ট্রেভিস হেড-লেবুশেন জুটিতে জয়ের কাছাকাছি রেপৗঁছে গেছে অস্ট্রেলিয়া
ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে স্বাগতিক ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের সুবাস পাচ্ছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ভারতের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রোহিত-কোহরিদের বিরুদ্ধে জয়লাভের জন্য ২৪১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে সকারুরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা করেছে তিন উইকেটে ২০৬ রান।
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ট্রেভিস হেড সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। তিনি অপরাজিত আছেন ১২৪ রানে। অপরদিকে লেবুশেন অপরাজিত আছেন ৪৪ রানে।
এর আগে ভারতের দেয়া ২৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ৩ বলে ৭ রান করে মোহাম্মদ শামির বলে খোঁচা দিতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ হন ডেভিড ওয়ার্নার। এরপর ১৫ বলে ১৫ রান করে জাসপ্রিত বুমরাহর শিকারে পরিণত হন ওয়ান ডাইনে নামা মিচেল মার্শ হন। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে জমা পড়ে।
এরপর মাত্র ৪ রান করে স্টিভেন স্মিথও বুমরাহর বলে এলবিডব্লিউ হলে চাপে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। যদিও টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন স্মিথ। শুরুর সেই ধাক্কা সামলে নিয়ে লেবুশেনকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান ইনিংসের গোড়া পত্তন করতে নামা ট্রেভিস হেড। জয়ের পথে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছেন এই জুটি।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে ভারত। এবারের বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামা মানেই ভারতের ঝোড়ো সূচনা। ব্যত্যয় ঘটেনি ফাইনালেও। শুরুতে ওপেনার শুভমান গিলের (৭ বলে ৪) উইকেট হারিয়ে ফেললেও ঝোড়ো গতিতে রান তুলেছে ভারত।
অধিনায়ক রোহিত শর্মা মারকুটে ভঙ্গিমায় এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ছিলেন হাফসেঞ্চুরির দোরগোড়ায়। তবে ৩১ বলে ৪৭ করার পর গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এরপর ক্রমেই ভারতকে চেপে ধরে অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে আর বের হতে পারেনি ভারত।
১০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৮০ রান। এরপর টানা ১৬ ওভার কোনো বাউন্ডারি পায়নি। ২৭তম ওভারে এসে সেই বাউন্ডারিখরা কাটান লোকেশ রাহুল।
এর আগে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিং বেছে নেন অসি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দলীয় ৩০ রানের মাথায় মিচেল স্টার্ক ফেরান শুভমান গিলকে (৭ বলে ৪)।
এরপর কামিন্স দ্রুতই বোলিংয়ে নিয়ে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে। তিনি এসেই অস্ট্রেলিয়াকে আনন্দে ভাসান। নিজের দ্বিতীয় এবং দলের ১০ম ওভারে রোহিত শর্মাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান।
ওই ওভারে ম্যাক্সওয়েলের চতুর্থ বলটি রোহিত শর্মার ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় অফসাইডে। ট্রাভিস হেড কভার অঞ্চল থেকে পেছনে গিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নিলে ৩১ বলে ৪৭ রান করে আইট হন ভারত অধিনায়ক। ফলে দলীয় ৭৬ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা।
এরপর ব্যাট করতে নামেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শ্রেয়াস আয়ার। কিন্তু ফাইনালের দিনে মাত্র একটি বাউন্ডারি মেরে প্যাট কামিন্সের বলে ফিরে যেতে হয় তাকেও। ফলে পাঁচ রান যোগ হতেই ৮১ রানের মাথায় পড়ে তৃতীয় উইকেট।
এ অবস্থায় বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুল থুব সাবধানে খেলতে থাকেন। দলকে এগিয়ে নিতে দাঁতে দাঁত চেপে ক্রিজে পড়ে থাকার চেষ্টা করেন তারা। চতুর্থ উইকেটে ১০৯ বল খেলে তারা ধীরগতিতে যোগ করেন ৬৭ রান।
অবশেষে সেই জুটিটি ভাঙেন প্যাট কামিন্স। তার দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইনসাইডেজ হয়ে বোল্ড হন ভারতীয় দলের ব্যাটিং ভরসা বিরাট কোহলি । তার আগে ৬৩ বলে ৪ বাউন্ডারির সাহায্যে করেন ৫৪ রান।
কোহলির বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমে রবীন্দ্র জাদেজা সুবিধা করতে পারেননি। ২২ বলে মাত্র ৯ রান করে হ্যাজেলউডের বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন তিনি। ফলে ১৭৮ রানে ৫ উইকেট হারায় ভারত।
সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন লোকেশ রাহুল। বেশ ধীরগতিতে ব্যাটিং করেছেন তিনি। অবশেষে তাকেও সাজঘরে পাঠান মিচেল স্টার্ক। ১০৭ বলে ৬৬ রান করে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন রাহুল। তার ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল মাত্র একটি। এরপর মোহাম্মদ শামিকেও (৬) সাজঘরে ফেরান স্টার্ক। এতে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ২১১/৭।
এরপর আর বেশিদূর এগোতে পারেনি ভারত। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সূর্যকুমারের ওপর ভরসা ছিল। তিনিও ২৮ বলে ১৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান।
ইনিংসের শেষ বলে মোহাম্মদ সিরাজ দুই নিতে গেলে রানআউটের কবলে পড়েন কুলদ্বীপ যাদব। তাতেই ২৪০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ফলে ফাইনালে জিততে হলে অস্ট্রেরিয়াকে করতে হবে ৫০ ওভারে ২৪১ রান।
বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মিচেল স্টার্ক ৩টি, প্যাট কামিন্স আর জস হ্যাজেলউড নেন ২টি করে উইকেট।
আপন দেশ/এমএমজেড
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।