
ছবি: আপন দেশ
চরমোনাইর তিন দিনব্যাপী ফাল্গুনের মাহফিল শুরু হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে মাহফিলের উদ্বোধন করেন আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।
উদ্বোধনী বয়ানে পীর চরমোনাই বলেন, চরমোনাই মাহফিল কোনো দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে নয়, বরং পথভোলা মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুতরাং এখানে দুনিয়াবি কোনো উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আসার প্রয়োজন নেই। যদি এমন কেউ এসে থাকেন তবে নিয়ত পরিবর্তন করে আত্মশুদ্ধির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন।
তিনি আরও বলেন, যারা নতুন এসেছেন, তারা দুনিয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে আখেরাতের খেয়াল-ধ্যান অন্তরে স্থান দিন। আত্মগৌরব ত্যাগ করে আল্লাহর প্রেমে নিজেকে বিলীন করুন। সবসময় আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে অন্তরকে তরতাজা রেখে এখান থেকে বিদায় নিন।
উদ্বোধনী বয়ান শেষে মাহফিলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা দেন তিনি।
সকাল ৮টা থেকে আগত মুসল্লীদের কয়েক হাজার হালকায় বিভক্ত করে হাতে-কলমে সালাত ও ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বাস্তব প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
মাহফিলে আগত মুসল্লীদের চিকিৎসার জন্য ১০০ শয্যার অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। ১৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ৪০ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে এ সেবা চালু রয়েছে। ১০টি অ্যাম্বুল্যান্স ও ২টি নৌ-অ্যাম্বুল্যান্স প্রস্তুত রয়েছে। মাঠে অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তিদের দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছাতে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করছে।
মাহফিলের শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশাল স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়োজিত রয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তি বা বস্তু উদ্ধারের জন্য প্রতিটি মাঠে রয়েছে হারানো ক্যাম্প।
সারাদেশ থেকে আগত মুসল্লীদের জন্য নিরাপদ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, সহস্রাধিক টয়লেট, ওজুখানা ও গোসলের সুব্যবস্থা রয়েছে।
প্রথম দিন অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি সম্মেলন। দ্বিতীয় দিন হবে দেশব্যাপী ওলামা সম্মেলন। শেষ দিনে ছাত্র-জনতার বিশাল গণজমায়েত হবে। এছাড়া যুবকদের জন্য ইসলামী যুব আন্দোলন ও শ্রমিকদের জন্য ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের উদ্যোগে বিশেষ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় পীর চরমোনাইয়ের আখেরি বয়ানের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে।
চরমোনাই মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৪ সালে। দরবারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মাওলানা সৈয়দ এছহাক রহ.। পরে মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করীম রহ. ১৭৭৭ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে তার ইন্তেকালের পর আমীরুল মুজাহিদীন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমান পীর সাহেব চরমোনাই, মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।