Apan Desh | আপন দেশ

দুই সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, আল্টিমেটাম

রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৫১, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৬:১৩, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

দুই সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, আল্টিমেটাম

ছবি সংগৃহীত

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও মহানগর কমিটিতে ‘প্রকৃত ত্যাগী’দের স্থান না দেয়ার অভিযোগ। কমিটি বাতিলের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজশাহীর ছাত্র সমাজ।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজশাহীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এ আল্টিমেটাম দেন। একই সঙ্গে তারা কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাহিন সরকার ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে জুবায়ের রশিদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাজারও শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ ফ্যাসিস্ট শক্তির হাত থেকে মুক্তি লাভ করে। এ বিপ্লবে সারাদেশের মতো রাজশাহীর ছাত্রজনতাও বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছে। ১০ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজশাহীর শিক্ষার্থী ও জনসাধারণ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাজশাহী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে রাজপথে লড়াই করেছে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে অকুতোভয় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। এ আন্দোলনের বীর সন্তান, রাজশাহীর গর্বিত দুই কৃতিসন্তান আলী রায়হান ও সাকিব আঞ্জুম নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখ ও ক্ষোভের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি—একটি স্বার্থান্বেষী মহল জুলাই বিপ্লবের প্রকৃত নায়কদের মাইনাস করে, ৫ আগস্টের পর সুবিধাভোগী কিছু অনুপ্রবেশকারীর মাধ্যমে প্রহসনের পকেট কমিটি গঠন করেছে।

জুবায়ের রশিদ জানান, গত ৩০ জানুয়ারি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী জেলা’ এবং ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী মহানগর’ নামে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিগুলোতে প্রকৃত আন্দোলনের সাহসী, বিপ্লবী এবং নির্ভরযোগ্য নেতৃত্বকে বাদ দিয়ে আন্দোলনের চেতনাবিরোধী, বহিরাগত ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। আন্দোলনবিরোধী এসব ব্যক্তি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাজারে চাঁদাবাজি, ক্ষমতার দখল এবং সুবিধা নেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত।

আরও পড়ুন<<>> নিজের ‘পদত্যাগ’ বিষয়ে স্পষ্ট করলেন নাহিদ ইসলাম

বক্তব্যে বলা হয়, অভিযোগ উঠেছে, ফাতিন মাহাদী ও মাহিন সরকার মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এ কমিটি গঠন করেছে। আরও উদ্বেগের বিষয়, এ কমিটির নেতৃত্বে এমন অনেককে রাখা হয়েছে যারা সরাসরি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমনকি আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদের ছাত্র সংগঠনের মূল নেতৃত্বও এ কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে।

রাজশাহী মহানগরের আন্দোলনে সে সময় যারা রাজশাহীর বাইরে ছিল, আন্দোলনে সম্পৃক্তই ছিল না, তাদেরকেও কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে! অথচ প্রকৃত লড়াকু যোদ্ধাদের নাম সেখানে নেই! এটি সরাসরি জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অপমান। রাজশাহীর ত্যাগী ছাত্র জনতার সঙ্গে প্রতারণার শামিল।

এছাড়াও, একজন হত্যা মামলার অন্যতম আসামিকে এ কমিটির শীর্ষ পদে রাখা হয়েছে, যা এ কমিটির প্রকৃত উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে দেয়। এরা আন্দোলনের চেতনা বিকৃত করে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগত স্বার্থসিদ্ধির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার ও তার সহযোগী কিছু ভুয়া সমন্বয়কের নেতৃত্বে প্রকাশিত এ কমিটির ঘোষণার সঙ্গে তাদের প্রত্যক্ষ যোগসাজশ রয়েছে, যা আমাদের ক্ষোভ ও হতাশা আরও গভীর করেছে বলেও জানানো হয়।

বক্তব্যে আরও বলা হয়, রাজশাহীর ছাত্রসমাজ এ অবৈধ পকেট কমিটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি বাতিল করার জন্য কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আরিফ সোহেল, আব্দুল হান্নান মাসুদ, হাসনাত আব্দুল্লাহ, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ভাইয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সর্বস্তরের ছাত্রসমাজ এ পকেট কমিটিকে সম্পূর্ণভাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে। একইসঙ্গে রাজশাহীর মাটিতে মাহিন সরকার ও সালাউদ্দিন আম্মারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। এছাড়া আন্দোলন শহীদের আত্মদানের ফসল, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার প্ল্যাটফর্ম নয়। রাজশাহীর ছাত্রজনতা জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষায় যেকোনো মুল্য দিতে প্রস্তুত।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী জেলা এবং মহানগরের এ কমিটি ঘোষণা করে। তারপর থেকেই এ কমিটি নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।

আপন দেশ/এবি

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়