ছবি : সংগৃহীত
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম ও কিছু ধারা পরিবর্তন করে নতুন যে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া করা হয়েছে, সেখানে আদতে কিছুই পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রধান নির্বাহী ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হয়, তখন আমরা এটা বাতিল করতে বলেছিলাম। এবার যখন সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া বানানো হলো, সেটিও একই রকম রয়েছে। শুধু কিছু অংশে পরিবর্তন আছে, যা পরিষ্কার নয়। অনেক ক্ষেত্রে হুবহু কপি পেস্ট করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম ডিজিটাল আইন ও খসড়া আইনের পার্থক্য তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা না দিয়ে এই আইনে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে। এছাড়া এই আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে সরকার মেনে নিয়েছে যে এটা কোনো আইন নয়। এটা একটা কালো আইন। এই আইন যদি এভাবে পাস হয়, তাহলে আবার এটাকে বাতিল করার আহ্বান করবো।
তিনি বলেন, এখন যে খসড়া আছে, সেটি সাইবার নিরাপত্তা না দিয়ে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে। সাইবার নিরাপত্তা না দিয়ে মানুষের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। এই আইনের অনেক সাজার ক্ষেত্রে অন্য আইন আগে থেকেই আছে। শুধু শুধু এখানে সেই বিষয়গুলো যোগ করা হয়েছে। এটা সাইবারকেন্দ্রিক নিরাপত্তার কথা বললেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য সাজা নির্ধারণ করেছে। মানহানির ক্ষেত্রে প্রচলিত আইনে দণ্ড আছে, তাহলে কেন ডিজিটাল আইনে শাস্তি পেতে হবে? ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে আমি কী মত প্রকাশ করবো, সেটা আইন দ্বারা প্রভাবিত করা ঠিক হবে না।
আরও পড়ুন: বেস্ট হোল্ডিংসের ভয়ঙ্কর জালিয়াতি! শেয়ার বাজারে আসছে
নতুন এই আইন প্রসঙ্গে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনেক জায়গায় যেসব পরিবর্তন হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। পুলিশের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত। পুলিশের দক্ষতার প্রশ্ন আছে। যিনি গ্রেফতারের ক্ষমতা দেবেন, তাকেও জানতে হবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো। কিছু জায়গায় উভয় দণ্ডের কথা বলা আছে। যদিও সেটি পরিবর্তন করা হয়েছে, তবে শব্দ পরিবর্তন হয়নি। যেটা সাইবার অপরাধের বাইরে সেটা বাতিল করা উচিত এই আইন থেকে।
প্রক্রিয়া ও বিবেচনা উভয়ই বিতর্কিত জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, এই খসড়া আইনের প্রক্রিয়া ও বিবেচনা উভয়ই বিতর্কিত। এই সরকারের আমলে একটা ইতিবাচক দিক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে কোনো আইন পরিবর্তন বা পরিমার্জনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেয়া হতো। তবে এই আইনের বেলায় তা নেয়া হয়নি। শুধু ১৪ দিনের সময় দিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এখনো সুযোগ আছে মতামত নেয়ার।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।