
নববর্ষ উপলক্ষে সতীর্থ স্বজনেরিআলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন রুহুল কবির রিজভী।
নববর্ষে জাতির প্রধান আকাঙ্ক্ষা হলো মানুষের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া—এ কথা বলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে সতীর্থ স্বজন।
রিজভী বলেন, গত ১৫-১৬ বছর ধরে আমরা যে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। কিন্তু সে পথেই আমরা এগোচ্ছি। এটি নিয়ে টালবাহানা করা চলবে না। গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন অর্থহীন। শেখ হাসিনা মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছেন। সুতরাং নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা মানুষের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া।
বিএনপির এ নেতা বলেন, এ ভোটাধিকার কেড়ে নিতে গিয়ে তিনি (শেখ হাসিনা) আজীবন ক্ষমতাবিলাসী চেতনা নিয়ে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, দেশের ন্যায় বিচার, আদালত, আইনকানুন, গণমাধ্যম সবকিছু ভেঙেচুরে তছনছ করে দিয়ে একটা একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার এ ভয়ংকর থাবার মধ্যেও এদেশের মানুষ তার নিজস্ব চিন্তা তার নিজস্ব সংস্কৃতি তার গৌরবময় অতীত ও তার আবহমান বাংলার প্রকৃত যে আদর্শ—সেটা বুকে ধারন করেই লড়াই করেছে। আর এ লড়াই করেছে বলেই আমরা আজকে বিজয়ী হয়েছি।
তিনি বলেন, এ বিজয়কে আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে হবে। এ বিজয়কে একটি গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অবশ্যই আমি যে কথাটি বললাম—আজকের নববর্ষের জাতির আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে অতিদ্রুত ভোটাধিকার ফিরে পাওয়া।
রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ভোটাধিকারকে কেন সংস্কারের সঙ্গে এক করে দেয়া হচ্ছে? পৃথিবীর কোথাও তো এটা দেখা হয়নি। গণতন্ত্র মানেই সংস্কার। গণতন্ত্র মানে একটা নদীর প্রবল স্রোতের মতো একটা পদ্ধতি, একটি ধারাবাহিকতা। যে নদীর পানি যত খরস্রোতা, সে নদীর পানি তত স্বচ্ছ। কারণ সেখানে কোনো ধরনের আবদ্ধতা তৈরি হয় না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, বিগত ১৫ থেকে ১৬ বছর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি বিদেশি সংস্কৃতির উপাদানগুলো আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে কত পরিকল্পিত ও সূক্ষ্মভাবে তারা যে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে যে সমস্ত মুখোশ ব্যবহার করত, যে প্রতিকৃতিগুলো তারা ব্যবহার করত—সেখানে পরিকল্পিতভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিকৃতভাবে চিহ্নিত করে সেটা নিয়ে তারা মঙ্গল শোভাযাত্রা করেছে।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক দেশে প্রত্যেকের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত থাকতে হবে। সেখানে পরিকল্পিতভাবে দাড়িওয়ালা, টুপিওয়ালাদেরকে বিকৃত করা হতো, কেন? সব দাড়িওয়ালা টুপিওয়ালারা তো স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতা করেনি। দেশের প্রত্যেকটি মানুষ একটি পর্যায়ে বুঝতে পেরেছে আমরা একটি পরিকল্পিত আগ্রাসী শক্তির সাংস্কৃতিক আধিপত্যের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি।
রিজভী বলেন, ৫ আগস্টের আন্দোলনের যে সফলতা, এ যে দুনিয়া কাঁপানো যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে শুধু একটি রাজনৈতিক দল বা ফ্যাসিস্টের পতন নয়—এটা ছিল আমাদের পদলিত করে রাখার যে সাংস্কৃতিক অর্থনৈতিক আধিপত্যবাদী চক্রান্ত, সেটার বিরুদ্ধেও কিন্তু এই লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়া। শুধু হাসিনার পতন নয়, আমরা সমস্ত দিক থেকে বিজয়ী হয়েছি—এটার মধ্য দিয়ে।
এদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আউয়াল, রাজু আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।