স্ত্রীকে যে শব্দ বললে তালাক হয়ে যায়। ফাইল ছবি
তালাক আরবি শব্দ। এর অর্থ: বিচ্ছিন্ন করা, ত্যাগ করা ইত্যাদি। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় বিধিসম্মত বিয়ে দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন ছিন্ন হওয়ার নাম তালাক। মহান আল্লাহর কাছে সবচেয়ে অপছন্দের বৈধ বিষয় তালাক। ইসলামে তালাক দেয়া বৈধ হলেও অনুৎসাহিত করা হয়েছে।
যৌক্তিক কারণে তালাক দেয়া হলে এর কিছু নিয়মকানুন আছে। স্বামী যদি স্ত্রীকে রাগের মাথায় বলে তুমি চলে যাও, বাপের বাড়ি যাও, তুমি আমার উপর হারাম, আজ থেকে আমি তোমার স্বামী নই, তুমি আমার স্ত্রী নও, তোমার নিজের বিষয়গুলো নিজে দেখো। তোমাকে মুক্ত করে দিলাম।
তুমি ইদ্দত পালন করো। এ জাতীয় যেসব কথায় বিচ্ছিন্নতার প্রতি ইঙ্গিত করে এ শব্দগুলো তালাকের নিয়তে বললে তালাক হয়ে যাবে। আর সরাসরি ‘তালাক’ শব্দ নিয়ত ছাড়াও যদি বলে তালাক হয়ে যায়।
তুমি আজাদ, তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন ইত্যাদি শব্দ তালাক সংক্রান্ত কিনায়া বা ইঙ্গিতবহ শব্দ। তালাকের নিয়তে বা তালাক সংক্রান্ত আলোচনার সময় বললে এসব শব্দ দ্বারা তালাক পতিত হয়ে যাবে।
তালাকের নিয়ত ছাড়া এমনিতে বললে এর মাধ্যমে কোনো তালাক পতিত হবে না। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিয়ত। তালাকের নিয়ত করলেই এ ইঙ্গিতবহ শব্দগুলোর মাধ্যমে তালাক পতিত হবে।
তবে কোন এলাকায় যদি ‘তালাক’ শব্দের সমার্থক শব্দ হিসেবে ‘তুমি আজাদ, তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমন বাংলাদেশে ‘ডিভোর্স, ছেড়ে দিলাম’ শব্দগুলো তালাকের বিকল্প বা সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে, তাহলে সেটি ‘সরিহ’ তালাক তথা পরিষ্কার তালাক শব্দের অর্থেই ধরা হবে। ছেড়ে দিলাম বললে তালাকই বুঝাবে। তখন উক্ত এলাকায় উপর্যুক্ত শব্দাবলি তথা ‘তুমি আজাদ, তুমি স্বাধীন, তুমি মুক্ত’ ইত্যাদি ব্যবহার করলে তালাক হয়ে যাবে।
কিন্তু আমাদের দেশের অনেক স্থানেই ‘তুমি স্বাধীন, তুমি মুক্ত, তুমি আজাদ’ ইত্যাদি শব্দকে তালাকের সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। বরং এটি কোন কাজ বা দায়িত্ব বিষয়ে মুক্ত হিসেবেও ব্যবহার করে থাকে। তাই এটি বলার দ্বারাই তালাক হয়ে যাবে বলার সুযোগ নেই।
তালাক একটি স্পর্শকাতর বিষয়। রাগের মাথায় হোক বা রাগ ছাড়া দুষ্টুমির ছলে হোক। এসব শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়। তালাক মৃত্যুর মতো ভয়ংকর বিষয়। মৃত্যু হয়ে গেলে যেমন ফিরানোর কোনো সুযোগ নেই। তালাক দিয়ে দিলে এটাকে ধামাচাপা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই যতই রাগ আসুক এসব শব্দ পরিহার করতে হবে। তালাক দিতে হলে শরয়ি পদ্ধতিতে তালাক দিতে হবে। তালাক আল্লাহর কাছে খুবই অপছন্দের। শয়তান শুধু চায় স্বামী স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটাতে তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
আপন দেশ/কেএইচ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।