Apan Desh | আপন দেশ

সাঈদীর মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলসহ বিভিন্ন মহলের শোক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ১৫ আগস্ট ২০২৩

সাঈদীর মৃত্যুতে মির্জা ফখরুলসহ বিভিন্ন মহলের শোক

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী

ঢাকা: জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।  

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে এক শোকবার্তায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কারাবন্দি অবস্থায় আল্লামা মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যু গভীর শোকাবহ।

এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী পণ্ডিত বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন ইসলামের আলোকিত পথে। ক্ষমতাসীন শক্তি তাকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করতে পারেনি। তিনি তার নিজস্ব মতাদর্শে ছিলেন অকম্প অবিচল। জাতীয় সংসদেও তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল ও তেজস্বী বক্তা।

শোকবার্তায় তিনি আরও বলেন, মরহুম দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ছিলেন মৃদুভাষী ও সৌজন্যবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী। গুরুতর অসুস্থ মরহুম দেলোয়ার হোসেন সাঈদী গত ১৩ বছর বন্দী অবস্থায় থাকলেও তাকে কোনো সুচিকিৎসা দেওয়া হয়নি।  

আমি তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকাবহ পরিবার-পরিজন, গুণগ্রাহী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মির্জা ফখরুল।  

জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ইসলামী আন্দোলন ও নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। এছাড়াও শোক জানিয়েছে ১২ দলীয় জোট।

মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হাদীসে একজন আলেমের মৃত্যুকে গোটা পৃথিবীর মৃত্যু আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তাই আমি মনে করি, সাঈদী সাহেবের মৃত্যুতে পৃথিবী অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষ করে কুরআনের আবেদনকে জনমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং রাষ্ট্র ও সমাজে ইসলামের রাজনৈতিক উত্থানকে সমুন্নত করতে তিনি অসামান্য অবদান রেখে গেছেন।

চরমোনাই পীর তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষী ও অনুসারীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

গণঅধিকার পরিষদ: মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।

এক বিবৃতিতে তারা বলেন, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একজন আর্ন্তজাতিক মুফাসসিরে কুরআন। যিনি ইসলামের খেদমতের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। তার নিজ এলাকা পিরোজপুরের হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সব ধর্মের মানুষ তাকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি বানিয়ে জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে পাঠিয়েছেন। কাজের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে অসংখ্য মানুষের হৃদয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন। তার মৃত্যুতে দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এছাড়াও শোক জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট অলি আহমদ।

শোকবার্তায় অলি বলেন, সাঈদী সাহেবের মৃত্যুতে জাতীয় রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কুরআনের বাণী সমগ্র বিশ্বে পৌঁছে দিতে তিনি অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতারা বলেছেন, দেশের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মানুষদের মতো সমমনা জোটও দুঃখ ভারাক্রান্ত এবং বেদনাহত।

মঙ্গলবার এক শোকবার্তায় জোটের নেতারা বলেন, সাঈদীর মৃত্যু সংবাদে পরিবারের সদস্যসহ বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের নিকট শোকাতুর পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

শোক বার্তায় স্বাক্ষর করেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নুরুল আমিন বেপারী, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, বাংলাদেশ বিকল্প ধারার নুরুল আমিন বেপারী, মাইনোরিটি পার্টির সুকৃতি মন্ডল, সাম্যবাদী দলের কমরেড নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী। রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে কাশিমপুর কারাগারে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা হাসপাতালে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকায় পাঠায় কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষ। এরপর রোববার রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে বিএসএমএমইউয়ের ব্লক ডি কার্ডিয়াক সেন্টারে ভর্তি করানো হয়।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর হার্টে পাঁচটি রিং পরানো হয়েছিল। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন যাবত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগে ভুগছিলেন। এ ছাড়াও তিনি পায়ের গিড়ায় ব্যথাসহ বার্ধক্যজনিত নানান জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অপরের সাহায্য ছাড়া তিনি একা একা হাঁটা-চলা ও উঠা-বসা কোনোটাই করতে পারতেন না।

আপন দেশ/এমএমজেড

মন্তব্য করুন ।। খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত,আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়