Apan Desh | আপন দেশ

কিভাবে বুঝবেন আপনার ওপর হজ ফরজ?

আপন দেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

কিভাবে বুঝবেন আপনার ওপর হজ ফরজ?

ফাইল ছবি

প্রতি বছর লাখ লাখ মুসল্লি মক্কায় যান প্রভুর দরবারে লাব্বাইক বলতে। কালো গিলাফে জড়ানো কাবাকে এক নজর দেখতে। যেখানে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছিলেন, তওয়াফ ও সায়ি করেছিলেন; আরাফাতের ময়দানে ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন, দোয়া কবুলের জায়গাগুলোতে দোয়া করেছিলেন। সে স্মৃতিবিজড়িত জায়গাগুলোতে গিয়ে হজ করতে চান রসুলপ্রেমী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

ইসলামের বিধানে প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও মক্কায় গিয়ে হজের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে ফিরে আসার সামর্থ্য রাখে, এমন প্রত্যেক মুসলমান নারী-পুরুষের ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। তবে নারীদের জন্য স্বামী বা মাহরাম পুরুষ সঙ্গে থাকা শর্ত। (ফাতাওয়া শামি ২/৪৫৫)

শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর হজ ফরজ। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন,
 
وَلِلهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا
 
অর্থ: মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (বায়তুল্লাহ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্যে এ গৃহের হজ করা ফরজ। (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)
 
হজের মৌসুমে হজে যাওয়া-আসার খরচ থাকতে হবে এবং একই সঙ্গে সফরের দিনগুলোতে নিজের ও পরিবারের লোকদের স্বাভাবিক খরচের ব্যবস্থা থাকতে হবে। কারও যদি মক্কায় যাওয়া-আসার সামর্থ্য থাকে কিন্তু হজের সফরের সময় পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে তার ওপর হজ ফরজ নয়।
 
দৈহিকভাবে হজ করার সক্ষমতা না থাকলেও হজ ফরজ হয় না। স্থাবর সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রয় করে কেউ যদি হজ আদায় করতে সক্ষম হয় এবং হজ থেকে ফিরে এসে বাকি সম্পত্তি দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে, তাহলেও তার ওপর হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম: ২/১৫২; আহসানুল ফতোয়া: ৪/৫১৬)
 
একইভাবে ব্যবসায়ীর দোকানে যে পরিমাণ পণ্য আছে, তার কিছু অংশ বিক্রয় করলে যদি হজ করা সম্ভব হয় এবং ফিরে এসে যদি বাকি পণ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা যায়, তাহলে তার ওপরও হজ ফরজ। (ইমদাদুল আহকাম: ২/১৫৩)
 
নারীদের হজ ফরজ হওয়ার জন্য সফরে স্বামী বা মাহরাম পুরুষ সাথে থাকা শর্ত। মাহরাম না থাকলে সামর্থ্য থাকার পরও নারীদের ওপর হজ ফরজ হবে না। আবার মাহরামের খরচ বহনের সামর্থ্য না থাকলেও নারীদের ওপর হজ ফরজ নয়। তবে, মাহরাম যদি ফরজ হজ করতে যায়, সেক্ষেত্রে তার সঙ্গে গেলে খরচ দেয়ার প্রয়োজন হবে না। (বাহরুর রায়েক: ২/৩৩৯)
 
কবুল হজের বিনিময়ে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মাবরুর হজের বিনিময় হলো জান্নাত। মাবরুর হজ বলতে হজের কাজ ও বিধি-বিধানগুলো যথাযথ আদায় করাকে বুঝায়। (বুখারি: ১৭৭৩; মুসলিম: ১৩৪৯)
 
অনেক ওপর হজ ফরজ। তা সত্ত্বেও আদায় করেন না। এদের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। তাফসিরে এসেছে, তারা ইহুদি হয়ে মৃত্যুবরণ করল কি খ্রিষ্টান হয়ে, তার কোনো পরোয়া মহান আল্লাহর নেই।’ (ইবনে কাসির: ১/৫৭৮)

হাদিসে কুদসিতে এসেছে, যে বান্দাকে আমি দৈহিক সুস্থতা দিয়েছি এবং আর্থিক প্রাচুর্য দান করেছি, অতঃপর (গড়িমসি করে) তার পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে যায় অথচ আমার দিকে (হজব্রত পালন করতে) আগমন করে না, সে অবশ্যই বঞ্চিত। (ইবনে হিব্বান: ৩৭০৩)

আপন দেশ/কেএইচ

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়