Apan Desh | আপন দেশ

সাফজয়ী ঋতুপর্ণার বাড়ি নির্মাণে বাধা!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:০০, ২২ মার্চ ২০২৫

সাফজয়ী ঋতুপর্ণার বাড়ি নির্মাণে বাধা!

সাফজয়ী নারী ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমা

গেল বছর টানা দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরেপা জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন ঋতুপর্ণা চাকমা। এ নারী ফুটবলারের বাড়ি দূর্গম পাহাড়ি এলাকায়। তার থাকার জন্য ভাল ব্যবস্থা না থাকায়  জেলা প্রশাসক তাকে একটা ঘর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু কোন এক মহলের বাঁধায় বাড়ি নির্মাণ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঋতুপর্ণা।

শনিবার (২২ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে ফেসবুকে করা এক পোস্টে এ অভিযোগ করেন তিনি। পোস্টে ঋতুপর্ণা চাকমা লেখেন, নারী সাফ চ্যাম্পিয়নে ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো যখন সাফ চ্যাম্পিয়ন হই। তখন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচ সদস্য ছিলাম। আমি আর রুপনা চাকমা রাঙামাটি জেলার আর বাকি তিনজন খাগড়াছড়ি। রাঙামাটি জেলা আমাদের পাঁচজনকে রাজকীয়ভাবে সংবর্ধনা এবং সম্মানিত করেন।

সেসময় স্বয়ং জেলা প্রশাসক আমার নিজ গ্রামের বাড়িতে এসেছেন, আমার ঘরবাড়ি ও যাতায়াতের অবস্থান দেখে যান। সেবারে রুপনা চাকমাকে বাড়ি নির্মাণ করে দেন জেলা প্রশাসন। যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সব-ই বাস্তবায়ন করে দেন। আমাকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো আমার কি চাওয়া পাওয়া আছে প্রশাসন থেকে, তখন আমি চেয়েছিলাম আমার এলাকাবাসী সুবিধার্তে যাতায়াতের জন্য রাস্তা, কারণ আমার বাড়ির যাওয়ার রাস্তা নেই।

আমি আমার নিজের জন্য কিচ্ছু চাইনি। রাঙামাটি জেলা প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিলেন রাস্তা সংস্কার করে দিবেন এবং সে সঙ্গে আমাকে জায়গাসহ বাড়ি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্বয়ং আমাকে ডেকে নিয়ে ঘাগড়া বাজারে খাস জায়গা নির্ধারণ করেছেন এবং জায়গাটা আমারও পছন্দ হয়, সবকিছু ঠিকঠাক হয়। যাইহোক রুপনার সবকিছু বাস্তবায়ন হয়েছে, আমার মনেও বিশ্বাস, আশা ছিল প্রশাসনের কাছ থেকে আমারও সবকিছু বাস্তবায়ন হবে।

দুঃখের বিষয় আমার কোনোকিছু বাস্তবায়ন হয়নি। যাইহোক ঔ বিষয় নিয়ে আমি আর মাথা ঘামাইনি, অনুশোচনাও হয়নি । ২০২২ গেলো সবকিছু ভুলে গেলাম আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়ে মনোযোগী হই।

২০২৪ দ্বিতীয়বারে মতো বাংলাদেশ সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। সে টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় পুরস্কার জিতেছি। দ্বিতীয়বারের মতো দেশবাসী সবাই মিলে আনন্দ, উল্লাস ভাগাভাগি করে উদযাপন করি। একই ভাবে ২০২২ সালে যেভাবে আমাদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন, ঠিক দ্বিগুণ সেভাবেই আমাদের রাজকীয়ভাবে সংবর্ধনা এবং সম্মানিত প্রদান করেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। এ নতুন বাংলাদেশ, এ নতুন প্রশাসনের কাছ থেকে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল বিগত ২০২২ সালে জায়গাসহ বাড়ি করে দেওয়া এবং যাতায়াতের জন্য রাস্তা সংস্কার করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেটা বাস্তবায়ন হবে।

দেরিতে হলেও কিছুদিন আগে আমাকে ইউএনও কাজী আতিকুর রহমান স্যার খুশির সংবাদটি জানিয়ে দেন, আমার এলাকার গ্রামবাসীর জন্য রাস্তা নির্মাণ বাবদ রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ থেকে ইতিমধ্যে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। একমাস আগে জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য রাস্তাটি পরিদর্শনও করেছেন।

ইউএনও ওনার নিজ উদ্যোগে আমার বাড়িতে সুপেয় পানির জন্য নিজেই গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক আমাকে একটা ঘর নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রশাসন রাস্তা এবং জায়গাসহ বাড়ির করে দেয়ার অনুমোদন সম্মতি দিয়েছেন। আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রশাসনকে, খুবই এক্সাইটেড ছিলাম সংবাদটা শুনে।

এতোদিন পর প্রশাসন আমাকে বাড়ি করে দেয়ার সদয় সম্মতি দিয়েছেন, কিন্তু এর মধ্যে আমি শুনতে পাচ্ছি কোনো এক মহল থেকে বাধা আসতে শুরু করেছে। তাহলে কি আমার ঘাগড়ায় কি কোনো ঠাঁই নেই?

এখন আমার অনুশোচনা হচ্ছে, ২০১৭ সাল থেকে আমি দেশের জন্য খেলছি দেশের প্রতিনিধিত্ব করতেছি, নিজে জেলার মানুষের কাছে মূল্যায়নটা পাইলাম কই?

লিখাই যদি ভুলত্রুটি থাকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ।

আপন দেশ/জেডআই

মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।

সম্পর্কিত বিষয়:

শেয়ার করুনঃ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়