ছবি: সংগৃহীত
প্রায় ২০ লক্ষ হজ্জযাত্রী হজ্জের মহান রুক্ন আদায় করার জন্য পবিত্র আরাফাত ময়দানে অবস্থান কছেন। সৌদি হজ্জ ও ওমরা মন্ত্রণালয় আল্লাহর মেহমানদেরকে পবিত্র আরাফাত ময়দানের জন্য তীর্থযাত্রীদের যথাযথ প্রস্তুতি নেয়ার আহবান করেছে। সহজ ও সুষ্ঠুভাবে হজ পালন করার জন্য গ্রুপ ভিত্তিক সময়সূচি যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য জোর তাগিদ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
হজযাত্রীদের হজব্যবস্থাপনার নির্দেশনাবলি ও গ্রুপ লিডারের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রক্ষা করার পরামর্শ দিতে গিয়ে মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পেইজে বিভিন্ন প্রচার পত্রে ঘোষণা দিয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, হে আল্লাহর মেহমান। যাতায়াতের সেবা থেকে বঞ্চিত না হওয়ার জন্য গ্রুপ ভিত্তিক সময়সূচী জানতে এবং নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হতে সর্বদা সচেষ্ট থাকুন। জটলা ও ভীড়ের স্থান থেকে দূরে থাকুন। নির্ধারিত স্থানে প্রবেশের একমাত্র ডকুমেন্ট হিসেবে বিবেচিত, প্রত্যেক নিয়মিত হজ্জযাত্রীর বিশেষ নুসুক কার্ড সব সময় বহন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে হজ্জ ও ওমরা মন্ত্রণালয়। এ কার্ড ব্যতীত কাউকে আরাফাতসহ অন্যান্য মাশায়ের মুকাদ্দাসায় (মিনা-মুযদালিফা) প্রবেশের অনুমতি দেয়া হবে না।
আরও পড়ুন>> হজযাত্রীদের সচেতনতায় সৌদির আন্তর্জাতিক প্রচারণা
নির্দেশনায় উল্লেখ, হজযাত্রীদের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি, স্মার্ট অ্যাপসের ব্যবহার, যার মধ্য দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিত ও নিয়মভংগকারী হজ্জযাত্রীদের মাঝে পার্থক্য নিরূপণ করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি আরও বিভিন্ন নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যগত কার্যক্রম, যা সৌদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথম বারের মত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আল্লাহর মেহমানদেরকে নিরাপত্তা প্রদান করতে এবং নুসুক কার্ড বহন করছেনা এমন নিয়মভঙ্গকারীদের গ্রেফতার করতে হজ্জ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের জোরদার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। নিয়মিত হজ্জযাত্রীদের মক্কা মুকাররমা ও মাশায়ের মোকাদ্দাসায় যাতায়াত সহজ, তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক হজ্জযাত্রীদের অবস্থান নিশ্চিত করা সহজ হওয়ার জন্য সৌদি হজ্জ ও ওমরা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নুসুক কার্ড চালু করেছে।
হজ ১৪৪৫ হিজরী মৌসুমে আল্লাহর মেহমানদের বরণ করে নেয়ার জন্য মাশায়ের মোকাদ্দাসার স্থান সমূহের প্রস্তুতি এবং যাতায়াতের জন্য মাশায়ের ট্রেনের প্রস্তুতির কথা নিশ্চিত করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। আশা করা যাচ্ছে জিলহজ মাসের সাত তারিখ থেকে সাত কার্য দিবসে ২ হাজারের বেশি ট্রিপে ২০ লক্ষাধিক যাত্রী আনা-নেয়া করতে পারবে। যেমনিভাবে আরাফাতের উন্নত তাঁবুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আরাফাত ময়দানে ছায়ার ব্যবস্থা ও গরমের তাপমাত্রা কমানোর জন্য সবুজায়নের আয়তন বৃদ্ধি করা হয়েছে। বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের জন্য যাতায়াতের রাস্তা এবং গল্ফ কারের জন্য নির্ধারিত রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, আরাফাত বলতে একটি বিস্তৃত সমতল ভূমি, যাতে একটি পর্বত রয়েছে, যাকে জাবালুর রহমাহ নামে অভিহিত করা হয়, যার উচ্চতা ৩০ মিটার এবং ৯১টি সিঁড়ি পেরিয়ে তার সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছা যায়। তার মাঝে ৪ মিটার দৈর্ঘ্য একটি পিলার রয়েছে। আরাফাতকে বেষ্টন করে আছে সারি সারি পাহাড় আর “ওরানা” উপত্যকা। এটি মক্কা মুকাররামা এবং তায়েফের মাঝখানে মক্কার পূর্ব পাশে মক্কা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে, মিনা থেকে ১০ কিলোমিটার এবং মুযদালিফা থেকে ০৬ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। যার আয়তন ১০.৪ বর্গ কিলোমিটার।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ অনুযায়ী ‘তারউইয়ার’ দিন জিলহজ্জ মাসের ৮ তারিখ শুক্রবার সকাল থেকে হাজী সাহেবগণ মিনায় গমন শুরু করেছেন। মিনা মক্কা আল-মুকার্রামা এবং মুযদালিফার মাঝখানে মসজিদুল হারামের উত্তর পূর্বে ৭ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
আপন দেশ/এসএমএ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।