ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। ছবি বাফুফে
সাফের আগের আসরের সেমিফাইনালে ভুটানকে পেয়েছিল বাংলাদেশ! সেবার তাদের পাত্তাই দেয়নি বাংলার বাঘিনীরা। প্রতিপক্ষকে আট গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল। সে স্মৃতি যেন আবারো কাঠমান্ডুতে ফেরাল লাল-সবুজের দল। এবার ৭-১ গোলের বিশাল জয়ে টুর্নামেন্টে ফাইনালে পৌঁছে গেল বর্তমান শিরোপাধারীরা। ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন নিজের জাত চিনিয়ে করেন হ্যাটট্রিক।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়িয়ে দেয়া বলে তহুরা বল পেলেও শেষ মুহূর্তে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের ট্যাকেলে বল জালে জড়াতে পারেননি।
খেলার সপ্তম মিনিটে আসে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। ডি বক্সের সামনে থেকে বাঁদিকে থাকা ঋতুপর্ণা চাকমাকে বল বাড়িয়ে দেন তহুরা। ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ-পায়ের দুরন্ত শটে ঋতুপর্ণা নিশানাভেদ করলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
আট মিনিট পর শিউলি আজমের ক্রসে দারুণ ভারসাম্যে বল নিয়ে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে বাঁ-পায়ের ভলিতে বল জালে জরান তহুরা। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ২-০।
১৮তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে যাওয়া ভুটানের পেমা চোডেনের কাছ থেকে বল কেড়েছিলেন গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। তবে সেটির নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় ডেকি লাজমের পায়ে বল গেলেও তিনি পোস্ট ফাঁকা পেয়েও লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হন।
তহুরার পোস্টের সামনে বাড়িয়ে দেয়া বলে ২৫ মিনিটে শট নেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বল বারে লেগে ফেরে। পরের মিনিটেই অবশ্য তিনি আক্ষেপ মেটান। প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল কেড়ে নেন মনিকা চাকমা। তিনি ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে সাবিনার দিকে বল বাড়ান। বাঘিনীদের অধিনায়ক ডান পায়ের টোকায় বল জালে পাঠিয়ে দেন।
সাবিনা ২৭ মিনিটে আরেকটি গোলের দেখা পেতে পারতেন। মোসাম্মাৎ সাগরিকার বাড়ানো বলে তার দূরপাল্লার শট পোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
আট মিনিট পর আবারো তহুরার ঝলক। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের লম্বা পাসে বল নিয়ে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাঁ-পায়ের উঁচু শটে অনায়াসেই গোলরক্ষককে পরাস্ত করে জোড়া গোলের দেখা পান।
তারপর সাবিনাও জোড়া গোল পূরণ করেন। গোলরক্ষক রূপনার পোস্টের সামনে থেকে নেয়া কিকে মাঝমাঠের কাছে থাকা অভিজ্ঞ এই ফরোয়ার্ড ৩৭ মিনিটে দুই খেলোয়াড়ের মাঝ দিয়ে এগিয়ে যান। ভুটানি গোলরক্ষককে কাটিয়ে অনায়াসে বল জালে জড়ান। ৫৪তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে এটি তার ৩৬তম গোল। পাঁচ গোল হজমের পর ৪১ মিনিটে ডেকি লাজম ভুটানের একটি পরিশোধে সক্ষম হন।
বিরতির পর হ্যাটট্রিকের দেখা পান তহুরা। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠা সাবিনার কাছ থেকে বল নেন মনিকা। তিনি বাঁ পায়ে পোস্টের সামনে থাকা তহুরার দিকে বল ঠেলে দেন। টাইগ্রেস নাম্বার টেন বাঁ-পায়ের নিখুঁত ফিনিশিংয়ে কাজের কাজটা রাসেন।
শুরুর একাদশ থেকে ৬৪ মিনিটে বাংলাদেশ দলে তিনটি পরিবর্তন আনেন হেড কোচ পিটার জেমস বাটলার। সাবিনার জায়গায় স্বপ্না রাণী, সাগরিকার পরিবর্তে শাহেদা আক্তার রিপা ও ঋতুপর্ণার স্থানে খেলতে নামেন সানজিদা আক্তার।
সানজিদার কর্নার কিকে উড়ে আসা বলে মাপা হেডে ৭১ মিনিটে বাংলাদেশের সপ্তম গোলটি করেন মাসুরা পারভীন। তিন মিনিট পর এ সেন্টার ব্যাকের পরিবর্তে মাঠে নামেন কোহাতি কিসকু। ৭৭ মিনিটে মারিয়া মান্দাকে বেঞ্চে বসিয়ে মাতসুশিমা সুমাইয়াকে মাঠে পাঠান কোচ বাটলার।
খেলার ৮৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেতে পারতো ভুটান। ইয়েশে বিনধার শট পোস্টের উপর দিয়ে যায়। চার মিনিট পর বদলি খেলোয়াড় রিপা ডানপায়ের দূরপাল্লার শট নিলেও তা পোস্টের সামান্য উপর দিয়ে যায়। ফলে লাল-সবুজের দল অষ্টম গোলের মুখ দেখেনি।
আপন দেশ/এমবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।