
ফাইল ছবি
দক্ষিণ এশিয়ান জোনের দাবার বিশ্বকাপ বাছাই টুর্নামেন্ট হিসেবে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে শুরু হচ্ছে এশিয়ান জোনাল ৩.২ চ্যাম্পিয়নশিপ। ওপেন ও নারী দুই বিভাগের চ্যাম্পিয়ন সরাসরি বিশ্বকাপ দাবায় খেলার সুযোগ পেয়ে থাকেন। বাংলাদেশ বিগত কয়েকটি আসরে দুই বিভাগেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এবারই প্রথম এশিয়ান এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের কোনো গ্র্যান্ডমাস্টার অংশগ্রহণ করছেন না।
বিষয়টি জানতে চাইলে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান সুমনের কণ্ঠে একটু অস্বস্তিই ঝরল। তিনি বলেন, এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়ে আমরা সরাসরি বিশ্বকাপে খেলে আসছি। গ্র্যান্ডমাস্টার কেউ থাকলে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও আত্মবিশ্নাস একটু বেশিই থাকত। ফাহাদ গতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, নীড় ও তাহসিন সম্ভাবনাময়। এদের ওপরই মূলত ভরসা ওপেন বিভাগে। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই মূলত বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তাদের ২৪০০ রেটিংয়ের বেশি দাবাড়ু রয়েছে।
পাঁচ গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে জিয়াউর রহমান গত বছর জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশীপ খেলার সময় মারা গেছেন। আব্দুল্লাহ আল রাকিব দাবা থেকে দূরে বছর চারেক। নিয়মিত টুর্নামেন্ট খেলা আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব পারিবারিক কারণে ইংল্যান্ডে অবস্থান করছেন। উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক ব্যস্ততায় এ টুর্নামেন্ট খেলছেন না। আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তারও পেশাগত কারণে খেলবেন না।
১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ দাবায় প্রথম বিশ্বকাপ খেলে। এরপর কয়েকটি আসরে খেলা হয়নি। ২০০৭ সালে পুনরায় আবার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও ভারত এশিয়ান জোনে একই গ্রুপে থাকায় ভারতীয় দাবাড়ুরাই বেশিরভাগ সময় চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে খেলেছেন। ২০১১ সাল থেকে ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ান জোনে আলাদা হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশই চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসছে ওপেন বিভাগে। গ্র্যান্ডমাস্টার রাজীব, জিয়া জোনাল চ্যাম্পিয়ন হয়ে একাধিকবার বিশ্বকাপে খেলেছেন। জোনালে চ্যাম্পিয়ন না হলেও বিশ্বকাপে আরেকটি কোটায় খেলার সুযোগ অবশ্য বাংলাদেশের থাকছে। দাবা অলিম্পিয়াডে শীর্ষ আশির মধ্যে থাকলে একটি কোটা থাকে। বাংলাদেশ সে কোটায় অলিম্পিয়াড খেলা একজনকে নির্বাচন করতে পারবে।
এশিয়ান জোনাল টুর্নামেন্ট শুধু বিশ্বকাপ বাছাই নয় বাংলাদেশের দাবাড়ুদের জন্য টাইটেল পাওয়ার উপযুক্ত ক্ষেত্র। বিশেষ করে নন রেটেড, ক্যান্ডিডেট ও ফিদে মাস্টারের জন্য এ টুর্নামেন্ট অনেক বড় মঞ্চ। আন্তর্জাতিক ও গ্র্যান্ডমাস্টার ব্যতীত কেউ এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলে সরাসরি আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব পাবেন। প্রথাগত নিয়মের মতো নর্ম পূরণ প্রয়োজন নেই। শুধু চ্যাম্পিয়ন নয় একই পয়েন্ট নিয়ে টাই করে শীর্ষ তিনে থাকলে আন্তর্জাতিক মাস্টার নর্ম পাওয়ার সুযোগ থাকবে ফিদে ও ক্যান্ডিডেট মাস্টারদের। তাই শ্রীলঙ্কার এই টুর্নামেন্টে সাকলাইন, নাইম হক সহ উঠতি দাবাড়ুদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
শ্রীলঙ্কায় এশিয়ান জোনালে নারী বিভাগে বাংলাদেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দাবাড়ু আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রাণী হামিদ। স্বাগতিক আথিতেয়তা নারী ও পুরুষ জাতীয় চ্যাম্পিয়নের বাইরে শুধুমাত্র ৮১ বছর বয়স্ক রাণী হামিদই পাচ্ছেন। ওপেন ও নারী বিভাগ মিলিয়ে বাংলাদেশের ১২ জন দাবাড়ু খেলছেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই সকল খরচ নিজে বহন করছেন। ফেডারেশন দুই জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছাড়া আরো তিন জনের বিমান খরচ প্রদান করেছে। গতকাল রাতে বাংলাদেশের দাবাড়ুরা কলম্বোর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।