ফাইল ছবি
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের বেশ কিছু নেতাকে নজরদারিতে রেখেছে বিএনপি। এর মধ্যে গত সোমবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সাংবাদিক ও বিএনপি নেতা শওকত মাহমুদের প্রসঙ্গে বিস্তর আলোচনা হয়। তাতে সিদ্ধান্ত আসে শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের। তবে কোনো কোনো সদস্য এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে জোরালো মত দেয়নি -বৈঠক সূত্র জানিয়েছে। তাকে বহিষ্কারের পর অনেকের মধ্যেই শঙ্কা কাজ করছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিএনপির সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থি কাজে লিপ্ত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন<> বিএনপি কার দিকে তাকিয়ে?
বিএনপির ৫ম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে মনোনিত হন শওকত মাহমুদ। দলের ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনিত হন।
দলীয় সূত্রমতে, এর আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শওকত মাহমুদকে দু’দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তিনি নোটিশের জবাবও দিয়েছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে ‘ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি’ নামে নাগরিক অধিকার বিষয়ক একটি সংগঠন করা হয়। এই কমিটির আহ্বায়ক কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার, সদস্যসচিব সাংবাদিক শওকত মাহমুদ। যদিও সংগঠনটি ১০ বছরের পুরনো।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নৈশভোজ করায়। সেখানে সংগঠনের সদস্যসচিব শওকত মাহমুদ ইনসাফ কায়েম কমিটির পক্ষে প্রস্তাব তুলে ধরে বলেন, অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকারকে নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে অভিমত দিয়েছেন তাঁরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলাম, বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ-অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, লেবারপার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ মজিদ, অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ইউসুফ হায়দার চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিন আলী ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, হাসান হাফিজ, ইলিয়াস খান, দিগন্ত মিডিয়ার চেয়ারম্যান শিব্বির মাহমুদ প্রমুখ।
দলীয় সূত্রমতে, ওইদিন বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী ও দলের বঞ্চিত নেতাদের অনেকেই অংশগ্রহণের কথা ছিল। তবে দলের তরফ থেকে তাদেরকে ওই অনুষ্ঠানে যোগদান না করতে অনুরোধ জানানো হয়। তাদের প্রতিও নজর রাখছে বিএনপি।
এদিকে খ্যাতনামা সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কারের খবরটি সাংবাদিক মহলে ছড়িয়ে পড়লে তাতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সাংবাদিক এ প্রতিবেদকের কাছে বলেন, বহিষ্কারই শেষ কথা নয়। শওকত মাহমুদ প্রতি বছর জন্মাবে না। বরং ত্রুটি সংশোধনের সুযোগ দিলে বিএনপির লাভ বৈ ক্ষতি হতো না। জাতীয় প্রেস ক্লাবের নেতৃত্ব বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের হাতে থাকার নেপথ্যে শওকত মাহমুদের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে তাদের বিশ্লেষণ।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।