দেবব্রত পাল
ঢাকা: বাংলাদেশে ক্রিকেট বোর্ডের রোষাণলে এবার ম্যাচ রেফারি। ছাড়তে হলো মোটা বেতনের চাকরিটাও। তবে, দায়িত্বে অবহেলা বা দুর্নীতির দায়ে নয়। সূত্র বলছে, খেলার মাঠের পারফর্মেন্সের চেয়ে মুখ্য হয়ে উঠেছে রাজনীতি। যাতে কুপোকাত হলেন দেবব্রত পাল।
কর্তা ব্যক্তির প্রশ্নবিদ্ধ নজরও তাতে রসদ হিসাবে কাজ করেছে। প্রথম শ্রেণির সাবেক এই ক্রিকেটার বিসিবিতে ম্যাচ রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন। ছাত্র জীবন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও ক্রীড়াঙ্গনে ছিলেন শতভাগ পেশাদার।
তার স্থায়ী চাকরি জাহাঙ্গীরগনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের ইনস্ট্রাক্টর পদে। এরপরও ম্যাচ রেফারির কো-অর্ডিটের হিসেবে চাকরি করেছেন বিসিবিতে। ম্যাচ রেফারি হিসেবে বিদ্যমান সুবিধাসহ মোটা অংকের বেতন পেতেন।
দেশের ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও আছেন দীর্ঘদিন। বিসিবির গেল তিনটি নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছেন।
বর্তমান সরকারের ক্ষমতার শেষ দিকে এসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে ভূমিকা রাখায় পড়েছেন রোষাণলে!
রোববার (১৩ আগস্ট) ওই অনুষ্ঠানের আযোজন করেছিল ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ। তাতে অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন দেবব্রত পাল। যে খবর মুহুর্তে চাউর হয় বিসিবিতে। এরপর বিসিবির একাধিক পরিচালক দেবব্রত পালের এই ভূমিকার ব্যাখ্যা চাইতে আম্পায়ার্স কমিটির প্রধানকে অনুরোধ করেন।
বিসিবিতে চাকরি করে ‘ক্রিকেট অঙ্গন’-এর ব্যানারে দেবব্রত পালের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ায় খবর যায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপির কানেও। নির্দেশ দেন দেবব্রতকে শোকজের। যথা নির্দেশ তথা বাস্তবায়ন আম্পায়ার্স কমিটির।
কালভেদে ঘটনার ইতিটা কোনদিকে যাবে সে বার্তাও পেয়েছেন দেবব্রত পাল। তাই খাকি খামে জবাবের বদলে দিয়েছেন পদত্যাগপত্র। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু।
তিনি জানান, ‘ক্রিকেট বোর্ডে চাকরি করে কেনো দেবব্রত রাজনৈতিক দলের মঞ্চে উঠেছেন- এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেনি সে। বোর্ড থেকে তাকে এই বিষয়ে শোকজ দেয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তার আগেই পদত্যাগ করেছেন দেবব্রত।
বিসিবির সাবেক গেম ডেভেলপম্যান্ট কমিটির চেয়ারম্যান এবং মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামকে হোম অব ক্রিকেটে পরিণত করার স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। সেই কোকোর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সরব ভূমিকা রাখা কাল হলো দেবব্রত পালের। কোকোর ঘণিষ্ঠজনরা মহাক্ষমতাধর হয়ে বহাল আছেন বিসিবিতে।
বিসিবির ইনডোর অ্যাসিটেন্ট আবদুল মজিদ চাকরি হারিয়েছিলেন ঠুনকো অভিযোগে। বিসিবির নির্বাচনকে সামনে রেখে হোটেল শেরাটনে আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন চৌধুরীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মজিদ চাকরি হারিয়েছেন। একটি দৈনিকে সাবের চৌধুরীর পাশে তার ছবি ছাপা হওয়ায়। বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর পক্ষ নেয়ায় রোষাণলে পড়েন আব্দুল মজিদ।
আপন দেশ/এবি
মন্তব্য করুন # খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, আপন দেশ ডটকম- এর দায়ভার নেবে না।