Apan Desh | আপন দেশ

জুমার দিনের বিশেষ আমল

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:২৭, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

জুমার দিনের বিশেষ আমল

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়তে স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নির্দেশ দেন। আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) স্বয়ং এবং আমার ফেরেস্তাগণ নবী করিম (সা.)-এর উপর দরুদ পাঠ পূর্বক সালাম প্রেরণ করিয়া থাকি; হে মুমিনগণ! তোমরাও তাহার উপর দরুদ পাঠ কর এবং সালাম প্রেরণ কর’। (সূরা: আহযাব, আয়াত: ৫৬)

উল্লেখ্য, মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা ও তার প্রিয় হাবিব রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভালোবাসায় সিক্ত হওয়ার জন্য দরুদ শরিফ বারবার পাঠ একটি উত্তম মাধ্যম। এবং অন্তর পরিশুদ্ধির জন্য অন্যান্য ইবাদতের মতো দরুদ শরিফ পাঠও একটি উত্তম আমল।

রাসূল (সা.) এর প্রতি মুহব্বত নিয়ে দরুদ পাঠ করা উত্তম ইবাদত। রাসূল (সা.) নিজেও দরুদ পাঠ করার জন্য তার উম্মতদের বলেছেন, রাসূল (সা.) দরুদ পাঠের ফজিলত ও মাহাত্ন্য উম্মতদের জানিয়ে দিয়েছেন।

মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পড়ে, আল্লাহ তাআলা তার উপর দশবার রহমত বর্ষণ করেন’। (সহিহ মুসলিম)

দরুদ শরিফ পাঠ করলে সহজে দোয়া কবুল হয়ে যায়

ওমর বিন খাত্তাব (রা.) বলেন, নিশ্চয় বান্দার দোয়া-মোনাজাত আসমান ও জমিনের মাঝখানে ঝুলানো থাকে, তার কোনো কিছু আল্লাহপাকের নিকট পৌঁছে না যতক্ষণ না বান্দা তার নবীর প্রতি দরুদ পাঠ করবে। (তিরমিজী শরিফ)

জুমার দিনে দরুদ পাঠের ফজিলত

শুক্রবার তথা জুমার দিন দরুদ পাঠের রয়েছে আরো বেশি ফজিলত। নিচে এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদিস তুলে ধরা হলো।

আওস ইবনে আউস (রা.) থেকে বর্ণিত, একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই জুমার দিন শ্রেষ্ঠতম দিনগুলোর অন্যতম। ... সুতরাং সেদিন তোমরা আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পড়। নিশ্চয় তোমাদের  দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। ... (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৬১৬২; সহিহ ইবনে হিববান, হাদিস : ৯১০, হাদিসটি সহিহ)

অন্য হাদিসে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা জুমার রাত ও জুমার দিনে আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ কর। যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা তার উপর ১০ বার রহমত নাজিল করেন’। (আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৩/২৪৯; ফাযাইলুল আওকাত, বায়হাকী ২৭৭; আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী ৩৭৯, এর সনদ হাসান পর্যায়ের)

অন্য আরেক হাদিসে আছে, ‘প্রত্যেক জুমার দিনে তোমরা আমার উপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ কর। কারণ আমার উম্মতের দরুদ প্রতি জুমার দিন আমার কাছে পেশ করা হয়। আর তাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি আমার উপর সবচে বেশি দরুদ পাঠ করে সে অন্যদের তুলায় আমার বেশি নিকটবর্তী’। (সুনানে বায়হাকী ৩/২৪৯, এর সনদটি হাসান)

নামাজের মধ্যে দরুদে ইব্রাহিম পাঠ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। দরুদে ইব্রাহিম বেশ ফজিলতপূর্ণ। ৫ ওয়াক্ত নামাজে এ দরুদ পড়া হয়। নামাজ ছাড়াও অন্যান্য যেকোনো সময় এই দরুদ শরিফ পাঠে রয়েছে মুস্তাহাব সাওয়াব।

দরুদে ইব্রাহিমের আরবি, অর্থ, উচ্চারণ

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌاللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيد

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা সাল্লেআ’লা মোহাম্মাদাও ও আ’লা আলি মোহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আ’লা ইব্রাহিমা ও আ’লা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মোহাম্মাদেও ও আ’লা আলি মোহাম্মাদ, কামা বারকতা আ’লা ইব্রাহিমা ও আ’লা আলি ইব্রাহিম, ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) এবং তার বংশধরদের উপর এই রূপ রহমত নাজিল করো, যেমনটি করেছিলে ইব্রাহিম ও তার বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ (সা.) এবং তার বংশধরদের উপর বরকত নাজিল করো, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহিম ও তার বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়’।

আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুসলমানকে নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ পাঠের তওফিক দান করুন। আমিন।

আপন দেশ/এসএমএ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়