
ফাইল ছবি
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, তরুণদের ৫ থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত বারবার বলেছি, ধীরে ধীরে তোমরা একটা বিপজ্জনক জায়গায় চলে গেছ। তোমরা যে রাজনীতির মডেল আমাদের দিচ্ছ, এটা লুটেরাদের মডেল। নির্বাচনের মডেল দ্বারা তোমরা কিছু করতে পারবা না।
তিনি বলেন, এ নির্বাচনের মডেল দ্বারা আমরা গণ-অভ্যুত্থান করিনি। গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে তরুণদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। এখন এনসিপি এসেছে, তারা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো একই। ওদের রাজনৈতিক দল ওদের জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকার বিএমএ ভবনের শহীদ ডা. মিলন হলে সম্মিলিত বাংলাদেশ পরিষদ আয়োজিত ‘কেমন দেশ চাই’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সরকার প্রধানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা শতভাগ সমর্থন করি। তিনি কিন্তু জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, আমাদের রক্ত দিয়ে নির্বাচিত। তাহলে তার কিন্তু জনগণের প্রতি অঙ্গীকারের কথা ছিল। কিন্তু তিনি কথা বলছেন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। জনগণের সঙ্গে তিনি কোথায় কথা বলছেন? তিনি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন না। আমি তো দেখিনি তিনি জনসভায় জনগণের কাছে গেছেন বা তার লোকজনদের বলছেন, যাও তোমরা আগে গ্রামে যাও, উপজেলায় যাও, জেলায় যাও কিংবা ডিসিকে বলছেন, যাও তোমরা জনগণের সঙ্গে কথা বলো। জনগণের অভিপ্রায় কী সেটা জানো।
রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতন্ত্র নিয়ে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে নির্বাচন নেই, কাউন্সিল নেই। এ যে ব্যাপারগুলো রয়ে গেছে, তরুণরা এ ব্যাপারটা খেয়াল করছে না। তাই আমি তরুণদের ব্যাপারে অসম্ভব রকম চিন্তিত। আমরা এ সংবিধানের ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়েছি আমাদের। এটা করার পরে আমরা কথা বলছি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে, যারা নিজেদের দাবি করছে রাজনৈতিক দল হিসেবে, কিন্তু তারা রাজনৈতিক দল কি না—এ বিচার আমরা করছি না। তারা যদি নতুন গঠনতন্ত্র প্রণয়ন না করে, তাহলে আপনি কী করে ঠিক করবেন কে রাজনৈতিক দল আর কে রাজনৈতিক দল নয়? এ রাজনৈতিক দলগুলোতে লুটেরা মাফিয়াদের প্রতিনিধি আছে।
আরও পড়ুন<<>> নিবন্ধন ছাড়াই রাজপথে জামায়াত, আ.লীগ যাচ্ছে ইতিহাসে!
ফরহাদ মজহার বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে যারা ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের, তারা কিন্তু জনগণের প্রতিনিধিত্ব করত। এনসিপি কিন্তু জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে না, এটা মনে রাখতে হবে। আমি যখন একটা দল মানি, তাহলে আমি সেই দলকে রিপ্রেজেন্ট করি। তোমাদের কমপিট করতে হবে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে।
আরও পড়ুন<<>> নির্বাচনের আগে বিচার-সংস্কার দৃশ্যমান করতে হবে: এনসিপি
তিনি বলেন, অভিপ্রায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যদি বাংলাদেশের এ বিদ্যমান সংবিধান পড়েন, দেখবেন সেখানে পরিষ্কার লেখা আছে, জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তি, এটাকে বলা হয় গঠনতন্ত্র। আমি কয়েক দিন ধরে বলছি, নির্বাচন দ্বারা গণতন্ত্র হয় না। অনেক রাজনৈতিক দল আমাকে বলবে, আপনি তো নির্বাচন চান না। আমি বলব, অবশ্যই নির্বাচন চাই। কিন্তু রাষ্ট্র যখন গঠিত হয়েছে, এটা তো নির্বাচনের দ্বারা হয়নি। এটা হয়েছে অভ্যুত্থান দ্বারা, বিপ্লব দ্বারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত বাংলাদেশ পরিষদের সভাপতি ড. মো. আমিরুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনাবিদ খন্দকার নিয়াজ রহমান। এতে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, উমামা ফাতেমা, তাসনিম আফরোজ ইমি প্রমুখ।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।