
ছবি বাফুফে
আধুনিক যুগের খেলাধুলায় জার্সি একটি অপরিহার্য অংশ। আন্তর্জাতিক ম্যাচে জার্সি একটি দেশের পরিচয় বহন করে। জার্সি দেশের ইতিহাস, রাজনীতি এমনকি ভৌগলিক তাৎপর্য বহন করে। আর সে জন্যই একটা দলের জার্সি তৈরিতে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মাসের পর মাস ব্যয় করে। এত দিন বাংলাদেশ ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষক থাকলেও কিট স্পন্সর ছিল না।
তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়েই জাতীয় নারী ও পুরুষ সিনিয়র- জুনিয়র সব দলের জন্য প্রথমবারের মতো কিট স্পন্সর নিশ্চিত করেছে। অনলাইনে স্পোর্টস সরঞ্জামাদী বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ‘দৌড়’ এর সঙ্গে ২ বছরের চুক্তি করেছে বাফুফে। বাফুফে’র সহ-সভাপতি এবং মার্কেটিং কমিটির প্রধান ফাহাদ করিম এবং দৌড়ের মালিক আবিদ আলম চৌধুরি তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা জার্সির ক্ষেত্রে আবহাওয়া, সেলাই, ধৌত সব কিছু বিবেচনা করেই কিট স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশের নাম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক। আমরা বাংলাদেশের ব্র্যান্ডের জার্সি পড়ে
চুক্তির বিষয়ে বাফুফে’র সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, এ চুক্তির মাধ্যমে নতুন যুগে প্রবেশ করল বাফুফে। আমাদের (নতুন কমিটির) প্রথম চার মাসের একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। এটি একটি দুই বছরের চুক্তি, তবে বাফুফে এক বছর পর চুক্তিটি পর্যালোচনা করার অধিকার রাখে। আমি বলতে পারি যে, আমরা প্রতি বছর অন্তত এক কোটি টাকা সঞ্চয় করতে যাচ্ছি, যা আগে জাতীয় ফুটবল দলের কিটের জন্য ব্যয় করা হতো।
প্রথমবারের মতো বা্ফুফের সঙ্গে যুক্ত হওয়া নিয়ে দৌড়ের মালিক আবিদ বলেন, আমি বাফুফে সভাপতি তাবিথ আওয়ালের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ, যিনি আমাদেরকে তাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা এটি একটি আবেগ থেকে শুরু করেছি এবং আমাদের লক্ষ্য হল আমাদের স্থানীয় ব্র্যান্ডের জন্য বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ‘দৌড়’ নামের এ প্রতিষ্ঠান খুব একটা পরিচিত নয়। ফেসবুকে প্রতিষ্ঠানটির পেইজে ঢুকে দেখা গেল স্রেফ ১৬ হাজার ফলোয়ার। অনলাইনে স্পোর্টস সরঞ্জামাদি বিক্রি করে তারা। দেশের স্থানীয় পোশাক ব্র্যান্ডের জগতে মোটেই পরিচিত নয় এ ব্র্যান্ড। অথচ তাদের সঙ্গে সব জাতীয় দলের কিট পার্টনার হিসেবে দুই বছরের চুক্তির ব্যাপারটিকে বড় সাফল্য বলে দাবি করছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা! এ চুক্তির ফলে বাফুফে নয় লাভবান হবে দৌড়। কারণ, ফুটবলকে পুঁজি করে অখ্যাত এ ব্র্যান্ড রাতারাতি পরিচিত পাওয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ তারকা হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশ দলে খেলার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর দেশের ফুটবলমোদীদের আগ্রহের মাত্রা বেড়ে গেছে ভীষণভাবে। এ মাসের শেষের দিকেই হয়তো হামজা ঢাকা আসবেন জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিতে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই জাতীয় দল নিয়ে আগ্রহ বাড়বে। হামজা যখন দেশের জার্সি পরে খেলবেন কিংবা অনুশীলন করবেন, তখন লাখ-লাখ চোখ অনুসরণ করবে তাকে ও বাংলাদেশ দলকে। হামজার বুকের ডান পাশেই থাকবে এই দৌড়ের লোগো। অর্থাৎ এক হামজার মাধ্যমেই পরিচিতি পেয়ে যাবে দৌড়।
চুক্তি অনুযায়ী, জাতীয় দলের পুরুষ ও মহিলাদের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কিট সরবরাহ করবে দৌড়। তবে বাফুফে এখনও চুক্তির সব বিস্তারিত প্রকাশ করেনি। স্পন্সরশিপ চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য পুরো কার্যনির্বাহী কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাফুফে প্রধান তাবিথ আউয়াল বলেছেন, কিট স্পন্সর ভবিষ্যতে ভক্তদের জন্য জাতীয় দলের জার্সি বিক্রি করবে এবং বাফুফে এই বিক্রি থেকে রয়্যালটি পাবে।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।