ছবি : আপন দেশ
গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেছেন, ইসরাইলের নাগরিক ‘মোসাদ’ এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর। গণমাধ্যমে স্বীকার না করলেও দলটির একাধিক অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তবে কী বিষয়ে ইসরায়েলি নাগরিকের সঙ্গে নুর বৈঠক করেছেন তা দলকে জানাননি।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, গত ১৮ জুন দলের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে ড. রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি সভা হয়। সেখানে নুরুল হক নুর দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে ইনসাফ কায়েম কমিটির একটি সভায় অংশ নেয়া ও তাদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ তোলেন। এর জবাবে ড. রেজা কিবরিয়া ইনসাফ বাস্তবায়ন কমিটির সভায় যাওয়ার ব্যাখ্যা দেন।
তবে, আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন এবং প্রমাণ থাকলে তা হাজির করতে বলেন। একই সময়ে তিনি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে কয়েকটি সুস্পষ্ট অভিযোগ আনেন। যার মধ্যে-ইসরায়েলি নাগরিক ও কথিত মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আলোচিত বৈঠকের সত্যতা সংক্রান্ত কিছু তথ্য, আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে দলীয় তহবিল নিজে গ্রহণ এবং হিসেব না দেয়া এবং শিপন বসুসহ বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহভাজন লোকদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ তোলেন।
ফারুক হাসান বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে নুরুল হক নুর কাতারে ইসরাইলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে কোনো রকম আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিষয়ে অস্বীকার করেন। বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও এ বৈঠকের আলোচ্য সূচি কী ছিল, তা তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের অবগত করতে অস্বীকৃতি জানান।
এমতাবস্থায় নুরুল হক নুর দলের বয়বৃদ্ধ কয়েকজন সদস্যকে ব্যক্তিগত আক্রমণমূলক ও অশালীন ভাষা প্রয়োগ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় ড. রেজা কিবরিয়া সভাস্থল ত্যাগ করেন এবং সভা মুলতবি হয়।
তিনি আরও বলেন, ওই রাতেই আহ্বায়ক একটি বিজ্ঞাপ্তিতে জানান যে তিনি জরুরি প্রয়োজনে দেশের বাইরে যাচ্ছেন এবং তিনি দেশে ফিরে পুনরায় সভা ডেকে এ বিষয়ে সমাধান করবেন। কিন্তু ১৯ জুন নুরুল হক নুর দফতর সমন্বয়কের মাধ্যমে নোটিশ দিয়ে আরেকটি সভা ডাকেন, যা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বৈধ নয়। উক্ত সভায় নুরুল হক নূর নিজেই সভাপতিত্ব করেন এবং ওই সভার শুরুতে সূচনা বক্তব্যে তিনি আবারো মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে এ বিষয়ে তিনি সদস্যদের আলোচনার সুযোগ না দিয়ে আহ্বায়ককের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো উত্থাপন করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তাব তোলেন।
এসময় অনেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সময় নিয়ে, ধীরে-সুস্থে অগ্রসর হওয়ার পরামর্শ দেন। রেজা কিবরিয়াকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়নি বলেও জানান তিনি। নিজেদের প্রকৃত গণঅধিকার পরিষদ দাবি করে তিনটি দাবি জানান তিনি। যার মধ্যে রয়েছে-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, খালেদা জিয়া, জামায়াত নেতা শফিকুর রহমানের মুক্তি ও পাসপোর্ট এক্সেপ্ট ইসরাইল লেখাটি পুনবহাল করা।
আপন দেশ/আরএ
মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।