Apan Desh | আপন দেশ

স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় জামায়াত: ডা. তাহের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:৫১, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৪:৪৭, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় জামায়াত: ডা. তাহের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জামায়াতে ইসলামী

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশে একটি স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, বাংলাদেশে স্বচ্ছ গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় জামায়াত। আমরা এমন নির্বাচন চাই, যেটিকে দেশের মানুষ, সারাবিশ্ব নির্বাচন বলবে। আজকে আমাদের বড় ক্রাইসিসের কারণ গত তিন টার্ম যে নির্বাচন হয়েছে তা কোনো নির্বাচন ছিল না। নির্বাচন ছাড়া যাতে ক্ষমতায় থাকা যায় তার জন্য যা যা করার তাই করা হয়েছিল। জবাবদিহিতা ছিল না। তার পরিণতি তারা আমরা সমগ্র জাতি ভোগ করছি। আমরা এটার পুনরাবৃত্তি চাই না।

ডা. তাহের বলেন, যেখানে যেখানে নতুন কিছু সংযোজন বা বিয়োজনের প্রয়োজন আছে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর, সেখানে আমরা ব্যক্তি, দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি বা স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে চাই না, দেবও না। এর ঊর্ধ্বে থেকে দেশ জাতি ও মানুষের কল্যাণের জন্য যেটা প্রয়োজন জামায়াতে ইসলামী সেই কাজে সংস্কারে, পরিবর্তনে পরিপূর্ণ একমত পোষণ করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কতিপয় ব্যাপারে খুবই দৃঢ় ও অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রথমত হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। এজন্য আমরা কোনো রাষ্ট্রের রক্তচক্ষুকে ভয় করি না। স্বাধীনতার প্রশ্নে আমরা কারও হস্তক্ষেপ স্বীকার করি না। দ্বিতীয়ত, ক্রেডিবল ও সাসটেইনেবল গণতন্ত্রের জন্য জামায়াতে ইসলামী অঙ্গীকারবদ্ধ। 

ডা. তাহের বলেন, আমরা শুরু রাষ্ট্রের ভেতরে নয়, দলের ভেতরেও আমরা এই গণতান্ত্রিক চর্চা করি। আমাদের দলীয় নির্বাচন সময় মতো হয়। ক্যাম্পেইন ছাড়া, প্রার্থী ছাড়া, প্যানেল ছাড়া অপেন ব্যালটে আমাদের দলীয় নির্বাচন হয়। আমরা বলি এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য যে, নো ক্যাম্পেইন, নো ক্যান্ডিডেট, নো প্যানেল। এ ধরনের গণতান্ত্রিক নির্বাচনের চর্চা আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি।

জামায়াতের এ শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চায় জামায়াত। আমরা মনে করি বাংলাদেশের বর্তমান দুরাবস্থার পেছনে বড় দায় এ দুর্নীতি। একজন মানুষ যদি দুর্নীতিবাজ না হয়, দুর্নীতি না করে তাহলেতো কোনো নৈরাজ্য হওয়ার সুযোগ নেই। ভোট ছাড়া নির্বাচন করা বড় করাপশন, পরিশ্রম ছাড়া টাকা আয় বড় করাপশন, দুর্নীতির নামে উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা ভোগ করা বড় করাপশন। যে তথ্য এসেছে যে, ২৩০/২৩৫ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অর্থ একজন বা দুজন ব্যক্তিই পাচার করে নিয়ে গেছে। তাহলে অন্যরা কি করেছে? এ অর্থ যদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বাসস্থান ও উন্নয়ন, যাতায়াতের জন্য বরাদ্দ বা খরচা করা হতো তাহলে বাংলাদেশ এ পর্যায়ে থাকতো না। আমরা খুব করে চাই, সিরিয়াস ডিমান্ড-আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহির বাংলাদেশ।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, আমরা উন্নত শিক্ষা চাই যেখানে থাকবে নৈতিকতার শিক্ষা। দেশের জন্য, জাতির স্বার্থে মোরালবেইজড জবাবদিহিতা চাই। জবাবদিহিতা, নৈতিকতার সমস্যা বড় সমস্যা। আমরা নৈতিকতাসম্পন্ন উন্নত শিক্ষার আলোকিত সমাজ-রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে চায়। সে আলোকে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ ও কাজ করছি।

তিনি বলেন, কনস্ট্রাকটিভ, পজিটিভ ও প্রাকটিক্যাল রিয়েলিস্টিক সংস্কারের জন্য জামায়াতে ইসলামী পূর্ণ সহযোগিতা করবে বলে ঐক্যমত্য কমিশনকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বৈঠকে জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন– জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়