মহাসচিবের নিরপেক্ষতা সংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

এই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বা সরাতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক অবস্থানের সঙ্গেও মির্জা ফখরুলের ওই বক্তব্যের সাদৃশ্য দেখছেন বলে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত স্ট্যাটাস দিয়েছে যে, এটা অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকার, একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে, এর আন্ডারে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। সো একই টোনে আমরা যখন কথা বলতে দেখছি, এটা কিন্তু একটা সন্দেহ তৈরি করে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার অনির্বাচিত ও অসাংবিধানিক সরকার। এ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে না এবং পরবর্তী নির্বাচন একটি নতুন (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের অধীন হতে হবে।

সেই প্রসেঙ্গ টেনে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমি মনে করি না যে এটা তারা (বিএনপি) ওই উদ্দেশ্য থেকে বলেছে; কিন্তু তাদের কথার টোনটা কিন্তু আওয়ামী লীগের সে টোনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।

নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, বিচার কার্যক্রম, সংস্কার ও নির্বাচন—এ সবগুলোই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার হলেও বিএনপি কেন জানি মনে করে এই সরকারটা হয়েছে কেবল একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য।

নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে তো আমরা নিরপেক্ষই মনে করছি। বিএনপি কেন মনে করছে না নিরপেক্ষ আচরণ, বিএনপির এটা স্পষ্ট করা উচিত।

নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলে এসব বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা সম্ভব বা কোনো অভিযোগ থাকলে নিরপেক্ষতার স্বার্থে কী পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে সেটা তখন সরকার বিবেচনায় নিতে পারবে বলেও উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ।

তিনি আরও বলেন, একইসঙ্গে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বা সাংবিধানিক পদে যদি বিএনপিপন্থী লোকজন থাকে, সেটাও নিরপেক্ষতা লাগবে কি না, তাহলে সেটাও বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু এখন তো এটার সময় আসেনি।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, “এ বছরের শেষ থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সীমা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন, তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকাল এবং নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সীমা দেয়া হয়েছে। সে পর্যন্ত ধৈর্য রেখে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সামনে এগোনো প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, যখন গুম বা জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম এগোনো হচ্ছে এবং সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে, হয়তো সামনের মাসেই আলোচনা, নেগোসিয়েশন, বারগেনিং (দরাদরি) শুরু হবে। বিএনপির বা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের আলাপগুলোতে মনোযোগী হওয়া উচিত, বিচার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা উচিত, সে সময় তারা বলছে এ সরকারের চেয়ে নিরপেক্ষ একটা সরকার প্রয়োজন।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়