ছবি: সংগৃহীত
হিজাজ ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত মাদইয়ান নামক শহরের এক সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। যারা আল্লাহর একত্ববাদ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে বেশ কিছু বদঅভ্যাস গড়ে উঠেছিল। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ওজন ও পরিমাপে কম দেয়া। তারা ডাকাতি, ছিনতাই ও লুটতরাজের মতো ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিল।
এ জাতিকে আল্লাহর পথে ফিরিয়ে আনার জন্য আল্লাহ তায়ালা নবী শুয়াইব (আ.)-কে প্রেরণ করেন। শুয়াইব (আ.) তাদের সতর্ক করে দেন এবং আল্লাহর একত্ববাদ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান। তিনি তাদের নির্দেশ দেন কারও হক নষ্ট না করতে এবং সঠিক ওজন ও পরিমাপ দিতে। আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শুয়াইব (আ.) বলেন, আল্লাহ তায়ালা তাদের সুখী, সমৃদ্ধ ও স্বচ্ছল করেছেন। তাদের উচিত আল্লাহর এ অনুগ্রহের কথা ভুলে না গিয়ে শিরক ও অত্যাচার থেকে ফিরে আসা।
তবে মাদইয়ানবাসী শুয়াইব (আ.)-এর কথা শোনেনি। বরং তারা তাকে উপহাস করে বলেছিল, তোমার ধর্মীয় অনুশাসন আমাদের পূর্বপুরুষের রীতিনীতি ও পুরাতন উপাসকদের পরিত্যাগ করতে বলছে! আমরা আমাদের নিজের সম্পদের মালিক হয়ে ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারব না—এ কেমন কথা?
শুয়াইব (আ.) তাদের আরও সতর্ক করে বলেন, তারা যদি এ পথে অব্যাহত থাকে, তাহলে তাদের ওপর নূহ, হুদ, সালেহ ও লূত (আ.)-এর জাতির মতোই আল্লাহর কঠোর শাস্তি নেমে আসবে। কিন্তু তারা তাতে কান দেয়নি এবং অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকে।
শুয়াইব (আ.) আল্লাহর নির্দেশে তার ঈমানদার অনুসারীদের নিয়ে সে শহর থেকে নিরাপদ স্থানে চলে যান। এরপর আল্লাহ তায়ালা জিবরাঈল (আ.)-এর মাধ্যমে তাদের ওপর এক ভয়ানক শাস্তি দেন। যা মুহূর্তের মধ্যেই তাদের ধ্বংস করে দেয়।
পবিত্র কোরআনের সূরা হুদ-এর ৮৪ থেকে ৯৪ নম্বর আয়াতে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করা হয়েছে। যা আমাদের জন্য এক চরম সতর্কবাণী হিসেবে বিবেচ্য।
মাদইয়ানবাসীর এ ধ্বংস থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত- বদঅভ্যাস ও শিরক থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর ন্যায়বিচারের পথে চলাই আমাদের মুক্তির পথ।
আপন দেশ/অর্পিতা
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।