ছবি: সংগৃহীত
পবিত্র মাহে রমজান। মুসলিম বিশ্ব অপেক্ষায় পশ্চিম দিগন্তে উদিত হওয়া একটি বাঁকা চাঁদের। নতুন চাঁদ উদয় হলে শুরু হবে রমজান মাস। আল্লাহ তা’য়ালা ইসলামি বিধি-বিধানকে চাঁদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তারা তোমার নিকট নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে? বলে দাও এটি মানুষের জন্য সময় নির্ধারণ এবং হজের সময় ঠিক করার মাধ্যম।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৯)
নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে ঈদ কর। কিন্তু যদি আকাশে মেঘ থাকে তাহলে ৩০ দিন পূর্ণ কর।’ (সহিহ বুখারি: ১৯০০)
রাসূল (সা.) নতুন চাঁদ দেখার চমৎকার একটি দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন। যেকোনো মাসের নতুন চাঁদ, এমনকি রোজা ও ঈদের চাঁদ দেখার দোয়াও এটা। হজরত মোহাম্মদ (সা.) নতুন চাঁদ দেখলে দোয়াটি পড়তেন। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত প্রতি মাসে চাঁদ দেখার চেষ্টা করা।
হযরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (সা.) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন এ দোয়া পড়তেন-
اللَّهُمَّ أهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالأمْنِ وَالإيمانِ، وَالسَّلاَمَةِ وَالإسْلاَمِ، رَبِّي وَرَبُّكَ اللهُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমানি, ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ।
অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি ওই চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত করো নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে। (হে চাঁদ) আমার ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ। হেদায়াত ও কল্যাণের চাঁদ। (সুনানে তিরমিজি: ১২২৮)
নবী করিম (সা.) চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে পুরো মাসের জন্য কল্যাণের দোয়া করেছেন। দোয়ার প্রতিটি শব্দ দ্বারা শান্তি ও নিরাপত্তার আবেদন করা হয়েছে। ‘আহিল্লাহু’ শব্দের অর্থ হচ্ছে উদিত করুন। অর্থাৎ এই চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সুরক্ষা ও ঈমান দিন। ‘বিল আমনি’ অর্থ বিভিন্ন ধরণের মসিবত থেকে আমাদের নিরাপদে রাখুন।
আরও পড়ুন>> রমজান মাসে কয়েকটি আমল
‘ওয়াল ঈমানি’ অর্থ ঈমানের ওপর সুদৃঢ় রাখুন। ‘ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি’ অর্থ দ্বীন ও দুনিয়ার সব ধরণের ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন। ‘রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ’ শব্দ দ্বারা নতুন চাঁদকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, আমি তোমাকে দেখে দোয়া পড়েছি কিন্তু তোমার স্রষ্টা ও আমার স্রষ্টা এক ও অভিন্ন।
ছোট্ট একটি দোয়ার হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহ তা’য়ালার কাছে অনেক বিছু প্রার্থনা করেছেন। নবী করিম (সা.) এ দোয়া শুধুমাত্র রমজানের চাঁদ দেখে পড়েছেন- এমন নয়, বরং প্রত্যেক মাসের নতুন চাঁদ দেখে এ দোয়া পড়তেন।
আমরা দুনিয়ার বিপদ-আপদ থেকে বাঁচার জন্য, নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে থাকি। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি মাসের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য দোয়া করতেন।
এজন্য প্রত্যেক মুমিনের উচিত, প্রতি মাসের শুরুতে নিজেকে ভালো কাজের জন্য প্রস্তুত করা এবং চাঁদ দেখা কমিটির দিকে না তাকিয়ে নিজেই এ সওয়াবের অংশীদার হওয়া। চাঁদ দেখার সুন্নতের ওপর আমল করা।
আপন দেশ/এসএমএ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।