Apan Desh | আপন দেশ

‘মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামাতিকরণ করা হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৫:৩৫, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

‘মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামাতিকরণ করা হয়েছে’

বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড. রুহুল কবির রিজভী

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামাতিকরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড. রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও দোয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতা কামনায় এ আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করেছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএব)।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিশেষ দল দখল করে নিয়েছে। সমস্ত বড় বড় ইউনিভার্সিটিগুলোকে জামাতিকরণ করা হয়েছে। পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। সমগ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামাতিকরণ করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয়। বড় বড় বিশ্ব বিদ্যালয়ের দায়িত্বে জামাতি চেতনার লোকজনকে বসানো হয়েছে। আমাদের সমর্থিত লোকজন যেমন আওয়ামী লীগের আমলে বঞ্চিত হয়েছে, তেমনিভাবে এখনো বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফত (মাউশি) বলছে, রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। এগুলো তো হাসিনার কথার প্রতিধ্বনি। হাসিনা সরকার এবং রাষ্ট্রকে এক করে দিয়েছে। এ সরকার তো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল। আর গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে, আলোচনা-সমালোচনা, তীব্র সমালোচনা হবে এবং সরকার সব শুনবে। এরপরে জনকল্যাণের পক্ষে যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার, সে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষিপ্রতার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবে। এটাই তো সরকার। এরপর হচ্ছে রাষ্ট্র আলাদা জিনিস। রাষ্ট্রের বিরোধিতা অপরাধমূলক। কিন্তু, সরকারের বিরোধিতা তো অপরাধমূলক নয়। সরকারের বিরুদ্ধে যত সমালোচনা হবে, সে সরকার যদি সৎ এবং জনগনের মুখাপেক্ষী সরকার হয়, তাহলে সে সরকার তো সমালোচনাকে আমন্ত্রণ করবে। অথচ মাউশি বলে দিলো সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, জনপ্রশাসনের সচিবের নামে কোটি টাকার দূর্নীতির ঘটনা এসেছে। তারপরও সে কি করে সেখানে বহাল থাকে? এধরণের একটা ঘটনা জানার পরেও, উনি কি করে জনপ্রশাসনের সচিব হিসেবে রয়েছেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে মনে করছেন, জুলাই-আগস্টের বিজয় শুধু তাদের। এ অন্তবর্তীকালীন সরকার; তাদের সরকার। আমাদের মনে হয়, কোনো করণীয় ছিল না। কোনো অবদান নেই। আমরা ১/১১ এর সরকারকে বলতাম সেনা সমর্থিত সরকার। আর এখন অনেকেই বলছেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সেই বিশেষ দল সমর্থিত সরকার। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণ হচ্ছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তো বিপ্লবী সরকার হওয়ার কথা ছিল। সমস্ত দোসরদেরকে উৎপাটন করে জনগণের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছিল তাদেরকে দিয়েই তো প্রশাসন চলার কথা। সে দোসররা আবার সচিবালয়ের ভেতরে মিছিল করে, দাবি-দাওয়া পেশ করে। তারা মনে করছে এটা তাদের ন্যায্য পাওনা। পৃথিবীর বহুদেশে বিপ্লবের পর থেকে টোটাল নতুন কাঠামো তৈরী করে সেখানে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা হয়েছে। আজকে কি করে সচিবালয়ের ভেতরে সে পুরোনো দোসরদের লোকেরা কিভাবে আন্দোলন করে এবং ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়? এটাতো জনগণ প্রত্যাশা করেনি এবং এ সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপ করলেন। এখানে গণবিরোধী আমলাদের পরামর্শে এটা হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র সমাজ থেকে নীতি নৈতিকতা একেবারে উপড়ে ফেলে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এত জায়গা জমি লাগবে কেন? ২৮ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করতে হবে কেন? কিন্তু , তিনি করেছেন। এগুলো যদি না করতেন, তাহলে টিকে থাকতে পারতেন। তাকে পালাতে হতো না। উনি পালিয়েছেন। কারণ, ওনার মনের মধ্যে তো ভয় আছে। তিনি আয়নাঘর করেছেন, ক্রস ফায়ার করেছেন। শুধুমাত্র তার পথের কাঁটা সরানোর জন্য এগুলো করেছেন।

শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ছেলের জন্য, ভাইগ্না-ভাইগ্নির জন্য কাঠার পর কাঠা সরকারি প্লট আত্মসাৎ করেছেন। সরকারি প্লট যাদের আছে, তারা বাড়ি-ঘর নিতে পারে না। ওদের প্রত্যেকেরই বাড়ি-ঘর আছে। পূর্বাচলে ছেলে-মেয়ে, ভাইগ্না-ভাইগ্নির নামে তারা ৬০ কাঠা জমি দখল করেছে। পূর্বাচলে নাকি টিউলিপ সিদ্দিকেরও জমি আছে। যে কিনা ব্রিটেনের এমপি এবং মন্ত্রী ছিলেন। উন্নত দেশে থেকে, উন্নত নৈতিকতার মানুষ হয়েও রক্তের যে জেনিটিক্যাল ধারা রয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।

বিএনপির এ সিনিয়র নেতা আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে যে জনস্রোতের তারল্য সৃষ্টি হয়েছে, এর ভিত্তি রচনা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশ নায়ক তারেক রহমান। বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সঙ্গে কখনোই আপস করেন নি।

ডিইএব'র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রকৌশলী মো. হানিফ'র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপি'র সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন প্রমুখ।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়