Apan Desh | আপন দেশ

‘মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪:৪০, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫

‘মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রমনাস্থ ইনস্টিটিউশন ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইইবি) সেমিনার হলে তিনি এ মন্তব্য করেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন প্রকৌশলীদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব)। 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ছাত্রিশিবির তাদের একটি লেখার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করেছে। এটি কেনো? মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না। আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। সেটাকে ছোটো করে, কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না। আমরা সকল চেতনাকে ঐক্যবদ্ধ করে সকলে শান্তিতে থাকতে চাই। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত দেড় দশকে শেখ হাসিনা নিজে ও পরিবারের লোকজনের সমন্বয়ে দেশে গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। এখন পাশের দেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছেন। আর যে কয়জন ধরা পড়ে জেলখানায় আছেন তাদের মধ্যে একজন দরবেশ (সালমান এফ রহমান)। তিনি কারাগার থেকে ঝাড়ফুক দিচ্ছেন। তিনি মাঝেমধ্যে জেলখানা থেকে ঝাড়ফুক পাঠাচ্ছেন। যে এতগুলো শ্রমিক নেমে গেলেই তো হয়। আমি জানি না তাদের বিচার প্রক্রিয়া কিভাবে চলছে? কিভাবে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে এ কথাগুলো বলছে। নিশ্চয়ই তাদেরকে নানাভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তারা সেটির সুযোগ নিয়ে কথাবার্তা বলছে। 

কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদেরকে কারাগারে নিয়ে মাদকসেবী ও ফাঁসির আসামিদের সঙ্গে রাখা হতো। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যাবহার করে আমাদের নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে গুম খুন করা হয়েছে। যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলছে ভালো। কিন্তু সংস্কারের নামে আপনারা সময় ক্ষেপন করবেন না। এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। এমন সংস্কার নিয়ে আসুন যাতে মানুষ ন্যায় বিচার পায়। এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদের কবর রচনা হবে। আর যাতে কোনো ফ্যাসিবাদের জন্ম না হয়। তা না হলে মানুষ ভালোভাবে নেবেনা।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সম্পর্কে রিজভী বলেন, জিয়াউর রহমান বহুমুখী প্রতিষ্ঠান। স্বল্প পরিসরে তাকে নিয়ে আলোচনা করা কঠিন। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বিরাট বিস্তৃত। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। যথা সময়ে দেশের মানুষের প্রয়োজন বুঝতে পেরেছিলেন। তার গুণাবলী ছিলো অপরিসীম। 

মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তৎকালীন রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন দ্বিধান্বিত। সেসময় তিনি কি করবেন কি করবেন না এমন সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে দেশের মানুষ উদ্বেলিত হয়ে উঠে। কিন্তু পলাতক প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড. ওয়াজেদ তার বইয়ে লিখে গেছেন যে, জিয়াউর রহমান ও তার অবদান মুছে ফেলতে সকল চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করেছিলেন পলাতক প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির এ নেতা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে জনগণের প্রতি আওয়ামী লীগের আচরণ মানুষ দেখেছে। আওয়ামী লীগের কোন্দল ও পাল্টা কোন্দলে ১৫ আগস্ট ঘটেছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান একটি রাষ্ট্র দর্শন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ঘোষণার মাধ্যমে দেশের সকল শ্রেণীর মানুষকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসেন। যার বিশালতা অনেক।

এ্যাবের সভাপতি ও আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী আব্দুল হালিম মিয়া, সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), আইইবি ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহবুব আলম, এ্যাব নেতা প্রকৌশলী আবদুস সালাম, প্রকৌশলী গোলাম মাওলা, প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, প্রকৌশলী রুহুল আলম, প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন ও প্রকৌশলী শামীম রাব্বি সঞ্চয়।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়