ছবি সংগৃহীত
কানপুর টেস্টে ভারতের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ৫ম দিনের সকালে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল যতটা সময় ব্যাট করে যাওয়া। ম্যাচে হারের বদলে ড্র আনতে চেয়েছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। কিন্তু, ভাগ্যটাই যে বাংলাদেশের পক্ষে নেই। এর আগে ২০২১ সালে পাকিস্তান এবং ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্ট হেরেছিল বাংলাদেশ। ৫ম দিনে সেটারই চিত্রনাট্য টাইগাররা লিখেছে আরেকবার।
কানপুর টেস্টের পঞ্চম দিনে মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। বাংলাদেশের দেয়া ৯৫ রানের লক্ষ্য তারা ৩ উইকেট হারিয়েই পেরিয়ে যায়। এটিই গ্রিনপার্কে সফল সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। এর আগে এ মাঠে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল ৮২ রানের। ১৯৯৯ সালে নিউজিল্যান্ডের দেয়া লক্ষ্য ১৮.২ ওভারে ২ উইকেট হারিয়েই পেরিয়ে গিয়েছিল শচীন টেন্ডুলকারের নেতৃত্বাধীন ভারত।
ভারতকে এদিন জয় এনে দেন যশস্বী জয়সওয়াল। ভারতের এ তরুণ ব্যাটার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন এ ইনিংসেও। হাঁকিয়েছেন অর্ধশতক। ৪৫ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৫১ রান করেন তিনি। এছাড়া রোহিত শর্মা ৮ এবং শুভমান গিল ৬ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের শিকারে পরিণত হন। বিরাট কোহলি ৩৭ বলে ৪ চারে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ছয় মেরে জয় নিশ্চিত করেন রিশভ পন্ত।
বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ৪৪ রানে ২ উইকেট এবং তাইজুল বাকি উইকেটটি শিকার করেন।
আগের দিন ২ উইকেটে ২৬ রান নিয়ে দিন শেষ করা বাংলাদেশ আজ ১৪৬ রান তুলতেই অলআউট হয়ে যায়। সাদমান ইসলাম সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন।
কানপুরে পঞ্চম দিনে প্রথম ব্যাটার হিসেবে বিদায় নেন মুমিনুল হক। আগের ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান এই বাঁহাতি রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে সুইপ শট খেলতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে ২ রান করেন সাবেক এই অধিনায়ক।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে সাদমান দারুণ জুটি গড়ে তুলেছিলেন। স্বাচ্ছন্দেই খেলছিলেন শান্ত। ৫৫ রানের জুটি গড়েন তারা। কিন্তু রবীন্দ্র জাদেজা বোলিংয়ে আসতেই রিভার্স সুইপ শট খেলতে যান তিনি। বল ব্যাট মিস করে উইকেটে গিয়ে লাগে। ৩৭ বলে ১৯ রান করে বিদায় নেন শান্ত। শান্তর বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে মড়ক লাগে টাইগারদের ইনিংসে। ৯১-৯৪ এই ৩ রান করতেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
শান্তর বিদায়ের পরের ওভারেই সাদমান বিদায় নেন। মাত্রই অর্ধশতক পূর্ণ করা এ ওপেনার আকাশদীপের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে স্লিপে ধরা পড়েন। ১০১ বলে ১০ চারে ৫০ রান করেন তিনি।
পরের ওভারে লিটন দাস জাদেজার বলে পন্তের হাতে ক্যাচ দেন। দুই ওভার পর জাদেজার বলে তার হাতেই ক্যাচ দেন সম্ভাব্য শেষ টেস্ট ইনিংস খেলতে নামা সাকিব। শেষ ইনিংসে ২ বল খেলে রানে খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
এর পর একাই লড়াই করতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। দলীয় ১১৮ রানে বুমরাহর বলে পন্তের হাতে ক্যাচ দেন ৯ রান করা মিরাজ। ১৩০ রানে তাইজুলও বিদায় নেন বুমরাহর বলে। ১৩ বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি।
জদেজার বলে মুশফিকের বিরুদ্ধেও এলবিডব্লিউয়ের আবেদন উঠেছিল। আম্পায়ারও সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান সে সময় ২৭ রানে ব্যাট করা মুশি।
মুশফিক একাই লড়াই চালিয়ে যান। লাঞ্চের আগের একদম শেষ বলে বুমরাহ তাকে বোল্ড করলে বাংলাদেশের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
ভারতের পক্ষে জাসপ্রীত বুমরাহ, রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জদেজা প্রত্যেকেই ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। বাকি উইকেটটি আকাশ দীপ পান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৭৪.২ ওভারে ২৩৩/১০ (জাকির ০, সাদমান ২৪, মুমিনুল ১০৭*, শান্ত ৩১, মুশফিক ১১, লিটন ১৩, সাকিব ৯, মিরাজ ২০, তাইজুল ৫, হাসান ১, খালেদ ০; বুমরাহ ১৮-৭-৫০-৩, সিরাজ ১৭-২-৫৭-২, অশ্বিন ১৫-১-৪৫-২, আকাশ দীপ ১৫-৬-৪৩-২, জাদেজা ৯.২-০-২৮-১)।
ভারত প্রথম ইনিংস: ৩৪.৪ ওভারে ২৮৫/৯ ডি. (জয়সওয়াল ৭২, রোহিত ২৩, গিল ৩৯, রিশাভ ৯, কোহলি ৪৭, রাহুল ৬৮, জাদেজা ৮, অশ্বিন ১, আকাশ দীপ ১২, বুমরাহ ১; হাসান ৬-০-৬৬-১, খালেদ ৪-০-৪৩-০, মিরাজ ৬.৪-০-৪১-৪, তাইজুল ৭-০-৫৪-০, সাকিব ১১-০-৭৮-৪)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ৪৭ ওভারে ১৪৬/১০
ভারত দ্বিতীয় ইনিংস : ১৭.২ ওভারে ৯৮/৩
ফল: ভারত ৭ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ভারত ২-০ ব্যবধানে জয়ী
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।