ছবি: আপন দেশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একমন ধানে এক কেজি মরিচ কিনতে হচ্ছে। কথা খুব পরিষ্কার, শান্তিপূর্ণভাবেই বলছি- আপনাকে আর প্রয়োজন নাই। আপনি যতদিন থাকবেন ততই দেশের ক্ষতি হবে।
সোমবার ( ৩ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব এক সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
'ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ খালিদ হাসান জ্যাকীসহ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে' এ বিক্ষোভ মিছিল হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, মরিচের অনেক দাম বেড়েছে। একহাজার টাকা। মরিচেরতো খুব ঝাঁজ থাকে। ওই ঝাঁজ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ্য করতে পারছেন না। আজকে চাল, ডাল তেল, লবণসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। একমন ধান বিক্রি করে এককেজি মরিচ কিনতে হচ্ছে। আর উনি ভয় পেয়েছেন, এই অবৈধ সরকার নিয়ে উনি প্রধানমন্ত্রীত্ব আর কতদিন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন <> কাঁচা মরিচের দাম বাড়িয়েছেন সন্ধানী ব্যবসায়ীরা: বাণিজ্যমন্ত্রী
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে মানুষ বেঁচে থাকার অধিকার চায়, নিজের নিরাপত্তা চায়, অধিকার ফিরে পেতে চায়। সরকার গত ১৫ বছরে আমাদের ৪০ লক্ষ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ৬ শ’ মানুষকে গুম করেছে। এখন প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, কথা খুব পরিষ্কার, অবিলম্বে পদত্যাগ করেন। কারণ যত দিন যাবে ততই দেশ ও মানুষের ক্ষতি হবে। ততই গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সংসদ বিলুপ্ত করেন। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ সরকার যে নামেই বলেন না কেনো, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের হাতে ক্ষমতা দেন- তারা একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন করবে। এটাই একমাত্র পথ আর কোন পথ নাই। তা না হলে তখন পালানোর পথও খুঁজে পাবেন না। কারণ সময় শেষ হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার সাংবিধানিকভাবে অবৈধ সরকার। এদের দুর্নীতির কারণে মানুষের পকেট আজ খালি। এদের দেয়া বাজেটে বড়লোক আর ধনী হচ্ছে, আর গরীব আরো গরীব হচ্ছে। এই আওয়ামী লীগের অধীনে কোনদিন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, সম্ভবও না।
প্রধামন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই বলছি- আপনাকে আর প্রয়োজন নাই। গত ১৪-১৫ বছর ধরে আপনার এই দল নিয়ে এদেশকে যেভাবে শোষণ করছেন, বাংলাদেশের সম্পদকে লুট, পাচার করেছেন, রাজনৈতিক কর্মীদেরকে হত্যা করেছেন, মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আটক করে রেখেছেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছেন। তাতে কি আন্দোলন ঠেকানো যাচ্ছে?
সমাবেশ শেষে বিকেল সোয়া ৫টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শান্তিনগর হয়ে আবারও দলের অফিসের সম্মুখীনে এসে শেষ হয়।
আরও পড়ুন<> বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে জামায়াত
বিকেল ৩টা থেকে বিক্ষোভ মিছিল অংশ নিতে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মিছিলে দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা আসেন দলে দলে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ডখণ্ড মিছিল নিয়ে আসেন।
ব্যানারসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মীদের মিছিলে উপস্থিত হতে দেখা গেছে। এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ এবং সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তুলেন তারা।
এদিকে বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। কার্যালয়ের আশপাশে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনসমাগম ঘটিয়ে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সার্বিক প্রস্তুতিও নেয়া হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস মৃধা, আ ন ম সাইফুল ইসলামসহ বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।