
কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা
রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার এল ক্লাসিকো ঘিরে আগে থেকে বাড়ছিল উত্তেজনা। এক পর্যায়ে সেটি দুই দলের সমর্থকদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছিল। সে উত্তেজনার মাঝেই কোপা দেল রে ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল-বার্সা। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের পুরোটা জুড়েই উত্তেজনায় ভরিয়ে রেখেছিল দুই দল। শেষ মুহূর্তে রেফারির দিকে কিছু একটা ছোড়ার পর তেড়ে গিয়ে লাল কার্ড দেখলেন রিয়ালের আন্তোনিও রুডিগার। ততক্ষণে ম্যাচ বার্সেলোনার হাতের মুঠোয়।
শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সময়ের খেলা চার মিনিট বাকি থাকতে জুলেস কোন্দের গোল গড়ে দিয়েছে পার্থক্য। ৩-২ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হলো কাতালান জায়ান্টরা। টুর্নামেন্টের ৩২তম ট্রফি জিতে এবারের মৌসুমে ট্রেবল জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখলো হ্যান্সি ফ্লিকের দল।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতা ছিল ফাইনালে। বার্সার হয়ে ২৮ মিনিটে পেদ্রি আর ৮৪ মিনিটে গোল করেছিলেন ফেররান তোরেস। রিয়ালের পক্ষে ৭০ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে আর ৭৭ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন অরেলিঁও চুয়ামেনি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ১১৫ মিনিট পর্যন্ত গোল না হওয়ায় সবাই যখন অপেক্ষা করছিলেন টাইব্রেকারের, তখনই চোখ ধাঁধানো গোল জুলস কুন্দের। ১১৬তম মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নেয়া বুলেট শটে গোল করে বার্সা সমর্থকদের আনন্দে ভাসান কুন্দে। ম্যাচের শেষ দিকে রেফারি লাল কার্ড দেখান রিয়ালের তিনজনকে!
১২৩তম মিনিটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ফ্রি কিক না পাওয়ায় বেঞ্চ থেকে রেফারির প্রতি তেড়ে যাচ্ছিলেন আন্তনিও রুডিগার। সতীর্থরা টেনে থামান তাকে। ম্যাচের শেষ দিকে রিয়াল বেঞ্চ থেকে কিছু একটা ছুঁড়ে মারা হয় মাঠে রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া প্রতি। তিনি লাল কার্ড দেখান আন্তোনিও রুডিগারকে। কিছুক্ষণ পর লাল কার্ড দেখেন লুকাস ভাসকেস ও জুড বেলিংহামও। অগ্নিগর্ভ আবহেই শেষ হয় এল ক্লাসিকো।
স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনালে রিয়ালকে ৫-২ গোলে হারিয়েছিল বার্সা। লা লিগায় আনচেলত্তির দলকে তারা বিধ্বস্ত করে ৪-০ গোলে। সে তুলায় মৌসুমের তৃতীয় এল ক্লাসিকোটা ছিল জমজমাট। শুরুতে বার্সা এগিয়ে গেলেও একটা সময় লিড নিয়ে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত জয়ে রিয়ালের বুক ভাঙে হান্সি ফ্লিকের দল।
প্রেদির গোলে বার্সা এগিয়ে যায় ২৮তম মিনিটে। ভিনিসিয়ুস বল হারানোর পর মাঝমাঠ থেকে পেদ্রিই ডান প্রান্তে লম্বা পাস দেন ইয়ামালকে। তার কাট-ব্যাকে বল পেয়ে অরক্ষিত পেদ্রি জোরাল শটে বল পাঠান জালে। ৩৫তম মিনিটে জুড বেলিংহাম জালে বল পাঠালেও অফসাইডের জন্য গোল পায়নি রিয়াল। বিরতির আগে ৬৩ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ৯টি শট নেয় বার্সেলোনা, এর চারটি ছিল লক্ষ্যে। রিয়াল শট নিয়েছিল একটিই, যা আবার ছিল না লক্ষ্যে।
বিরতির পর বদলি নেমে খেলার ছবিটা বদলে দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। বাড়ে রিয়ালের আক্রমণের ধার। ৭০ মিনিটে দারুণ ফ্রিকিকে সমতা ফেরান এমবাপ্পেই। এর ৭ মিনিট পর কর্নার থেকে আসা বলে চুয়ামেনির হেডারে এগিয়েও যায় রিয়াল।
৮৪তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে আসা ভুলে রুডিগার ও কোর্তোয়ার ভুল কাজে লাগিয়ে সমতা ফেরান তোরেস। ইনজুরি টাইমে রিয়াল ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিওর সঙ্গে সংঘর্ষ হলে পড়ে যান রাফিনিয়া। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস ভিএআর পেনাল্টিটি বাতিল করায় রেফারিকে দুয়ো দিচ্ছিলেন রিয়াল সমর্থকরা। উল্টো হলুদ কার্ড দেখেন রাফিনিয়া।
১০৭ মিনিটে তোরেস বল জালে বল পাঠালেও কাতালানরা গোল পায়নি অফসাইডের জন্য। এরপর ১১৬তম মিনিটে জুলস কুন্দের সে অসাধারণ গোল। নিজেদের ডি বক্সের একটু বাইরে থেকে ব্রাহিম দিয়াসকে বল দিয়েছিলেন লুকা মদ্রিচ। সেটা নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ২৫গজ দূর থেকে নেয়া তার আগুনে গোলার শটে আনন্দে ভাসে বার্সেলোনা।
এদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায়ের পর আরেকটি বড় ধাক্কা খেলো রিয়াল। সম্ভবত তাদের সঙ্গে এটিই কোচ কার্লো আনচেলত্তির শেষ ফাইনাল। ব্রাজিলের দায়িত্ব নেয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই ইতালিয়ান কোচ শিগগিরই তার ভবিষ্যৎ ঠিক করবেন।
আপন দেশ/জেডআই
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।