ছবি: আপন দেশ
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রকে সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্র স্থায়ী, কিন্তু সরকার পরিবর্তনযোগ্য। তারেক রহমান যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন হলে দেশের জনগণের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রের কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপির আয়োজনে এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত ৩১ দফার ওপর এই কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু।
ইশরাক রাষ্ট্র সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, দেশের প্রথম সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করেছিলেন শেখ হাসিনা। ২০১১ সালে একটি কেবলমাত্র কলমের খোঁচায় তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। এর ফলে দেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে দেড় দশক ধরে জনগণ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচিতে জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ সংস্কার পরিকল্পনার আওতায় নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবেন না। কারণ এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা বাড়ে।
সংবিধান সংশোধন ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে ভোট প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থায় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে গেলেও সরকারের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। এটি পরিবর্তন করা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন করা হবে। যাতে সংসদ কার্যক্রম আরও গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ হয়। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ করা হবে। যেন এটি কোনো রাজনৈতিক দলের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ না করে। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। যা ভবিষ্যতে আর যেন না হয়, সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার প্রসঙ্গে ইশরাক বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। ২০০ টাকার বালিশ ৩ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। ৫০০ টাকার পর্দা ৩০ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ৩০ হাজার কোটিতে উন্নীত করা হয়েছে। এমন দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে। পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা হবে।
এ কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহ উদ্দীন আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক সূমন ভূঁইয়া, মহিলা দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রুমা আক্তার, ছাত্রদল নেতা শামীম মাহমুদ, আবদুর রহিম ভূঁইয়া প্রমুখ।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।