অস্ট্রেলিয়ার বোলিং তোপে ২৪০ রানেই গুটিয়ে গেছে ভারত
নিজ দেশে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইণাল পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল ছিল ভারত। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে তারা। তবে ফাইনালে এসে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের তোপের মুখে সেভাবে দাঁড়াতেই পারেননি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলতে পারলেও ২৪০ রানের বেশি করতে পারেননি তারা। এরমধ্যে বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল ফিফটির দেখা না পেলে আরও বড় বিপদে পড়তে হতো ভারতকে।
এবারের বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা মানেই ভারতের ঝোড়ো সূচনা। ব্যত্যয় ঘটেনি ফাইনালেও। শুরুতে ওপেনার শুভমান গিলের (৭ বলে ৪) উইকেট হারিয়ে ফেললেও ঝোড়ো গতিতে রান তুলেছে ভারত।
অধিনায়ক রোহিত শর্মা মারকুটে ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ছিলেন হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। তবে ৩১ বলে ৪৭ করার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এরপর ক্রমেই ভারতকে চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে আর বের হতে পারেনি ভারত।
১০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৮০ রান। এরপর টানা ১৬ ওভার কোনো বাউন্ডারি পায়নি। ২৭তম ওভারে এসে সেই বাউন্ডারিখরা কাটান লোকেশ রাহুল।
এর আগে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিং বেছে নেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দলীয় ৩০ রানের মাথায় মিচেল স্টার্ক ফেরান শুভমান গিলকে (৭ বলে ৪)।
এরপর কামিন্স দ্রুতই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। তিনি এসেই অস্ট্রেলিয়াকে আনন্দে ভাসান। নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ১০ম ওভারে রোহিত শর্মাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান।
ওই ওভারে ম্যাক্সওয়েলের চতুর্থ বলটি রোহিত শর্মার ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় অফসাইডে। ট্রাভিস হেড কভার অঞ্চল থেকে পেছনে গিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিলে ৩১ বলে ৪৭ রান করে আইট হন ভারত অধিনায়ক। ফলে দলীয় ৭৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা।
এরপর ব্যাট করতে নামেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শ্রেয়াস আয়ার। কিন্তু ফাইনালের দিনে মাত্র একটি বাউন্ডারি মেরে প্যাট কামিন্সের বলে ফিরে যেতে হয় তাকেও। ফলে পাঁচ রান যোগ হতেই ৮১ রানের মাথায় পড়ে তৃতীয় উইকেট।
এ অবস্থায় বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল থুব সাবধানে খেলতে থাকেন। দলকে এগিয়ে নিতে দাঁতে দাঁত চেপে ক্রিজে পড়ে থাকার চেষ্টা করেন তারা। চতুর্থ উইকেটে ১০৯ বল খেলে তারা ধীরগতিতে যোগ করেন ৬৭ রান।
অবশেষে সেই জুটিটি ভাঙেন প্যাট কামিন্স। তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইনসাইডেজ হয়ে বোল্ড হন ভারতীয় দলের ব্যাটিং ভরসা বিরাট কোহলি । তার আগে ৬৩ বলে ৪ বাউন্ডারির সাহায্যে করেন ৫৪ রান।
কোহলির বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমে রবীন্দ্র জাদেজা সুবিধা করতে পারেননি। ২২ বলে মাত্র ৯ রান করে হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন তিনি। ফলে ১৭৮ রানে ৫ উইকেট হারায় ভারত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন লোকেশ রাহুল। বেশ ধীরগতিতে ব্যাটিং করেছেন তিনি। অবশেষে তাকেও সাজঘরে পাঠান মিচেল স্টার্ক। ১০৭ বলে ৬৬ রান করে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন রাহুল। তার ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল মাত্র একটি। এরপর মোহাম্মদ শামিকেও (৬) সাজঘরে ফেরান স্টার্ক। এতে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ২১১/৭।
এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি ভারত। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সূর্যকুমারের ওপর ভরসা ছিল। তিনিও ২৮ বলে ১৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান।
ইনিংসের শেষ বলে মোহাম্মদ সিরাজ দুই নিতে গেলে রানআউটের কবলে পড়েন কুলদ্বীপ যাদব। তাতেই ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ফলে ফাইনালে জিততে হলে অস্ট্রেরিয়াকে করতে হবে ৫০ ওভারে ২৪১ রান।
বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মিচেল স্টার্ক ৩টি, প্যাট কামিন্স আর জস হ্যাজেলউড নেন ২টি করে উইকেট।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।