ছবি: সংগৃহীত
অযু করা একটি ধর্মীয় বিধান। এটি প্রতিদিনের নামাজের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ। যা মুসলমানদের দৈনিক পাঁচবার শুদ্ধি ও পবিত্রতা অর্জনে সহায়তা করে। ইসলামী হাদিস ও কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় অযুর গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানও অযুর মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার উপকারিতা তুলে ধরেছে।
ইসলামে অযুর গুরুত্ব
হাদিসে প্রমাণিত, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, 'পবিত্রতা হল ঈমানের অর্ধেক'- (সহিহ মুসলিম)। অযু শারীরিক পরিচ্ছন্নতা এবং পবিত্রতার প্রতীক। এটি গুনাহ মাফের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, 'যে ব্যক্তি সঠিকভাবে অযু করবে, তার সমস্ত ছোট গুনাহ অযুর পানির সঙ্গে ধুয়ে যাবে'- (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)।
কুরআনে সুরা আল-মায়েদা (৫:৬)-তে বলা হয়েছে, 'হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্য দাঁড়াও, তখন তোমাদের মুখমণ্ডল, হাতের কনুই পর্যন্ত ধোও। মাথা মাসহ করো ও পায়ের টাখনু পর্যন্ত ধোও।'
অযু করা শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় আচার নয়। এটি দৈনন্দিন জীবনের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতারও একটি মাধ্যম। ইসলামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। অযু তার প্রতিফলন।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের আলোকে অযুর উপকারিতা
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, অযু শুধুমাত্র আধ্যাত্মিক পবিত্রতা অর্জনেই নয়, শারীরিক সুস্থতার জন্যও উপকারী। নিম্নে অযুর কিছু বৈজ্ঞানিক উপকারিতা তুলে ধরা হলো:
ত্বকের পরিচ্ছন্নতা: প্রতিদিন অযুর মাধ্যমে মুখমণ্ডল, হাত ও পা ধোয়া হয়। যা ত্বকের ছিদ্রগুলিকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। এটি ব্রণ, ফুসকুড়ি ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধে কার্যকরী।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: হাত ধোয়ার অভ্যাস সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে, হাতের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। তাই বারবার হাত ধোয়া সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী।
রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি: অযু করার সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করার ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। যা হার্টের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
মানসিক শান্তি: অযু করার সময় পানির সংস্পর্শে মানসিক প্রশান্তি অর্জিত হয়। এটি শরীরের স্নায়ুকে শান্ত করে। যা স্ট্রেস ও উদ্বেগ কমাতে সহায়ক।
শ্বাস প্রশ্বাসের সুরক্ষা: নাক পরিষ্কার করা শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাগুলিকে কমায়। এটি সাইনাস ও অন্যান্য শ্বাসজনিত সমস্যাগুলি প্রতিরোধে সহায়ক।
চোখের স্বাস্থ্য: অযুর মাধ্যমে চোখে পানি দেয়া চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর। এটি চোখের ক্লান্তি কমিয়ে দিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
অযু ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ শুদ্ধি প্রক্রিয়া। যা নামাজের পূর্বে মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য। হাদিস ও কুরআনে এর গুরুত্ব বারবার উল্লেখিত হয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে, অযুর মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিক থেকেই উপকার পাওয়া যায়। এজন্য অযুকে শুধু ধর্মীয় নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস হিসেবেও গ্রহণ করা উচিত।
আপন দেশ/অর্পিতা
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।