ছবি: সংগৃহীত
টি২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গ্রুপ পর্বে নিজেদের চার ম্যাচের তিনটিতেই জয় উপহার দিয়েছেন টিম টাইগার। সে সঙ্গে পূরণ হয়েছে তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য।
শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে টানটান উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে মাত্র ৪ রানে হেরেছে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ উইকেটে, নেদারল্যান্ডসকে ২৫ রানে ও নেপালকে ২১ রানে হারিয়েছে গ্রুপ পর্বে।
সেদিক থেকে এবারের বিশ্বকাপ বাংলাদেশ দলের জন্য এটি সফলতম অর্জন। আগের ৮ আসরের কোনোটিতেই ২টির বেশি ম্যাচ জিততে পারেনি। ২০১৪, ২০১৬, ২০২১ ও ২০২২ সালে দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। এবার জয় ৪ ম্যাচ থেকেই ৩টি।
সেরা সাফল্য পাওয়া বাংলাদেশ দলের এবার চ্যালেঞ্জ হবে সুপার এইটে। খেলতে হবে দুই হট ফেভারিট ও অন্যতম শক্তিধর দল অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভয়ংকর আফগানিস্তানও লারল-সবুজদের প্রতিপক্ষ হবে সুপার এইটে।
আগামীকাল শুক্রবার (২১ জুন) ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সুপার এইটে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ এটা। এখন পর্যন্ত দলের জয়ে পুরো ভূমিকাই পালন করেছেন বোলাররা। ব্যাটিং ব্যর্থতা তাই দুশ্চিন্তা হয়েই থাকছে বাংলাদেশ টিমের জন্য।
নেপালের বিপক্ষে সর্বশেষ গ্রুপ ম্যাচেও বাংলাদেশের জন্য সহজ সমীকরণ ছিল না। হেরে গেলে সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখা নাজমুল হোসেন শান্তদের পা পিছলে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। সেন্ট ভিনসেন্টে সোমবার সে ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১৯.৩ ওভারে মাত্র ১০৬ রানে গুটিয়ে যায় কঠিন উইকেটে। জবাবে রেকর্ডময় বোলিং পারফর্ম্যান্স দেখিয়ে বাংলাদেশ জিতেছে ২১ রানে। নেপাল ১৯.২ ওভারে ৮৫ রানেই থেমে যায়। এত কম রান করে বাংলাদেশ দল আগে কখনোই ম্যাচ জিততে পারেনি।
২৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়ে নেপাল। কিন্তু পরের ৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায়। ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিব ৪ ওভারে ২ মেডেনে ৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। পুরো ৪ ওভার করে সেটাই বাংলাদেশের পক্ষে টি২০তে সবচেয়ে ইকোনমি বোলিংয়ের রেকর্ড। একই ম্যাচে অবশ্য মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১ মেডেনে ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বিশ্বকাপের আগে রিশাদ হোসেনও ৪ ওভারে ৭ রানে ১ উইকেট নিয়েছিলেন।
নেপালের বিপক্ষে এদিন তানজিম ২১টি ডট দেন যা বিশ্বকাপের রেকর্ড ছিল। নিউজিল্যান্ডের লোকি ফার্গুসন পুরো ৪ ওভারে রান না দিয়ে সেই রেকর্ড ভেঙেছেন পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। এমন জয়ের পর বাংলাদেশ দাপটের সঙ্গেই সুপার এইটে পা রাখে কোনো ধরনের শঙ্কা ছাড়াই।
বোলাররা এভাবেই গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ দলকে দারুণ কিছু উপহার দিয়ে গেছেন। কিন্তু ব্যাটারদের অবস্থা একেবারেই বেহাল। দুয়েকটি ভালো ইনিংস ছাড়া বলার মতো কোনো পারফর্ম্যান্স নেই। এবার বিশ্বকাপে একমাত্র অর্ধশতক এসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে। বাকিরাও আহামরি কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি। যদিও প্রতিটি ম্যাচেই বিপদের সময় শক্তহাতে হাল ধরেছেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
এবার এখন পর্যন্ত সেরা বিশ্বকাপ হয়ে গেছে বাংলাদেশ দলের। কারণ এক আসরে সবচেয়ে বেশি ৩ ম্যাচ জিতেছে। ২০০৭ সালের প্রথম আসরে মাত্র একটি জয় পাওয়া বাংলাদেশ ২০০৯, ২০১০ ও ২০১২ সালে কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি। তবে ২০১৪, ২০১৬, ২০২১ ও ২০২২ সালে দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। এখন খেলতে হবে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে। অ্যান্টিগার পেসবান্ধব উইকেটে শুক্রবার ভোরে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নামবে বাংলাদেশ।
টি২০ ফরম্যাটে দুই দল ১০ বার মুখোমুখি হয়েছে। অজিদের জয় ৬টি, বাংলাদেশের ৪টি। বিশ্বকাপে অবশ্য ৫ বারের দেখায় কখনো জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তাই আরেকটি কঠিন পরীক্ষার সামনে শান্তরা বিপর্যস্ত ব্যাটিং লাইন নিয়ে অ্যান্টিগার পেস সহায়ক উইকেটে।
পরদিনই আরেকটি অগ্নিপরীক্ষা বর্তমান বিশে্বর এক নম্বর দল ভারতের বিপক্ষে একই ভেন্যুতে। মাঝে একদিন বিরতি দিয়ে সেন্ট ভিনসেন্টে আফগানদের মোকাবিলা করতে হবে ব্যাটারদের জন্য কঠিনতম উইকেটে। তাই সুপার এইটেও বোলাররাই মূল ভরসা বাংলাদেশের। তবে ব্যাটারদের ঘুরে দাঁড়ানোর আশায়ও করছে দলটি।
আপন দেশ/এইউ
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।