
ছবি সংগৃহীত
লিসবনের ইসমাইলি সেন্টারে শিয়া ইসমাইলি মুসলিমদের ৪৯তম ইমাম, মহামান্য প্রিন্স করিম আল-হুসাইনি আগা খান চতুর্থকে আজ রোববার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সমাহিত করা হয়েছে। চূড়ান্ত সমাধির জন্য বিদ্যমান কাঠামোর পাশে একটি নতুন সমাধি নির্মিত না হওয়ায় তাকে তার দাদা প্রয়াত স্যার সুলতান মোহাম্মদ শাহ আগা খান তৃতীয়ের সমাধিতে অন্তর্বর্তীভাবে সমাহিত করা হয়।
এর আগে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৫০তম ইমাম প্রিন্স রহিম আগা খান পঞ্চম এবং আগা খান চতুর্থের পরিবারের অন্যান্য সদস্য, ইসমাইলি সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
বিশ্ব নেতাদের মধ্যে উপস্থিতযে ছিলেন পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট রেবেলো দে সউসা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ জর্ডান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, পর্তুগাল, কাতার, স্পেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
মহামান্যের কফিনটি সাদা কাপড়ে মোড়ানো ছিল, যার উপর সোনালী রঙে তার ব্যক্তিগত প্রতীক খচিত ছিল। ইসমাইলি সম্প্রদায়ের স্বেচ্ছাসেবীরা কফিনটি আনুষ্ঠানিক হলে আনা হয়। এ সময় প্রার্থনা পাঠ করা হয়। যেখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার বংশধরদের উপর আশীর্বাদ কামনা করা হয়। মুসলিম প্রথা অনুযায়ী, পবিত্র কোরআন থেকে আয়াত পাঠ করা হয়। এরপর অতিথিরা কফিনের সামনে এসে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
বিশ্বব্যাপী ইসমাইলি সম্প্রদায়ের সদস্যরা তাদের জামাতখানায় (উপাসনা ও সমাবেশের স্থান) একত্রিত হয়ে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। তাদের ইমামের অসাধারণ নেতৃত্ব ও সেবামূলক জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জীবদ্দশায়, মহামান্য জোর দিয়ে বলেছেন যে ইসলাম একটি চিন্তাশীল, আধ্যাত্মিক ধর্ম, যা সহানুভূতি ও সহনশীলতা শেখায় এবং মানবজাতির মর্যাদা সমুন্নত রাখে। এ নৈতিক নীতিমালায় পরিচালিত হয়ে। তিনি আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক (একে ডিএন) প্রতিষ্ঠা করেন, যা একটি বেসরকারি, আন্তর্জাতিক, অ-সম্প্রদায়ভিত্তিক সংস্থা। উন্নয়নশীল বিশ্বের দরিদ্রতম ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান ও সুযোগ উন্নত করতে কাজ করে সংস্থাটি। তিনি তার উত্তরসূরি প্রিন্স রহিম আল-হুসাইনি আগা খান ৫ম -এর জন্য একটি শক্তিশালী উত্তরাধিকার ও প্ল্যাটফর্ম রেখে গেছেন।
আগা খান চতুর্থের জন্ম ১৯৩৬ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে। শৈশবের প্রথম দিনগুলো তিনি কেনিয়ার নাইরোবিতে কাটান, এরপর তিনি সুইজারল্যান্ডে ফিরে যান এবং অভিজাত লে রোজি স্কুলে পড়াশোনা করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস অধ্যয়ন করেন।
১৯৫৭ সালে দাদা স্যার সুলতান মোহাম্মদ শাহ আগা খানের মৃত্যুর পর মাত্র ২০ বছর বয়সে ইসমাইলি শিয়া মুসলিমদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। দাদা সুলতান মোহাম্মদ তার পুত্র প্রিন্স অ্যালি খানের পরিবর্তে প্রপৌত্র আগা খান চতুর্থকে উত্তরসূরি মনোনীত করেন।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।