Apan Desh | আপন দেশ

সালাউদ্দিন পারেনি, তাবিথ কী পারবেন?

মুন্সী জাকিউল ইসলাম

প্রকাশিত: ১০:৩২, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১০:৩৭, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

সালাউদ্দিন পারেনি, তাবিথ কী পারবেন?

ছবি : আপন দেশ

সত্তর আশির দশকে বাংলাদেশের ফুটবলের রমরমা অবস্থা ছিল। আবাহনী-মোহামেডানের ম্যাচ দেখতে উপচে পরত স্টেডিয়ামের গ্যালারি। উত্তেজনা এমন পর্যায়ে পৌছাত যে, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরত দুই দলের সমর্থকরা। কাজী সালাউদ্দিন, সালাম মুর্শিদি, মো. আসলাম, কায়সার হামিদদের খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে না পেরে বাহিরে দল বেধে অবস্থান করতেন। কিন্তু এখন আর সে জৌলুশ নেই। নব্বই দশক পেরুতেই বিবর্ণ বাংলাদেশের ফুটবল।

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে প্রায় তলানিতে অবস্থান করছে বাংলাদেশের ফুটবল। অথচ গত এক যুগেরও বেশি ধরে দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সর্বোচ্চ পদে আসিন ছিলেন আশির দশকের উজ্জ্বল তারকা কাজী সালাউদ্দিন। খেলোয়াড় হিসাবে দুর্দান্ত হলেও সংগঠক হিসাবে মোটেও কৃতিত্বের সাক্ষর রাখতে পারেননি তিনি।

যদিও বাফুফে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেই ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপ খেলার স্বপ দেখিয়ে ছিলেন কাজী সালাউদ্দিন। কিন্তু বিশ্বকাপে খেলা তো দুরের কথা দক্ষিণ এশিয়া সর্বোচ্চ টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্ব পেরুতে পারেনা বাংলাদেশের ফুটবলাররা।

একটি দেশের ফুটবল এগিয়ে যাওয়ার পিছনে বড় ভূমিকা রাখে ঘরোয়া ফুটবল। দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল সঠিক পথে এগোচ্ছে না। শক্তিশালী অবকাঠামো নেই। এখানে ক্লাবগুলো নিয়ম শৃঙ্খলা মানতে চায়না। রয়েছে পাতানো খেলার অভিযোগও। কর্তৃপক্ষ দায়সারা তদন্ত করে নামকাওয়াস্তে শাস্তি দেয়। যে কারণে বছরের পর বছর ধরে এ অপরাধ করে যাচ্ছে কিছু ক্লাব।

এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে মনে করে থাকেন অনেকে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচিত হওয়া একাধিক এমপি। ছিলেন যুবলীগের নেতাও। দলীয় স্বার্থে বিভিন্ন ভাবে বাফুফেতে প্রভাব বিস্তার করেছেন তারা। যে কারণে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছিল দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। অবশ্য তৎকালীন সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন ফিফার শাস্তিও পেয়েছেন। সে সঙ্গে ফুটবল থেকে তাদের নিষিদ্ধ করেছে ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থা।

মাস তিনেক আগে দেশে রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে। ছাত্র জনতার বিপ্লবে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হওয়ার পর দেশের অন্যান্য সেক্টরের মতো ক্রীড়াঙ্গণেও পরিবর্তন এসেছে। গত ২৬ অক্টোবর নির্বাচনে বাফুফের নতুন সভাপতি হয়েছেন তাবিথ আওয়াল। ইতিমধ্যে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি। দেশের ফুটবলের সোনালী দিন ফেরাতে দিয়েছেন নানা প্রতিশ্রুতিও। কাজী সালাউদ্দিন যা পারেননি তাবিথ কি তা করে দেখাতে পারবেন এমন প্রশ্ন ফুটবল প্রেমীদের মনে।

বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়নের পথে অন্তরায় কি? কেন এগোচ্ছে না এদেশের ফুটবল। সীমাহীন সাংগঠনিক ব্যার্থতা, তৃণমূল  থেকে খেলোয়াড় উঠে না আসায় পাইপলাইনে শূন্যতা, মানহীন খেলোয়াড় এবং ঘরোয়া ফুটবল লিগে বিদেশি খেলোয়াড়ের আধিক্য বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নে সব থেকে বড় বাঁধা।

তাহলে কি হারানো গৌরব ফিরে পাবেনা বাংলাদেশের ফুটবল? কবে ফিরবে দেশের আপামর মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় এ খেলার সুদিন।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়